বড়দিনের আনন্দে মেতেছে শহর থেকে শহরতলি

0
3

শীত পড়ুক আর নাই বা পড়ুক এসেছে বড়দিন ৷ ক্রিসমাস ইভে তিলোত্তমা মেতেছে বড়দিনের আনন্দে ৷ পৌষালী শীতের কামড় বড়দিনে অধরা থাকলেও সকাল থেকে শহরে শুরু বড়দিনের প্রস্তুতি ৷

ক্রিসমাসের পড়ে পাওয়া চোদ্দ আনা আনন্দ উপভোগ করতে সকাল থেকেই চিড়িয়াখানা, চার্চ, নিকোপার্ক, পার্কস্ট্রিট ও ইকোপার্কের মতো জায়গায় ভিড় জমিয়েছেন সকলে ৷ সে ভিড়ে উচ্ছ্বল ষোড়শী ও হতবাক আটের খুদের পাশাপাশি যোগ দিয়েছেন প্রৌঢ় ও প্রৌঢ়ারা ৷
অ্যাংলো পাড়ার লাল বাড়িগুলো হয়ে উঠেছে এখন রঙিন। বো ব্যারাকস ফেস্ট শুরু হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। নাচ, গান, খানা- পিনায় সরগরম কলকাতার পুরনো পাড়া ।

বাড়িতে তৈরি কেক, ওয়াইনের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের চিকেন কাবাব, পরক, ফিশ টিক্কা, মোমো র পসরা সাজিয়ে বসেছে স্থানীয়রা । বো ব্যারাকস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সহ সভাপতি মাইকেল চ্যাং জানালেন , বড়দিন তারা সবাই মিলে সেলিব্রেট করতে ভালোবাসেন। তাই যারা কাজের প্রয়োজনে বাইরে থাকেন তারাও এই সময় চলে আসেন এখানে।
রবিবারের ভিড় থেকেই আন্দাজ করা যায় স্থানীয়রা শুধু নয় , কলকাতা ও শহরতলি থেকে যেমন মানুষ আসছেন বড়দিনের স্বাদ পেতে তেমনি বিদেশ থেকেও এসেছেন অনেক পর্যটক। আয়ারল্যান্ডের থমাস ও তার পরিবার যেমন দু বছর ধরে আছেন ভারতে। গোয়াতে থাকেন কিন্তু এবছর বড়দিন পালন করছেন কলকাতায়। শহরে এসেই প্রথম এসে পড়েছেন বো ব্যারাকসে।
ধর্মতলা, পার্ক স্ট্রিট চত্বরে ছিল উপচে পড়া ভিড় থাকবেই আজ। হোটেল, রেস্তরাঁগুলি সেজে উঠেছে।

বড়দিনকে কেন্দ্র করে যাতে মহানগরীতে কোনও অশান্তি না ছড়ায়, সেজন্য কলকাতা পুলিশ সতর্ক। সতর্কতামূলক সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
বড়দিনের সকালে সেন্ট পল ক্যাথিড্রালে প্রার্থনা। সকালে সেই প্রার্থনায় অংশ নেন বহু মানুষ। ক্রিসমাসে শহরের অন্যতম প্রাচীন এই গীর্জাই অনেকের কাছে ফার্স্ট ডেস্টিনেশন।

করোনা (Covid 19) কাঁটার মুণ্ডপাত করে ভোররাত থেকে ট্যুরিস্ট বাস ভর্তি করে শহর থেকে কাছেপিঠে কিংবা একটু দূরে চড়ুইভাতিতে মেতেছেন কর্মক্লান্ত মানুষ। শনিবার মধ্যরাতে পর্তুগিজ গির্জায় (Church) হাজির হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM mamata Banerjee) ও তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। বিবেকানন্দের (Swami Vibekananda) ইচ্ছা অনুযায়ী বেলুড মঠ (Belur Math) সহ প্রতিটি মিশনে যিশুপুজো হয়ে থাকে।
দীঘা থেকে দার্জিলিং, বনগাঁ থেকে বনপাহাড়ি কোথাও আজ খুশি সীমা নেই। আনন্দের সম্মোহনে ঘর থেকে বেরিয়ে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। গত কয়েকদিন ধরেই গির্জাগুলি যিশুর আবির্ভাব দিবস উপলক্ষে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। কলকাতা তো আছেই, তার সঙ্গে দার্জিলিং, ব্যান্ডেল, কৃষ্ণনগর, মালদহ, মেদিনীপুরের গির্জাগুলিও আলো ও যিশুর জীবন আলেখ্য নিয়ে মূর্তি তৈরি করে সাজিয়ে তুলেছে।

ব্যান্ডেল চার্চ দেখে ফাউ দর্শন হিসেবে ইমামবাড়াতেও নৌকাবিলাস করে চলেছেন অনেকে। শিবপুরে বোটানিক্যাল গার্ডেন, ইকো পার্ক কিংবা নিক্কো পার্কেও বহু মানুষ অঘোষিত সমাবেশের মতো জড়ো হয়েছেন। বড়দিন উপলক্ষে পুলিশও যথেষ্ট সতর্ক রয়েছে। অধিকাংশ জায়গাতেই অতিরিক্ত পুলিশ ছাড়াও সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগ করা হয়েছে। পার্ক স্ট্রিটে রয়েছে সাদা পোশাকের পুলিশ।