কোনও জিনিস শুরু হতে যত সময় লাগে শেষ হতে তার অর্ধেকও লাগে না। ২৮ তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব (28th Kolkata International Film Festival)যেন সেই কথাই মনে করাল বুধবারের আমেজে। হাতে মাত্র একটা দিন, তারপর ফের এক বছরের প্রতীক্ষা। এই বছরের চলচ্চিত্র উৎসব (KIFF)এই প্রজন্মের সিনে প্রেমী, কর্মী এবং শিক্ষানবিশদের কাছে অন্যতম স্মরণীয় হয়ে রইল। সিনেমা দেখার আনন্দের পাশাপাশি যেভাবে আড্ডা(Cine Adda), আলোচনা আর চলচ্চিত্রের মাস্টার ক্লাস (Master Class)আয়োজিত হল তা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবি রাখে।
১৬ তারিখ থেকে নন্দন, রবীন্দ্রসদন, শিশির মঞ্চ, রবীন্দ্র ওকাকুরা ভবন এবং নজরুল তীর্থ প্রেক্ষাগৃহে সিনেমা দেখানোর আয়োজন করা হয়েছিল। সঙ্গে ছিল একতারা মুক্ত মঞ্চে সিনে আড্ডা, গগনেন্দ্র শিল্প প্রদর্শনালয়ে প্রদর্শনী আর বাংলা অ্যাকাডেমি সভাঘরে আলোচনা, সিনে শিক্ষার খুঁটি নাটি। আজকের বিষয় ছিল – ‘ Language of New Age Cinema ‘ । আজকের আলোচনায় ছিলেন অনির্বাণ ভট্টাচার্য (Anirban Bhattacharya), রাজ চক্রবর্তী (Raj Chakraborty), বাংলাদেশের পরিচালক মেজবাউর রহমান সুমন, প্রসূন চট্টোপাধ্যায়। কানায় কানায় পূর্ণ সভাঘরে আধুনিক সিনেমার দর্শন তুলে ধরলেন অনির্বাণ। রাজ জানান এখন গল্পকে হিরো করে তোলার ট্রেন্ড চলছে। কিন্তু সেটাই কি কাঙ্খিত নয়? এই প্রশ্নে ‘ হাওয়া’ চলচ্চিত্রের পরিচালক বললেন চরিত্রদের প্রধান করে তোলা আর গল্পকে অভিনেতা করে গড়ার শিল্প সৃষ্টি করেন পরিচালক। নিজের অনুভূতির কথা সিলভার স্ক্রিনে ফুটিয়ে তোলা এবং ওই একই অনুভূতি দর্শকদের মধ্যে অনুভূত হওয়ার মধ্যেই আসল চ্যালেঞ্জ। অনির্বাণ ভট্টাচার্য নামটার মধ্যেই স্টারডম লুকিয়ে আছে বলে মত পরিচালক রাজ চক্রবর্তীর। নাট্য জগতের শিক্ষণ যে একজন অভিনেতার কাছে কতটা প্রয়োজনীয় হয়ে উঠতে পারে তার ব্যাখ্যা দেন অনির্বাণ।
ট্রেন্ড কোনও অলৌকিক বা ভৌতিক শব্দ নয়। সিনে জগতে এর সৃষ্টি হয় চারপাশের সামঞ্জস্যতা মেনেই। শুধু পরিচালক বা অভিনেতাই নন, দর্শকের দৃষ্টিভঙ্গি ট্রেন্ড ভাঙতে আর গড়তে পারে অনায়াসেই।