KIFF 2022: ওটিটি-র যুগে বদলে যাওয়া সিনেমার প্রেক্ষিত মিলল সত্যজিৎ রায় মেমোরিয়াল লেকচারে

0
2

রবিবারের লাইমলাইট সকাল থেকেই মেসির পায়ে। কিন্তু দুপুর গড়াতেই অপ্রত্যাশিত ভিড় নন্দন- রবীন্দ্রসদনে(Nandan Rabindra Sadan)। কারণ একটাই ২৮ তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব (28th Kolkata International Film Festival)। ১৫ তারিখ উদ্বোধনের পর ১৬ থেকেই ষোলোকলা পূর্ণ করতে সিনেমা দেখতে হাজির আট থেকে আশি। এবারের অন্যতম আকর্ষণ সিনে চর্চা। আগে থেকেই জানা গেছিল যে রবিবার বিকেল ঠিক ৪ টে থেকে ওটিটি-র যুগে বদলে যাওয়া সিনেমার প্রেক্ষিত নিয়ে আলোচনা হবে সত্যজিৎ রায় মেমোরিয়াল লেকচারে। মূল দায়িত্বে সুধীর মিশ্র(Sudhir Mishra)। তিনবারের জাতীয় পুরস্কার জয়ী পরিচালকের কথায় উঠে এল নতুন পুরনোর মেলবন্ধনের গভীর তাৎপর্য।

‘Understanding Cinema in the Changing Times of OTT’ – এই শিরোনামে বিকেলের সিনে প্রাঙ্গণে শুরু হল আড্ডা। কানায় কানায় পূর্ণ শিশির মঞ্চ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় অনন্যা চট্টোপাধ্যায়(Ananya Chatterjee) , ছিলেন জুন মালিয়া(June Malya)। আর চমক দিয়ে মঞ্চে নয় দর্শকসারিতে পরিচালক অরিন্দম শীল(Arindam Shil)। দুদিন আগেই যিনি নিজে বাংলা অ্যাকাডেমি সভাগৃহে সিনেমার বিশ্লেষণ মূলক আরেক আলোচনায় নিজেই সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন। শিশির মঞ্চের আলোচনায় বর্তমান সময়ের প্রেক্ষিতে বদলে যাওয়া সিনেমার ভাবনাকে নতুন দৃষ্টিতে দেখার চেষ্টা করা হল। OTT-এর যুগে পরিচালকদের কাছে নানা ধরণের সিনেমা তৈরির সুযোগ আছে। কিন্তু এই অসহিষ্ণুতার যুগে পরিচালক বা সিনে নির্মাতাদের দায়িত্ব কি একটু বেড়ে গেল না মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্য গল্প পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে? ঠিক এই প্রশ্নের উত্তরেই জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত বর্ষীয়ান পরিচালক বলেন, রক্ষনশীল ভাবনার প্রতি সহানুভূতি দেখান অন্যায় নয়। কিন্তু পরিবর্তনকে সঠিক দিশা না দেখাতে পারলে চলচ্চিত্র জগতের ভবিষ্যত উজ্জ্বল হবে না। পাশাপশি তিনি বলেন এখন একটা গল্পকে একাধিক ভাগে ভাগ করে প্রতি মুহুর্তে আপডেট করে নতুন ভাবে দর্শকের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে ওয়েব প্ল্যাটফর্ম। তাই দায়িত্বশীল হতে হবে অনেক বেশি করে। আলোচনার মাঝে অনন্যা চট্টোপাধ্যায় বলেন একাধিক ঘটনা বা সামাজিক ট্যাবু আজ খুব সহজে সবার সামনে আনতে গিয়ে কি সিনেমার মান অনুন্নত হচ্ছে? সুধীর মিশ্র বলেন সিনেমা তৈরির শৈলীকে এক আলাদা মাত্রা দিয়েছেন সত্যজিৎ রায়। তাই তাঁর দৃষ্টিভঙ্গিকে যদি খুব ভাল ভাবে লক্ষ্য করা যায় তাহলেই প্রমাণিত হবে যে ভাল সিনেমা তৈরির দর্শন লুকিয়ে আছে পরিচালকের মস্তিষ্কে।

আলোচনা শেষ হতে প্রায় দেড় ঘণ্টা মতো সময় লেগে গেল, তবুও প্রশ্নমালা শেষ হল না উপস্থিত দর্শকের। বোঝাই গেল চলচ্চিত্র উৎসব ঠিক এই কারণেই অন্য সব কিছুর থেকে আলাদা। কারণ শুধু সিনেমার উদযাপন নয় এটাই সেলিব্রেশন।