গুজরাটের(Gujrat) গোধরায় সবরমতী এক্সপ্রেসে(Sabarmati Express) অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত এক অপরাধীর জামিন মঞ্জুর করল সুপ্রিম কোর্ট। ফারুক নামে ওই অপরাধীকে শর্তসাপেক্ষে জামিন দেওয়ার জন্য নিম্ন আদালতকে নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের(Supreme Court) প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি পিএস নরসিমহার বেঞ্চ। ১৭ বছর ধরে জেলবন্দি যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ফারুক পরিস্থিতি বিবেচনা করে তাঁকে জামিনে মুক্তি দেওয়ার আবেদন জানিয়েছিল শীর্ষ আদালতে। সেই আবেদন মঞ্জুর করা হয় বৃহস্পতিবার।
জামিনের আবেদনকারী ফারুখের আইনজীবী এদিন আদালতকে জানান, গুজরাত হাই কোর্টের সাজার রায় চ্যালেঞ্জ জানিয়ে অভিযুক্তদের অনেকেই শীর্ষ আদালতে আবেদন জানিয়েছেন। সেই আবেদনগুলি এখনও বিচারাধীন। দীর্ঘদিন ধরে জেলবন্দি রয়েছেন ফারুখ। ফলে বর্তমান পরিস্থিতি বিচার করে তার জামিনের আবেদন গুরুত্ব দিয়ে দেখুক আদালত। গুজরাট সরকারের তরফে এই মামলায় অংশ নেন কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। তিনি মামলাকারীর জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করে বলেন, মহিলা, শিশু-সহ ৫৯ জনকে পুড়িয়ে মারার মতো জঘন্য অপরাধে জড়িতদের মুক্তির প্রয়োজন নেই। নিছক ট্রেনে পাথর ছোড়া বা আগুন ধরানো নয়, ওই ঘটনার দোষীরা পরিকল্পিত ভাবে সাবরমতী এক্সপ্রেসের এস-৬ কামরার দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে খুনের উদ্দেশ্যে আগুন ধরিয়েছিল বলে দাবি করেন তিনি। যদিও শেষ পর্যন্ত ফারুখের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করে আদালত।
প্রসঙ্গত, ২০০২-এর ২৭ ফেব্রুয়ারি গোধরায় সাবরমতী এক্সপ্রেসে করসেবকদের পুড়িয়ে মারার ঘটনা ঘটে। ট্রেনের এস-৬ কোচের অগ্নিকাণ্ডে ৫৯ জনের মৃত্যু হয়। এঁদের অধিকাংশ অযোধ্যা থেকে ফেরা করসেবক। সেই ঘটনার পরই দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে গুজরাত জুড়ে। অভিযোগ, সরকারি মদতে উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা হামলা চালায় সে রাজ্যের মুসলিমদের উপর। দাঙ্গার বলি হন হাজারেরও বেশি মানুষ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তখন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী। তিনিও সমালোচনার মুখে পড়েন। এদিকে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ২০১১-র পয়লা মার্চ ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট গোধরাকাণ্ডে ৩১ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে। তাদের মধ্যে ১১ জনের ফাঁসির সাজা হয়। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয় ২০ জনের। মুক্তি পান অভিযুক্ত ৬৩ জন। শাস্তির রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দোষী সাব্যস্তরা গুজরাত হাইকোর্টে একাধিক মামলা করে। ২০১৭-র অক্টোবরে গুজরাত হাই কোর্ট ১১ জনের ফাঁসির সাজা রদ করে যাবজ্জীবন জেলের সাজা দেয়। ২০ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রাখা হয়।