নিয়োগ কাণ্ডে নগর দায়রা আদালতে জমা পড়া ইডির অতিরিক্ত চার্জশিট থেকে তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হোক।মঙ্গলবার আদালতে এমনই আবেদন জানালেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বর্তমানে তিনি আলিপুর জেলে বন্দি আছেন। তাঁর আইনজীবী মারফত নগর দায়রা আদালতে এই আবেদন জানান।
গত ৭ ডিসেম্বর ব্যাঙ্কশাল আদালতে ওই অতিরিক্ত চার্জশিট জমা দিয়েছিল ইডি। সেই চার্জশিটে মূলত, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি তথা তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য সম্পর্কে বিভিন্ন দাবি করেছে ইডি। মানিকের পাশাপাশি তাতে নাম রয়েছে তাঁর ছেলে, স্ত্রী এবং তাপস মণ্ডলের। সেই চার্জশিট থেকেই অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করলেন পার্থ।
গত ১৯ সেপ্টেম্বর, ইডি এই মামলার প্রথম চার্জশিট জমা দেয়। তাতে পার্থ, অর্পিতার পাশাপাশি আরও ৬টি সংস্থার নাম ছিল। তাতে প্রথম অভিযুক্ত হিসাবে নাম ছিল পার্থর। অতিরিক্ত চার্জশিটে মূলত মানিক ভট্টাচার্যের ভূমিকা সম্পর্কে এখনও পর্যন্ত ইডি যা যা জানতে পেরেছে, তা জানিয়েছে।আসলে অতিরিক্ত চার্জশিটে যে ভাবে মানিক ভট্টাচার্যের সঙ্গে তাঁর যোগ দেখানো হয়েছে, তা নিয়েই আপত্তি রয়েছে পার্থের।গত বুধবার নগর দায়রা আদালতে মানিকের মামলাটি ওঠে। সেখানে তাঁর হাজিরার সময় উপস্থিত করানো হয় মানিককে। পরে দুপুরে ইডিও ট্রাঙ্কে ভরে মানিক-সহ ৬ জনের বিরুদ্ধে ১৫৯ পাতার চার্জশিট এবং প্রায় ৫ হাজার পাতার নথি নিয়ে হাজির হয় আদালতে। ওই চার্জশিটে মানিক ছাড়াও নাম ছিল তাঁর স্ত্রী এবং পুত্রের। নাম ছিল মানিক-ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী তাপস মণ্ডল এবং ২টি সংস্থার। আদালত এই চার্জশিট গ্রহণ করেছে।
মানিকের মতোই এ বার তাঁর স্ত্রী এবং পুত্রের বিরুদ্ধেও শুরু হবে তদন্ত। চার্জশিটে তাঁর সঙ্গে স্ত্রী এবং পুত্রের নাম রয়েছে জেনে কার্যত হতাশ হয়ে পড়তে দেখা যায় মানিককে। আদালত চত্বরেই কিছুটা নিচু স্বরে তাঁকে এর প্রতিবাদ জানাতেও দেখা যায়। মানিক বলেন, ‘‘আমাকে মেরে ফেলো কিন্তু আমার স্ত্রী এবং ছেলেটাকে এর মধ্যে জড়িয়ো না…।’’
প্রাথমিক স্কুলে নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তে নেমে গত ২২ জুলাই রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থের বাড়িতে তল্লাশি চালায় ইডি। তাঁর ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়ে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার করা হয়। এর পর ২৩ জুলাই গ্রেফতার হন পার্থ। পরে মানিককেও গ্রেফতার করা হয়। তদন্তকারী সংস্থার অভিযোগ, ‘অযোগ্য’ প্রার্থীদের শিক্ষকের চাকরি দেওয়ার বিনিময়ে টাকা নেওয়া হত। তার নেপথ্যে ছিলেন পার্থ এবং মানিক।