হাওড়ায় টাকা উদ্ধারের ঘটনার তদন্তে আটঘাঁট বেধে নামল ইডি

0
3

হাওড়ায় (Howrah) কোটি কোটি টাকা উদ্ধারের (Money Recovery) ঘটনায় এবার তদন্ত শুরু করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)। জানা গিয়েছে, এই মামলার এফআইআরের (FIR) কপি ও অন্যান্য তথ্য ইতিমধ্যেই সংগ্রহ করা হয়েছে। পাশাপাশি, কলকাতা পুলিশের (Kolkata Police) কাছ থেকেও চাওয়া হয়েছে তথ্য। ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, শিবপুরে (Shibpur) ব্যবসায়ী ও চার্টার্ড অ্যাকাউন্টের গাড়ি ও ফ্ল্যাট থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধারের ঘটনায় কালো টাকা ও আর্থিক নয়ছয়ের বিষয়টি সামনে আসাতেই এই তৎপরতা। অনুসন্ধানের পর, এফআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরু করতে চলেছে ইডি।

প্রসঙ্গত, হাওড়ায় (Howrah) ব্যবসায়ী ও চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট শৈলেশ পাণ্ডের দুটি ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় নগদ ৮ কোটি ১৫ লক্ষ। এছাড়াও দুটি ফ্রিজ করা অ্যাকাউন্টে মিলেছে আরও ২০ কোটি টাকা। পলাতক পাণ্ডে পরিবারের তিন ভাইয়ের নামে লুক আউট নোটিস জারি করেছে কলকাতা পুলিশ।

রবিবার রাতে শিবপুর মন্দিরতলার কৈপুকুরে শৈলেশের ফ্ল্যাটে তল্লাশি চলাকালীন বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা।স্থানীয়দের অভিযোগ, শৈলেশরা তিন ভাই পাড়ায় কারও সঙ্গে মেলামেশা করতেন না। প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্কও ভাল ছিল না। স্থানীয়দের দাবি, রাতের দিকে মন্দিরতলার ফ্ল্যাটে আসতেন ওই ব্যবসায়ী।শেষবার এসেছিলেন পুজোর আগে।গতকাল কৈপুকুরের ওই আবাসনে শৈলেশের চারতলার ফ্ল্যাটে তালা ভেঙে ঢোকে পুলিশ। রাত ১টার পর সবুজ ও লাল রঙের দুটি ট্রলি ব্যাগে টাকা ভরে তারা এলাকা ছাড়ে।

দিন তিনেক আগে শিবপুরের অভিজাত আবাসন ক্লাব টাউন রিভারডেলে ব্যবসায়ী ও পেশায় চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট শৈলেশ পাণ্ডের গাড়ি থেকে ২ কোটি ২০ লক্ষ টাকা উদ্ধার হয়। রাতে মন্দিরতলায় ব্যবসায়ীর আরও একটি ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়ে ৫ কোটি ৯৫ লক্ষ টাকা উদ্ধার করে কলকাতা পুলিশ। বক্স খাটের মধ্যে লুকিয়ে রাখা ৮টি ব্যাগের মধ্যে ছিল টাকা। উদ্ধার প্রচুর সোনার গয়না। রহস্যজনক লেনদেন নিয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের করা অভিযোগের ভিত্তিতে বুধবার এই বিপুল পরিমাণ টাকা উদ্ধার করে কলকাতা পুলিশ। সপরিবারে পলাতক ব্যবসায়ী শৈলেশ পাণ্ডে।

এরপর হাওড়ার শিবপুরে কোটি কোটি টাকা উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে আসে। কলকাতা পুলিশের অনুমান, পেশায় চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট শৈলেশ পাণ্ডে বিদেশ থেকে কালো টাকা এনে বিভিন্ন ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খুলে সেই টাকা ট্রান্সফার করিয়ে সাদা করতেন। তদন্তকারীদের অনুমান, এই বিপুল পরিমাণ টাকা এসেছিল বিদেশ থেকেই। কালো টাকা সাদা করতে বিভিন্ন ব্যাঙ্কে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছিল। শৈলেশ পাণ্ডে ছিলেন সেই সমস্ত অ্যাকাউন্টের ইনট্রোডিউসার। মূলত তাঁর মাধ্যমেই চলত কালো টাকা সাদা করার কারবার অনুমান পুলিশের।

এই অনলাইন প্রতারণা-চক্রটি বিদেশ থেকে নিয়ন্ত্রিত হত কি না, সেই সম্ভাবনাও ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। তদন্তে নেমে এ বিষয়ে একাধিক তথ্য পেয়েছে লালবাজার। পুলিশ জেনেছে, এই অ্যাপের রক্ষণাবেক্ষণও বিদেশ থেকে হত। এমনকি, নেপাল থেকে বিভিন্ন জনকে ফোন করে অনলাইনে পাঠ নেওয়ায় উৎসাহিত করা হয়েছিল বলেও লালবাজার জেনেছে। এর সঙ্গে কালো টাকা সাদা করার চক্রের যোগ আছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।