চিনের কমিউনিস্ট পার্টির সম্মেলনে গালওয়ানের ভারতীয় সেনার হত্যার ভিডিয়ো প্রদর্শন, উদ্দেশ্য কী ?

0
2

আজ থেকে শুরু হয়েছে চিনের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিসি)-র সপ্তাহব্যাপী সম্মেলন। ‘গ্রেট হল অব দ্য পিপল’-এ  এই সম্মেলন শুরুর দিনই বড় অংশ জুড়ে থাকল নিজেদের পরাক্রমের ইতিহাস। জানা গেছে, সম্মেলনে গালওয়ান সংঘর্ষের কিছু ভিডিয়ো ক্লিপ দেখানো হয়েছে। কূটনীতিকদের একাংশ মনে করছেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং গালওয়ানের ঘটনাকে নিজের শক্তিপ্রদর্শনের অন্যতম হাতিয়ার করছেন। সম্মেলনে গালওয়ান সংঘর্ষের দেখানো ভিডিয়ো নয়াদিল্লি-বেজিং সম্পর্কের তিক্ততা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন:শেষপর্যন্ত গালওয়ানে সেনামৃত্যুর খবর স্বীকার করতে বাধ্য হল চিন

সম্মেলনের উদ্বোধনী ভাষণে জিনপিংয়ের ঘোষণা, তাইওয়ানের ভবিষ্যৎ ঠিক করবে চিনের আমজনতা। জবাব দিতে দেরি না করে তাইওয়ানও আজ বলেছে, মাথা নত করার কোনও প্রশ্নই ওঠে না।

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ১৫ জুন গালওয়ান উপত্যকায় চিনা সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয়েছিলেন ২০ জন ভারতীয় জওয়ান। দীর্ঘ ৪৫ বছর পরে ভারত-চিন সেনাবাহিনী এমন রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়েছিল। ওই ঘটনা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক তিক্ত করে তুলেছে। ঘটনার দু’বছর পরেও তা স্বাভাবিক হয়নি। সূত্রের খবর, সিপিসি-র সম্মেলন চলাকালীন চিনের সরকারি সংবাদমাধ্যমে গালওয়ান সংঘর্ষের ভিডিয়ো ফুটেজ দেখানো হয়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে, নিহত সেনার দেহ, নদীর জল ঠেলে পরস্পরের দিকে এগিয়ে চলেছে দুই দেশের সেনা। লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে চিনের সেনাবাহিনী, গালওয়ান উপত্যকায় নিজেদের জাতীয় পতাকা ধরে দাঁড়িয়ে কয়েক জন চিনা সেনা।এই দৃশ্যগুলি দেখানোর পাশাপাশি, এক চিনা সেনা ওই দিনের ঘটনার বিবরণ দিয়ে চলেছেন সংবাদমাধ্যমে। তাঁর নাম কিউই ফাবাও। যিনি গালওয়ান সংঘর্ষে আহত হয়েছিলেন। এ বছর বেজিং অনুষ্ঠিত শীতকালীন অলিম্পিক্সে এই ফাবাওকে দিয়েই মশাল বহন করিয়েছিল চিন। যার প্রতিবাদে ওই অলিম্পিক্সের উদ্বোধনী এবং সমাপ্তি অনুষ্ঠান বয়কট করেছিল ভারত। পরবর্তীকালে ফাবাওকে পুরস্কৃতও করেছিল চিন প্রশাসন। এ বারের পার্টি সম্মেলনে ‘বীরত্বে’র জন্য উপস্থিত রয়েছেন তিনি।

কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করেন, সিপিসি সম্মেলনের আগে ভারতের সঙ্গে সীমান্তে সংঘর্ষ বাধানো এবং ভারতকে সীমান্তে সেনা মোতায়েনে বাধ্য করে জিনপিং আসলে পার্টির মধ্যে নিজের ক্ষমতা আরও বেশি করে প্রদর্শন করতে চেয়েছেন। বাস্তবে তা-ই হয়েছে। ওই সূত্রটি জানাচ্ছে, পার্টি সম্মেলনে সেনার পরাক্রমের বিভিন্ন ফুটেজ দেখানো হয়েছে। যার বড় অংশ জুড়ে ছিল গালওয়ান। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, আজ জিনপিং বলেছেন, ‘‘সেনাবাহিনীকে আরও শক্তিশালী করা হবে। দেশের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা এবং জাতীয় স্বার্থে সেনাবাহিনীকে আরও আধুনিক করে তোলা হবে।’’ একই সঙ্গে তিনি পরিষ্কার করে দিয়েছেন, সেনাবাহিনী চলবে কমিউনিস্ট পার্টির নির্দেশেই।রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, অরুণাচল এবং লাদাখ সীমান্তে অস্থিরতা নিয়ে বার বার আলোচনার পথে হাঁটার বার্তা দিয়েছে ভারত। ভৌগোলিক অখণ্ডতা বজায় রাখার কথা বলেছে।