ভিড়ের নিরিখে এবার পুজোয় ভাঙবে অতীতের সব রেকর্ড! চতুর্থীতেই রাস্তায় নগরপাল

0
2

করোনা (Corona) মহামারির গত দু’বছর কলকাতার দুর্গাপুজো ছন্দ-জৌলুস দুটোই হারিয়েছিল। এবার ফের চেনা মেজাজে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব। এবার আবার অতিমারি নিয়ে উদ্বেগ না থাকলেও শারদীয়ার আকাশে আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনা নিয়ে রাজ্যবাসীর মধ্যে একটা চাপা আশঙ্কা রয়েছে। তাই উৎসবমুখর বাঙালি মহালয়ার (Mahalaya)পর থেকেই রাস্তায় নেমে পড়েছে। মণ্ডপে মণ্ডপে ভিড় বেড়েছে দ্বিতীয়া থেকেই। অন্যদিকে, প্রশাসনিক প্রস্তুতি (Administrative Preparation) চূড়ান্ত পর্যায়ে। আজ, চতুর্থী থেকেই শহরের পুজো সামলাতে মাঠে নামছে কলকাতা পুলিশ (Kolkata Police)। মানুষের ভিড় ও যান নিয়ন্ত্রণে শহরজুড়ে ৯ হাজার পুলিশ মোতায়েন করছে লালবাজার।

পুজোয় জনপ্লাবন সামলানোর সঙ্গেই ট্রাফিক মোকাবিলাতেও সমান নজর কলকাতা পুলিশের। পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে সমন্বয় রক্ষা করেই পদক্ষেপ। জানালেন কলকাতা পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল (Vineet Goel)। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এদিন নিজেই রাস্তায় নামেন নগরপাল।পথচলতি মানুষ ও দর্শনার্থীদের সুবিধা-অসুবিধার কথা জানতে চান তিনি।

পুলিশ কমিশনার বলেন, “পুজোর জন্য বাড়তি ট্র্যাফিক। তার জন্য অতিরিক্ত বাহিনী নামানো হচ্ছে। আজ চতুর্থী। আজ থেকেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জোর দেওয়া হচ্ছে। কোথাও কোনও ফাঁক যাতে না থাকে, আজ থেকেই সম্পূর্ণ বাহিনী নামানো হচ্ছে। ভাসানের জন্যও অতিরিক্ত বাহিনী থাকবে। এরপর কার্নিভ্যাল, লক্ষ্মীপুজো রয়েছে। সেখানেও পর্যাপ্ত বাহিনী থাকবে।” ভিড় নিয়ন্ত্রণ প্রসঙ্গে বিনীত গোয়েল বলেন, “এ সব ক্ষেত্রে আগাগোড়া পরিকল্পনা থাকে আমাদের, যাতে কোনও কারণে ভিড় বেশি হলে পরিস্থিতি সামলানো যায়। কাল কী হবে, তার পরিকল্পনা আগে থেকেই করে রাখা হয়। পুরোপুরি তা হয়ত মেলে না কখনও কখনও। তবে ৯৯ শতাংশ ক্ষেত্রেই আমাদের পরিকল্পনা একেবারে সঠিক হয়।” ভিড় বেশি হলে এবং তা থেকে সমস্যা তৈরি হলে, আরও অতিরিক্ত বাহিনী নামানোর জন্য় কলকাতা পুলিশ তৈরি বলে জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, এবার পুজোয় শুধু কলকাতা শহরেই ভিড় ও যান নিয়ন্ত্রণের জন্য ট্রাফিক সার্জেন্ট ছাড়াও ৪ হাজার পুলিশ যান নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকবেন। তাঁদের সহযোগিতা করবেন আরও ১০ হাজার “টেম্পোরারি” হোমগার্ড। কলকাতার সমস্ত বড় ও গুরুত্বপূর্ণ জংশনগুলিতে থাকবেন অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার ও ইনসপেক্টর পদমর্যাদার পুলিশ আধিকারিকরা। কন্ট্রোল রুম থেকে গোটা বিষয়টি তদারকি করবেন লালবাজারের উচ্চপদস্থ কর্তারা। প্রয়োজনে তাঁরাও মাঝেমধ্যে বিভিন্ন স্পট ভিসিট করবেন।

গত, মঙ্গলবার আলিপুর বডিগার্ড লাইনে পুজোর নিরাপত্তা নিয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। ভিড় সামলে পুজোর শহরকে সচল রাখাই প্রশাসনের কাছে চ্যালেঞ্জ। যানজট রুখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন তিনি। সমস্ত রাস্তাকেই সমান গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি দেখলেই সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন নগরপাল।

আজ, চতুর্থী থেকেই দু’দলে ভাগ করা হচ্ছে ৯হাজার পুলিশকে। প্রথম দলের দায়িত্ব ট্রাফিক রি-ইনফোর্সমেন্ট বা যান নিয়ন্ত্রণ করা। দুপুর ২টো থেকেই রাস্তায় নেমে গিয়েছে এই টিম। এদিন থেকেই রাসবিহারী অ্যাভিনিউয়ের মতো শহরের বিভিন্ন রাস্তায় পার্কিংও বন্ধ করে দেওয়া হবে। এছাড়াও বিকল্প পার্কিং, ডাইভারশন সহ ট্রাফিক সংক্রান্ত যাবতীয় ব্যবস্থা দেখভাল করবে ‘রি-ইনফোর্সমেন্ট’ টিম। অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার, ইনসপেক্টর, সার্জেন্ট পদমর্যাদার অফিসার সহ কনস্টেবলরা এই দায়িত্বে থাকবেন।

অন্যদিকে, আজ থেকে নবমী পর্যন্ত বিকেল ৪টে থেকে মাঠে নামছে “হোমোজিনিয়াস ফোর্স”। সংখ্যাটা প্রায় পাঁচ হাজার। ভিড় নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি যানবাহন সচল রাখতে মোতায়েন করা হচ্ছে তাঁদেরও। এছাড়াও সমস্ত বড় পুজো প্রাঙ্গণে থাকছে কলকাতা পলিশের অস্থায়ী কিয়স্ক। হেল্প ডেস্ক। দর্শনার্থীদের সহায়তার জন্যও রাস্তায় থাকবেন পুলিশকর্মীরা। অন্যদিকে, শহরের সমস্ত বড় পুজোর প্রবেশ পথ ও বাহির পথে হাজির থাকবেন তাঁরা। পুজো মণ্ডপে যাওয়ার জন্য আগেই সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি রুট ম্যাপ শেয়ার করেছে কলকাতা পুলিশ।