এ যেন বাংলার সঙ্গে বিজেপির লড়াই! এবার বিজেপির রাজনৈতিক প্রতিহিংসার ছবি আরও স্পষ্ট। পাঠ্যবইয়ের জাতীয় সঙ্গীতে নেই ‘উৎকল’ ও ‘বঙ্গ’ শব্দ। এমনটাই হয়েছে যোগীরাজ্যে। উত্তর প্রদেশের কৌশাম্বী জেলায় রাজ্য শিক্ষা পর্ষদ অনুমোদিত স্কুলগুলিতে সরকারী বই পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু পঞ্চম শ্রেণীর হিন্দি বইতে জাতীয় সঙ্গীতে ‘উৎকল’ এবং ‘বঙ্গ’ শব্দগুলো নেই। বিষয়টি জানাজানি হতেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।
আরও পড়ুন: গরু পাচার কাণ্ড, শুভেন্দু সম্পর্কে জানতে মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপারকে চিঠি সিআইডির
শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তারা অবশ্য বিষয়টি ধামাচাপা দিতে দোহাই দিয়েছেন, ছাপার ভুলেই এটা হয়েছে। যদিও তা মানতে নারাজ বিরোধীরা। বাংলার পরাজয়ের প্রতিশোধ নিচ্ছে বিজেপি বলেই সরব হয়েছে তারা।
ইতিমধ্যেই জানা গেছে, কৌশাম্বী জেলার অধীনে ১০৮৯টি শিক্ষা পর্ষদ অনুমোদিত স্কুল রয়েছে এবং এখানে প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত প্রায় ১,৮৫,০০০ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে।পঞ্চম শ্রেণীতে হিন্দির জন্য “ভাটিকা” নামে একটি বই পড়ানো হয়। বইয়ের শেষে জাতীয় সঙ্গীত লেখা থাকলেও তা ভুল। পাঞ্জাব-সিন্ধু-গুজরাট-মারাঠা, দ্রাবিড়-…, উৎকল-বঙ্গ শব্দগুলো অনুপস্থিত। এর পর পরের লাইন লেখা। আড়াই লাখ বই-এ এই শব্দটি নেই। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর এবং বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতারা প্রতিবাদ করতে শুরু করলে, প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের এক অফিসার বলেছেন, “এই বিষয়টি মুদ্রণের সাথে সম্পর্কিত। এটি একটি ছাপার ভুল হতে পারে। জাতীয় সঙ্গীতের লাইনে ভুল হয়েছে এবং তা কর্মকর্তাদের জানানো হবে। এটা রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের বিষয়। তবে এটি সাধারণত একটি মুদ্রণ ত্রুটি হিসাবে বিবেচিত হবে।”
বইগুলিতে জাতীয় সঙ্গীতের লাইন ভুল লেখার পরে প্রতিবাদ জানায় এবং আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেয় কংগ্রেস ।কৌশাম্বী কংগ্রেসের জেলা সভাপতি অরুণ বিদ্যার্থী জানান, “বিজেপি বাংলার পরাজয়ের বেদনা ভুলতে পারছে না। এ কারণে তারা ইচ্ছাকৃতভাবে জাতীয় সঙ্গীতের লাইনে উৎকল ও বঙ্গ রাজ্যের নাম মুদ্রণ করেনি। আমরা এ নিয়ে আন্দোলন করব।” পঞ্চম শ্রেণীর হিন্দি বইটি মথুরার প্রমোদ প্রিন্টারে মুদ্রিত হয় এবং প্রিন্টারের মালিক প্রমোদ গুপ্ত। তবে প্রমোদ প্রিন্টার বলছে, এই বইয়ের শুধু কভার পেজই তার দ্বারা ছাপা হয়েছে। প্রমোদ প্রিন্টার জানিয়েছে যে তারা বেসিক এডুকেশন ডিপার্টমেন্ট থেকে এটি প্রিন্ট করার কন্ট্রাক্ট পায়নি, মথুরার হাই-টেক প্রিন্টার তাকে কন্ট্রাক্ট দিয়েছিলো এবং প্রিন্টিং প্লেটও এসেছে সেখান থেকেই। হাই-টেক প্রিন্টারের মালিক হলেন রাম প্রকাশ।তবে এ নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি তিনি।