কথা রাখলেন তৃণমূলের (TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। জুলাইতে গিয়ে বলেছিলেন দুমাস পরে আবার আসবে। সেই মতো রবিবার, মালবাজারে চা শ্রমিক সমাবেশের যোগ দিলেন তিনি। আর সভামঞ্চ থেকে চা শ্রমিকদের দাবি নিয়ে সরব হলেন অভিষেক। বললেন, প্রয়োজনে দাবি আদায়ে দিল্লি যাব।
শ্রমিকদের পিএফের টাকা ঠিক মতো জমা হচ্ছে না। তাঁদের এই সমস্যার কথা পৌঁছেছে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের কানে। এরপরেই তিনি বলেন, “শ্রমিকদের সমস্যার কথা আমার কাছে এসে পৌঁছেছে। শ্রমিকদের দাবিই আমাদের দাবি। এই দাবি নিয়ে আমরা যতদূর যাওয়ার যাব।“ এরপরেই আন্দোলনের রূপরেখা ঠিক করে দেন অভিষেক। জানান,
• ৩ মাসের মধ্যে শ্রমিকদের পিএফ দিতে হবে।
• যদি কোনও বাগান মালিক পিএফ না দেন, তাঁর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করুন।
• পিএফ-গ্রাচুইটি-র সমস্যা ৩ মাসের মধ্যে না মিটলে জেলার পিএফ অফিস ঘেরাও করুন।
• ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সমস্যার সমাধান না হলে বিজেপি (BJP) সাংসদ-বিধায়কদের বাড়ি ঘেরাও করা হবে।
প্রয়োজনে তিনি নিজে সেখানে গিয়ে অন্দোলনের পাশে দাঁড়াবেন। প্রয়োজনে দিল্লিতে গিয়েও দাবি আদায়ে আন্দোলন হবে। কারণ, পিএফ-গ্রাচুইটি কেন্দ্রের বিষয়ে।
অভিষেকের কথায়, এটা এই সমাবেশ কোনও রাজনৈতিক সমাবেশ নয়, আমার কথা রাখার সমাবেশ। প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রতিশ্রুতি পালন না করার অভিযোগ করেন তিনি। কটাক্ষ করে তিনি বলেন, মোদি বলেছিলেন ৭টি চা বাগান অধিগ্রহণ করবেন, করেননি। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করেছেন। উত্তরবঙ্গ থেকে ৪ জন বিজেপি সাংসদ এলাকার উন্নয়নের জন্য কিছু করেন তিনি বলে তোপ দাগেন অভিষেক। বিজেপি মানুষের ভাবাবেগ নিয়ে রাজনীতি করছে। ৪জন সাংসদ দেওয়ার পরেও বিজেপি উন্নয়নের জন্য কী করেছে!
কোটি টাকা খরচ করে দিল্লিতে বাড়ি করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক। অন্যান্য বিজেপি সাংসদের সম্পত্তিও বিপুল হারে বেড়েছে।
অভিষেক জানান, ৩ মাসের মধ্যে আই কার্ড দেওয়া হবে চা শ্রমিকদের। মহিলা শ্রমিকরা শিশুদের কাঁধে বেঁধে পাতা তোলেন। এই সমস্যার সমাধানে আগামী ৬ মাসের মধ্যে চা বাগানে ৫০টি ক্রেশ তৈরি হবে। সেখানে মোট ২৫০০ শিশু থাকতে পারবে বলে ঘোষণা করেন তৃণমূল সাংসদ। একই সঙ্গে তিনি জানান, ৬ মাসের মধ্যে তৈরি হবে প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র তৈরি হবে।
বাম আমলের তুলনায়, তৃণমূল জমানায় শ্রমিকদের মজুরি বেড়েছে বহুগুণ। কিন্তু চা বাগানে যখন পাতা কম ওঠে, তখন কম মজুরি দেওয়া হয়। এর প্রতিবাদ করেন অভিষেক। তিনি জানান, পাতা বাগানে না থাকাটা শ্রমিকদের দোষ নয়। তাই পাতা তোলার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হলেও সব শ্রমিকদের ২৩২টাকা মজুরি দিতে হবে।
চা-বাগানের শ্রমিকদের বাড়ির ক্ষেত্রে জমির পাট্টা দেওয়া যায় কি না রাজ্য সরকারের সঙ্গে কথা বলবেন অভিষেক। পাশাপাশি, শীতকালে চাষের জমিতে জলসমস্যা মেটাতে রাজ্য সরকারি দফতরের মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন বলেও জানান তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তৃণমূলের শ্রমিক নেতৃত্বকে মানুষের পাশে থাকতে হবে- বার্তা দেন অভিষেক।