ধানবাদে গরু পাচার চক্রের হদিশ। গরু বোঝাই কন্টেনার ধরা পরল। মঙ্গলবার ভোর রাতে ঝাড়খণ্ড হয়ে বাংলায় ঢুকছিল একটি ডাক পার্সেল বা ভারী জিনিসপত্র বোঝাই কন্টেনার। কিন্তু ধানবাদে স্থানীয়দের সন্দেহ হয়। কন্টেনারটিকে আটকে দেয় গোরক্ষা কমিটির সদস্যরা। গাড়ির দরজা খুলতেই চক্ষু চড়কগাছ। দেখা যায়, গাদাগাদি করে রাখা প্রচুর গরু। ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়।
স্থানীয়রা জানান, এই গাড়িতে করে পাচার করা হচ্ছিল গরু। বীরভূম, মুর্শিদাবাদের উপর দিয়ে পাঠানো হত বাংলাদেশে। এর জন্য গাড়িতে ব্যবহার করা হত দুটো আলাদা নম্বর। কিন্তু তাতেও শেষরক্ষা হল না।
এরই পাশাপাশি, জাতীয় সড়কের উপরে উল্টে গিয়েছিল দুধের গাড়ি৷ গাড়ি বাইরে জনপ্রিয় দুধ সরবরাহকারী সংস্থার নাম লেখা দেখে তাই ভেবেছিলেন সাধারণ মানুষ৷ কিন্তু সেই গাড়ির দরজা খুলতেই সবার চোখ কপালে৷ কারণ দুধ নয়, গাড়ির ভিতর থেকে উদ্ধার হল কুড়ি থেকে পঁচিশটি গরু৷ যার মধ্যে দুর্ঘটনার জেরে মৃত্যু হয় পাঁচটি গরুর৷
মঙ্গলবার পুরুলিয়া বাঁকুড়া ৬০এ জাতীয় সড়কের উপরে এই দুর্ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে৷ গরু পাচার কাণ্ড নিয়ে সিবিআই তৎপরতার মধ্যেই এ ভাবে দুধের গাড়ি থেকে গরু উদ্ধারের ঘটনায় নতুন করে জল্পনা ছড়িয়েছে৷ উত্তর প্রদেশের নম্বর প্লেট থাকা ওই দুধের গাড়ির চালক এবং খালাসিকে আটক করেছে পুলিশ৷ জেরায় তাদের দাবি, গরুগুলি বিহারের ঔরঙ্গাবাদের একটি হাট থেকে কলকাতায় আনা হচ্ছিল৷ তবে পাচারের উদ্দেশ্যে নয়, কৃষি কাজে ব্যবহার করার জন্যই গরুগুলি আনা হচ্ছিল বলে দাবি তাদের৷
যদিও প্রাথমিক জেরায় ওই দু’ জন স্বীকার করেছে, গরু পাচার নিয়ে পুলিশের কড়াকড়ি থাকার কারণেই পুলিশের চোখে ফাঁকি দিতে এ ভাবে গরু নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল৷
গরু পাচার প্রসঙ্গে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, গরুর তো পাখনা নেই যে গরু উড়ে গিয়ে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে চলে যাবে। গরু যাওয়ার যে রাস্তা সেগুলো তো বিএসএফ নজর রাখে, কেন্দ্রীয় সরকারের দায়িত্ব। বারবার বলা হচ্ছে গরুর উৎস কোথায়? আসছে কোথা থেকে?
এ তো সবাই জানে যে উত্তরপ্রদেশ, বিহার গো-বলয় থেকে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, কোন কোন রাজ্যের সীমানা পেরিয়ে সেই গরু আসছে? আর যদি বাংলাদেশে পাচারেরই কথা হয়, সীমান্তটা অমিত শাহের বিএসএফ পাহারা দিচ্ছে। সেখানে কেউ যদি অন্যায় করে থাকেন তাহলে আইনে তার বিচার হবে।
কিন্তু বিষয়টিকে বিজেপি নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকার জন্য কৃত্রিম আরোপিত প্রচারের মঞ্চে নিয়ে যাচ্ছেন। যে রাজ্য পেরিয়ে গরু আসছে পশ্চিমবঙ্গে সে রাজ্যের পুলিশ প্রশাসন কী করছে ? আপনারা বলবেন, বিএসএফের ক্ষমতা বাড়াতে হবে । বিএসএফের ছাউনিতে গিয়ে তাদেরকে রাজনৈতিক বক্তৃতার মঞ্চ হিসেবে ব্যবহার করবেন। তারপর এমন ভাব দেখাবেন , গরু যেন পাখি হয়ে উড়ে যায়। এই দুটো তো একসঙ্গে হতে পারে না।