আরও চার দিনের সিবিআই হেফাজত অনুব্রতর

0
3

গোরু পাচার মামলায় আরও চার দিনের সিবিআই হেফাজত হল অনুব্রত মণ্ডলের। শনিবার নির্ধারিত সূচি মেনে অনুব্রত মণ্ডলকে আসানসোলের বিশেষ আদালতে পেশ করে সিবিআই। অনুব্রত মণ্ডলের আইনজীবী তাঁর জামিনের আবেদন জানালেও বিচারপতি রাজেশ চক্রবর্তী তা খারিজ করে দেন। ২৪ তারিখ পর্যন্ত সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।

শনিবার সকালে আলিপুর কম্যান্ড হাসপাতাল থেকে শারীরিক পরীক্ষার পর তাঁকে আসানসোলে নিয়ে যাওয়া হয়। অনুব্রতর হাজিরাকে কেন্দ্র করে এদিন উত্তপ্ত হয়ে ওঠে আসানসোলের সিবিআই কোর্ট চত্বর। একদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে অনুব্রতর সমর্থনে বিক্ষোভ দেখানো হয়। তাঁদের দাবি, ‘অগণতান্ত্রিকভাবে ফাঁসানো হয়েছে অনুব্রত মণ্ডলকে’। অন্যদিকে এর পালটা বিক্ষোভ দেখায় কংগ্রেস, সিপিআইএম। অনুব্রতকে দেখে ‘গোরু চোর’ স্লোগান ওঠে। একসময় স্লোগান পালটা স্লোগানে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

শনিবার আদালতে অনুব্রত মণ্ডলের পক্ষের আইনজীবী বলেন, যে চালকল নিয়ে বিতর্ক সেই চালকল অনুব্রত মণ্ডলকে উপহার দিয়েছেন তাঁর শ্বশুর। উল্লেখ্য, গতকাল এই ভোলে বোম চালকলে তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিল সিবিআই। এদিন অনুব্রতর আইনজীবী আরও বলেন, সিবিআইকে যথেষ্ট সহযোগিতা করা সত্ত্বেও বারবার অসহযোগিতার অভিযোগ আনা হচ্ছে।
শনিবার সকালেই গোরু পাচার কাণ্ডে আসানসোল আদালতে অনুব্রতের পক্ষে জামিনের আবেদন জানান তাঁর আইনজীবী। তাঁর যুক্তি ছিল শারীরিক অসুস্থতার কারণে তাঁর উপযুক্ত চিকিৎসার প্রয়োজন। সেই কারণে তাঁকে জামিন দেওয়া হোক। তিনি তদন্তের কাজে সবরকম সহযোগিতা করবেন। যদিও অনুব্রতর আইনজীবীর এই আবেদনে সাড়া দেননি আসানসোলের বিশেষ আদালতের বিচারপতি।
সিবিআই-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়, অনুব্রত মণ্ডল অত্যন্ত প্রভাবশালী ব্যক্তি। তাঁকে যদি এখন জামিন দেওয়া হয় তিনি সাক্ষীদের প্রভাবিত করতে পারেন এবং প্রমাণ লোপাট করতে পারেন। গ্রেফতারির আগে ও পরে তিনি তদন্তে সহযোগিতা করেননি। তিনি তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছেন। পাশাপাশি আরও জানানো হয়, অনুব্রত মণ্ডলের মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সিবিআই দল গেলেও তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়। যে ঘটনাকে সিবিআই অসহযোগিতা হিসেবে দেখাতে চাইছে। সিবিআই-এর আরও দাবি, গোরু পাচারের টাকা যেত অনুব্রতর কাছে। অনুব্রতকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন।
উল্লেখ্য, ১১ অগাস্ট বোলপুরের নিচুপট্টি এলাকার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় অনুব্রত মণ্ডলকে। তখন থেকে তিনি সিবিআই হেফাজতেই আছেন। আদালতের নির্দেশ মেনে শারীরিক পরীক্ষা চালানোর পাশাপাশি গোরু পাচার কাণ্ডে জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে যাচ্ছে সিবিআই।
অনুব্রতকে আরও চার দিন হেফাজতে চেয়ে সিবিআইয়ের আইনজীবী বলেন, ‘‘এখনও অনেক ব্যাপার জানার আছে। ওঁর সঙ্গে কথা বলে বিভিন্ন জিনিস খতিয়ে দেখতে হবে। সে জন্য তাঁকে আবার আমাদের হেফাজতে নিতে হবে। আমাদের হেফাজতে তাঁর প্রয়োজনীয় শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা হচ্ছে। অভিযুক্তের কোনও অসুবিধা হয়নি।’’

দু’পক্ষের সওয়াল-জবাব শুনে বিচারক রায় স্থগিত রাখেন। কিছুক্ষণ পর জামিনের আবেদন খারিজ করে তাঁকে চার দিনের সিবিআই হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন আসানসোলের সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের বিচারক।