২৪ ঘণ্টা আগে দেওয়া নির্দেশ আচমকা বদল করে আদালতে নজিরবিহীন তোপের মুখে পড়লেন কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Abhijit Ganguli)। বুধবারই, তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের কন্যা সুকন্যা মণ্ডল-সহ ৬জনকে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়। জমা দিতে বলা হয় তাঁদের টেটের (TET) শংসাপত্রও। কিন্তু বৃহস্পতিবার, বিচারপতি জানিয়ে দেন অতিরিক্ত হলফনামা তিনি গ্রহণ করছেন না। একই সঙ্গে বুধবার, যে ২টি নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল তাও প্রত্যাহার করা হয়েছে। এই বিষয় নিয়ে এদিন আদালতে আইনজীবী অরুণাভ ঘোষের (Arunabha Ghosh) নজিরবিহীন তোপের মুখে পড়তে হয় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা অনুব্রত-কন্যার নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ এনে বুধবার টেট সংক্রান্ত একটি অতিরিক্ত মামলা দায়ের করা হয়েছিল কলকাতা হাই কোর্টে। ওই মামলায় বৃহস্পতিবার সুকন্যাকে আদালতে হাজিরা বলেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। আদালতের নির্দেশ মেনে নির্দিষ্ট সময়ই হাই কোর্টে পৌঁছন সুকন্যা। কিন্তু শুনানিতে এ সংক্রান্ত পুরনো নির্দেশ ফিরিয়ে নেন বিচারপতি। যদিও একইসঙ্গে তিনি জানিয়ে দেন, সুকন্যার নিয়োগ নিয়ে আদালতে আলাদা করে মামলা হলে, তা শুনবে আদালত।
এরপরেই আদালতে বিচারপতির সঙ্গে বেনজির কথা কাটাকাটি হয় আইনজীবী অরুণাভ ঘোষের। অরুণাভ ঘোষ সাংবাদিকদের বিচারপতির ঘরে ডাকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। সেখানে আইনজীবীর বিরুদ্ধে বারবার আদালত অবমাননার অভিযোগ আনার কথা বলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। অরুণাভ ঘোষ বলেন, ‘‘আপনি আইন জানেন না। আপনাকে কী করে ডিল করতে হয় জানি। সাংবাদিকরা আপনার চেম্বারে যান। আপনি অনেক কথা বলেন।’’ বিচারপতি বলেন, ‘‘লাইভস্ট্রিং করা যাবে না, সকলে ভিডিও করতে পারেন।’’ এরপরেই অরুণাভকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘‘আপনি তো সংবাদমাধ্যমে অনেক কিছু বলেছেন, এই নিয়ে রুল জারি করব।’’ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে বলতে শোনা যায়, “আপনি আমায় চোখ রাঙাবেন না”। প্রত্যুত্তরে অরুণাভ ঘোষ বলেন, ”গত ৬ বছর আপনাকে দেখছি…”। এই বাগবিতণ্ডার পরেই রায় পড়ে শোনান বিচারপরতি। অতিরিক্ত হলফনামা গ্রহণযোগ্য নয়, জানিয়ে দিল হাইকোর্ট। ‘ইচ্ছে করলে আলাদা করে মামলা করতে পারেন আবেদনকারীরা’। অনুব্রতর মেয়ে-সহ ৬ জনের হাজিরার নির্দেশ প্রত্যাহার করে জানিয়ে দিল হাইকোর্ট।