করোনাকালে দুবছর বন্ধ থাকার পরে বর্ণাঢ্য কুচকাবাজের মাধ্যমে রেড রোডে পালিত হল স্বাধীনতা দিবস। স্বাধীনতার ৭৫তম বছর উপলক্ষে জমজমাট অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। জঙ্গলমহলের আদিবাসী নৃত্যশিল্পীদের সঙ্গে রেড রোডে পা মেলান স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Bandopadhyay)। ছিলেন মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদাও। রাজ্য সরকারের উন্নয়নমূলক প্রকল্পের ট্যাবলোর পাশাপাশি ছিল স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের অনুষ্ঠান। ছিল পাহাড় থেকে জঙ্গলমহল, পুরুলিয়া থেকে সুন্দরবনের লোকশিল্পীদের অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে বাজানো হয় মুখ্যমন্ত্রীর গাওয়া দুর্গাপুজোর থিম সং।
রেড রোডে পতাকা তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপর পুষ্প বৃষ্টি করা হয়। মণিপুরের প্রাকৃতিক বিপর্যয় নিহত পুলিশকর্মীদের স্ত্রীদের হাতে আর্থিক ক্ষতিপূরণ ও চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দায়িত্বে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য পুরস্কার পান ১১ জন উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিক।
এরপরেই শুরু হয় কুচকাওয়াজ (Parades)। এদিকে আকাশের মুখ ভার। ধীরে ধীরে বৃষ্টি নামে। প্রবল বৃষ্টির মধ্যেও চলে অনুষ্ঠান। স্কুলের পড়ুয়ারা রেনকোট পরেই তাদের অনুষ্ঠান করে। উত্তর থেকে দক্ষিণ- বিভিন্ন স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা দেশাত্মবোধক গানের মাধ্যমে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করে।
এরপরই আসেন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের লোকশিল্পীরা। নিজেদের অঞ্চলের সংস্কৃতির ধারা তুলে ধরেন তাঁরা। জঙ্গলমহলের আদিবাসী শিল্পীরা যখন রেড রোডে ধামসা-মাদলের তালে নৃত্য পরিবেশন করছিলেন, তখন মঞ্চ থেকে নেমে মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের মধ্যে যান, স্বয়ং তাঁদের সঙ্গে পা মেলান। তাঁর সঙ্গেই অংশ নেন রাজ্যের মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা (Birbaha Hasnda)।
কলকাতার দুর্গাপুজোকে (Durga Pujo) হেরিটেজ তকমা দিয়েছে ইউনেস্কো (UNESCO)। সেই সম্মানের উদযাপনে এদিন রেড রোডের কুচকাওয়াজে ছিল দুর্গাপুজোর বিশেষ শোভাযাত্রা। বাজলো দুর্গা পুজোর থিম সং। গেয়েছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী।
সঙ্গীত ও চলচ্চিত্র জগতে একের পর এক নক্ষত্র পতন ঘটেছে। সেই সব বিশিষ্ট শিল্পীদের শ্রদ্ধা জানিয়ে এবার রেড রোডে বিশেষ ট্যাবলো ছিল ‘শ্রদ্ধাঞ্জলি’। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা এবং সুর করা অনেক গানে এদিনের কুচকাওয়াজে শোনানো হয়।
কলকাতা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের সার্জেন-সহ বিভিন্ন পুলিশ কর্মীরা মোটরবাইকের স্টান্ট প্রদর্শন করেন। জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে সমাপ্তি হয়। রেড রোডের অনুষ্ঠানের।
ফিরহাদ হাকিম অরুপ বিশ্বাস বাবুল সুপ্রিয় বীরবাহা হাঁসদা-সহ রাজ্যের মন্ত্রীরা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সংগীত ও চলচ্চিত্র জগতের বৈশিষ্টজনেরা। ছিলেন সরকারি আধিকারিকরা। এসেছিলেন বিদেশি অতিথিরাও। রঙিন, রুচিসম্মত, জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পালিত হল স্বাধীনতার ৭৫ বছর।
আরও পড়ুন:দেশের উন্নয়নের জন্য পঞ্চসংকল্পের পরামর্শ মোদির