উচ্চ মাধ্যমিক (Higer secondary) পরীক্ষার পর স্নাতক স্তরে (Degree course) ভর্তি হওয়াটা পরীক্ষার্থীদের কাছে অনেক বড় একটা বিষয়। সেক্ষেত্রে স্কুলের শেষ পরীক্ষায় কত নম্বর পাওয়া গেল, তার উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন শাখা বেছে নিয়ে পরবর্তী শিক্ষা এগিয়ে নিয়ে যেতে চান পড়ুয়ারা। ডাক্তার (Doctor) বা ইঞ্জিনিয়ার(Engineer) হতে চাইলে সেই মতো পরীক্ষা দিতে হয় আবার সাহিত্য বা বিজ্ঞান নিয়ে স্নাতক ডিগ্রী পেতে চাইলে তার জন্য আলাদা আলাদা প্রবেশিকা পরীক্ষা (entrance exam) দিতে হয়। কিন্তু কেন্দ্র থেকে নতুন নিয়ম জারি করা হয়েছে। এক অভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষা়র কথা ঘোষণা করেছে সরকার ( Government of India)। শিক্ষা মহলের একাংশের মতে ‘এক দেশ এক পরীক্ষা নীতিকে’ বাস্তবায়িত করতে চাইছে বিজেপি সরকার(BJP Government)।
এতদিন পর্যন্ত যারা ডাক্তারি পড়তে চাইতেন তাদের নিট এবং ইঞ্জিনিয়ারিং এর জন্য জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা দিতে হত। কিন্তু ইউজিসি(UGC) বলছে আলাদা আলাদা পরীক্ষা নয়, এবার থেকে সিইউইটি(Central Universities Entrance Test) একমাত্র পরীক্ষা হবে। অর্থাৎ রসায়ন, অংক, পদার্থবিদ্যা, জীববিদ্যা এসবের জন্য আলাদা আলাদা পরীক্ষা দিতে হবে না। সিইউইটি (CUET) পরীক্ষার মাধ্যমেই মূল্যায়ন হবে। এমনকি সর্বভারতীয় স্তরে ডাক্তারি ও ইঞ্জিনিয়ারিং এর ক্ষেত্রেও এমন পদ্ধতি প্রয়োগ করা হবে বলে পরিকল্পনা করছে কেন্দ্র সরকার। কিন্তু এক পরীক্ষার মাধ্যমে কীভাবে যথার্থ মেধার বিচার হবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বিভিন্ন রাজ্য। যে পড়ুয়া স্নাতক ডিগ্রী পাওয়ার জন্য সাধারণ বিষয় নিয়ে পড়তে চান আর যিনি ডাক্তার হওয়ার জন্য মেডিকেল পড়তে চান দুজনের যোগ্যতা এবং মেধার নির্ণয় একটি সাধারণ পরীক্ষার মাধ্যমে করা কি আদৌ সম্ভব? শিক্ষা মহল বলছে ডিগ্রী কোর্সের পড়াশোনা আর জয়েন্ট এন্ট্রান্সের পড়াশোনা আলাদা। কী করে একটা পরীক্ষা এই দুই আলাদা ধরনের কোর্সের পড়াশোনার মাপকাঠি হয়ে উঠতে পারে? তামিলনাড়ু, পশ্চিমবঙ্গ সহ বিভিন্ন রাজ্য ইতিমধ্যেই কেন্দ্রের এই নীতির বিরোধিতা করেছে। এই নতুন নীতি প্রয়োগ করার মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকার মেধার যথার্থ মূল্যায়ন করতে চাইছে না। এই ‘এক দেশ এক পরীক্ষা নীতি (‘One Country One Test Policy’) শিক্ষা ক্ষেত্রে প্রয়োগ করতে গেলে, ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে তা এক বড় সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াবে বলেই মনে করছেন শিক্ষাবিদরা। দেশের শিক্ষার যা পরিকাঠামো তাতে এইভাবে পরীক্ষার্থীদের যোগ্যতার বিচার করা সম্ভব নয় বলেই মত তাঁদের। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের (Jadavpur University) সহ উপাচার্য চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য জানিয়েছেন একটি পরীক্ষার মাধ্যমে তিনটি আলাদা বিভাগের মেধা নির্ণয় সম্ভব নয়। সহমত পোষণ করেছেন ম্যাকাউটের উপাচার্য সৈকত মৈত্রও। যদিও এইসব কথাকে গুরুত্ব দিতে নারাজ ইউজিসি। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (UGC) চেয়ারম্যান এম জগদীশ কুমার (M Jagdish Kumar) জানিয়েছেন আগামী বছরের মধ্যে ডাক্তারি এবং ইঞ্জিনিয়ারিং এর প্রবেশিকা পরীক্ষার ক্ষেত্রে এক পরীক্ষা নীতির প্রয়োগ ঘটানোর চিন্তাভাবনা খুব দ্রুত কার্যকর করা হবে।