খিদের চোটে পেটে যখন ‘ছুঁচোয় ডন মারে’। তখন মেজাজটা কম বেশি তিরিক্ষি হয়ে ওঠাটা স্বাভাবিক। বেঙ্গালুরুর রোহিতকুমার সিং তার ব্যতিক্রম নন। তাই বারবার ডেলিভারি এগজিকিউটিভ কে ফোন করে কতক্ষণে খাবার পৌঁছবে তা জিজ্ঞেস করছিলেন। আর ও প্রান্ত থেকে জবাব আসছিল, ‘আর মাত্র পাঁচ মিনিট স্যার’।
মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই দরজার কলিং বেলটা বেজে উঠেছিল। দৌড়ে গিয়ে দরজাও খুলেছিলেন রোহিত। কিন্তু তারপরেই তার মুখে রা নেই। যিনি এতক্ষণ খাবারের জন্য বারবার ফোন করে ডেলিভারির সময় জানতে চাইছিলেন, তার চোখ তখন ছানাবড়া!
কারণ, তখন দরজার সামনে খাবারের প্যাকেট হাতে দাঁড়িয়েছিলেন ডেলিভারি এগজিকিউটিভ বছর চল্লিশের কৃষ্ণাপ্পা রাঠৌর। কাঁচাপাকা চুলের মানুষটির মুখে তখন স্মিত হাসি। হাতে ক্রাচ। এই দৃশ্য দেখে নিমেষে সমস্ত রাগ , কোথাও যেন উধাও হয়ে গিয়েছিল রোহিতের।ঠিক সেই মুহূর্তে নিজেকে অপরাধী মনে হচ্ছিল রোহিতের। সেকথা সোশ্যাল মিডিয়ায় কবুল করেছেন রোহিত।মানুষটিকে দেখার পর তাঁর সঙ্গে আলাপ জুড়েছিলেন রোহিত। জানতে চান, তিনি কোথায় থাকেন, কে কে আছেন বাড়িতে।
কৃষ্ণাপ্পা জানান, একটি ক্যাফেতে কাজ করতেন তিনি। লকডাউনে সেই কাজটি চলে যায়। বাড়িতে তিন সন্তান, স্ত্রীকে নিয়ে আর্থিক অনটন পরেন রোহিত।
ক্যাফের কাজ চলে যাওয়ার পর খাবার সরবরাহ সংস্থার কাজে ঢোকেন। সকালে বাড়ি থেকে বেরোন ক্রাচে ভর করে। সারা দিন খাবার সরবরাহ করে তার পর বাড়ি ফেরেন। কৃষ্ণাপ্পার এই কথা তার মন ছুঁয়ে যায়। নিজেকে অপরাধী মনে করতে থাকেন রোহিত। শেষ পর্যন্ত কৃষ্ণাপ্পার কাছে তার কৃতকর্মের জন্য ক্ষমাও চেয়ে নেন তিনি।