সন্তানকে ফিরে পেতে এবার নিজের মা-বাবার বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ মেয়ে

0
1

সন্তানের উপর সব থেকে বেশি অধিকার কার, জন্মদাত্রী মায়ের না যিনি প্রতিপালন করছেন তাঁর ? এবার এই প্রশ্ন নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ এক মা। সাত বছরের এক শিশুকে নিয়ে আইনি লড়াইয়ে (legal battle over a child) একই পরিবারের দুই প্রজন্ম। ঠিক যেন সিনেমার গল্প। মামলা উঠল কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High court)। মহা ফাঁপরে পড়লেন স্বয়ং বিচারপতিও।

পরিচালক শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় আর নন্দিতা রায়কে যাঁরা চেনেন তাঁরা জানেন বাস্তব ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে থাকা বাঙালি সেন্টিমেন্টের উপর ভিত্তি করে গল্প লেখেন তাঁরা। কিন্তু সেই গল্প যে বাস্তবের সঙ্গে এভাবে মিলে যাবে তা বোধহয় পরিচালকদ্বয় নিজেরাও ভাবতে পারন নি। রিল লাইফের ‘ পোস্ত’ এবার রিয়েল লাইফে। নিজের সাত বছরের সন্তানের দাবি নিয়ে নিজের বাবা মা-এর বিরুদ্ধে মামলা করলেন শতাব্দী কুণ্ডু (Shatabdi Kundu) নামের এক মহিলা। তাঁর অভিযোগ তাঁর মেয়েকে আটকে রেখেছে দাদু- দিদিমা। নজিরবিহীন এই অভিযোগ ঘিরে দ্বিধা বিভক্ত আইনজীবীদের একাংশ। সূত্রের খবর, গত বছর এপ্রিল মাসে স্বামীর সঙ্গে ডিভোর্স হয় শতাব্দী কুণ্ডুর। সেই সময় কন্যা সন্তানের দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করে শিশুর বাবা। ডিভোর্সি শতাব্দী এরপর তাঁর বাপের বাড়িতে গিয়ে থাকতে শুরু করেন। এরপর নিজের মতো করে নিজের জীবনকে সাজিয়ে তুলতে চাকরি করতে শুরু করেন। তারপর সম্পর্ক হয় এক যুবকের সঙ্গে। দুজনে বিয়ে করেন আর এরপর থেকেই গণ্ডগোল। নতুন সংসারে নিজের মেয়েকে নিয়ে আসতে চান শতাব্দী কুণ্ডু। এবার বেঁকে বসেন তাঁর বাবা মা। স্পষ্ট জানিয়ে দেন জামাইয়ের কাছে নাতনিকে তুলে দিতে রাজি তাঁরা কিন্তু মেয়ের কাছে নাতনিকে তুলে দিতে চান না। এরপরই পুলিশের দ্বারস্থ হন শতাব্দী। কিন্তু পুলিশ কোনও পদক্ষেপ না নেওয়ায় হাই কোর্টে সন্তানের খোঁজ চেয়ে ‘হেভিয়াস কর্পাস’-এর মামলা করেন তিনি। বিচারপতি এই মামলার রায় দিতে গিয়ে জানান, নাবালক-নাবালিকার উপর তার বাবা, ঠাকুমা-ঠাকুরদা বা দাদু-দিদার যেমন অধিকার রয়েছে, ঠিক একইভাবে তুলনামূলক বেশি অধিকার রয়েছে জন্মদাত্রী মায়ের। তাঁকে সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যায় না। মাকে তাঁর কোলের সন্তানের কাছ থেকেও আলাদা করা যায় না। যদিও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিম্ন আদালত নেবেন বলে জানান হয়েছে।