মেহেন্দির জেরে মৃত্যুর দোরগোড়ায় ঝাড়খণ্ডের কিশোরী, প্রাণ বাঁচাল বাংলার ডাক্তার

0
1

শখ করে সাজগোজ করার পর এই বিপত্তি ঘটবে কেই বা জানত? কার্যত মৃত্যুর দোরগোড়ায় পৌঁছে গেছিলেন কিশোরী। কলকাতার (Kolkata) চিকিৎসকের হাত ধরে নতুন জীবন পেলেন তিনি। ঝাড়খণ্ডের (Jharkhand) সেই সুনীতা ঝাওয়ারকে (Sunita Jhawar) কার্যত পুর্নজন্ম দিল কলকাতার হাসপাতাল।

কিন্তু ঠিক কী ঘটেছিল যার জন্য এই মৃত্যুর দিকে ক্রমশ এগিয়ে যাচ্ছিলেন কিশোরী? জানা যায় আত্মীয় বিয়ে উপলক্ষ্যে হাতে মেহেন্দি করেছিলেন সুনীতা ঝাওয়ার। তারপর বিয়েবাড়ির আনন্দ করে, খাওয়া সেরে বাড়ি ফিরতেই বিপত্তি শুরু। অনিয়মের ফলে পেটের গোলমাল। পরিপাক তন্ত্রের সমস্যা থাকায় একাধিকবার মল ত্যাগের কারণে শরীর থেকে অনবরত জল বেরিয়ে যেতে থাকে। ফলে তাঁকে তড়িঘড়ি নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় এক হাতুড়ে চিকিৎসকের কাছে । হাতজুড়ে গাঢ় মেহেন্দির আঁকিবুঁকি। শিরা ঠাওর করতে পারেননি চিকিৎসক। ভুল বশত স্যালাইনের সূঁচ ঢুকিয়ে দেন আর্টারি বা ধমনির মধ্যে। ব্যাস এতেই পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যায়। স্যালাইনের সুচ সেখানে ঢুকিয়ে দেওয়ার ফলে আর্টারি থেকে ক্রমাগত রক্ত ক্ষরণ। সূঁচ ঢুকে যাওয়ায় আর্টারি বন্ধ হয়ে যায়। রক্ত জমাট বাঁধতে শুরু করে। শেষমেশ পচন শুরু হয়। এরপরই হাত বাদ দেওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়। পরিবারের লোকেরা কলকাতায় নিয়ে আসেন এবং একটি বেসরকারি হাসপাতালে (Private Hospital) তাঁকে ভর্তি করা হয়। প্লাস্টিক রিকনস্ট্রাকশন সার্জন ডা. অনির্বাণ ঘোষ (Dr. Anirban Ghosh) কার্যত অসাধ্য সাধন করেন। যে হাত বাদ দিয়ে দিতে হত, ধীরে ধীরে সেই হাতে সাড় ফিরিয়ে দিয়েছেন ডা. ঘোষ। ডাক্তার বলছেন আর্টারি বা ধমনিতে স্যালাইনের সুচ ঢুকিয়ে দেওয়া অত্যন্ত মারাত্মক। আর্টারির যে অংশে সূঁচ ঢুকিয়ে দেওয়া হয় তার নিচের অংশে রক্ত সঞ্চালন বিঘ্নিত হয়। রক্ত সঞ্চালন বিঘ্নিত হলে ধীরে ধীরে ওই অংশের কোষগুলো মরে যেতে থাকে। চিকিৎসা পরিভাষায় একেই বলা হয় নেক্রোসিস (Necrosis)।

কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করে আপাতত সুস্থ আছেন সুনীতা। চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন রোগীর পরিবার। এই ঘটনায় ফের প্রমানিত যে বাইরের রাজ্যের মানুষও এখনও আস্থা রাখেন এই বঙ্গের চিকিৎসা ব্যবস্থার উপর।