মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়েছে কিছুদিন আগে। তখনও পরিবার জানত না এরকম এক কাণ্ড ঘটতে পারে। চারপাশে যখন থমথমে পরিবেশ, তখন বিয়ের সানাই বাজল মুসলিম (Muslim)পরিবারে। বিয়ের দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নিলেন হিন্দু (Hindu) পড়শীরা।
ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার উলুবেড়িয়ায়। গত কয়েকদিন ধরে যে জায়গার নাম খবরের শিরোনামে। চারপাশের পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ। ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। এই অবস্থায় বিয়ের আয়োজন কি সম্ভব? উলুবেড়িয়ার খলিসানির (Khalisani in Uluberia) ইদ্দেনেসা মল্লিকের( Iddenesa Mallick) পাশে তাপস কোদালি(Tapas Kodali), লক্ষ্মীকান্ত কয়াল(Laxmikant Kayal), উত্তম দোলুইরা(Uttam Dolui)। সবাই স্থানীয় ক্লাবের সদস্য। রবিবার তাঁরাই দাঁড়িয়ে থেকে বিয়ে দিলেন ইদ্দেনেসার মেজো মেয়ে পাকিজার। নিমন্ত্রিতদের আপ্যায়ন থেকে বরকে অভ্যর্থনা, সুষ্ঠভাবে বিয়ে সম্পন্ন করানো এমনকি পাকিজাকে নির্বিঘ্নে শ্বশুরবাড়ি পাঠানো— সব কিছুর দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন ওই তিন যুবক।
৬ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশেই ইদ্দেনেসাদের বাড়ি। তাঁর স্বামী মারা গিয়েছেন আট বছর আগে। তাঁদের তিন মেয়ে, এক ছেলে। স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে বাড়ির সামনে একটা সাইকেল জমা রাখার গ্যারাজ চালান ইদ্দেনেসা। বড় মেয়ে বিবাহিত, মেজো মেয়ে পাকিজার সঙ্গে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরের শেখ মোক্কাবীরের বিয়ে ঠিক হয় মাসতিনেক আগে। বাড়িতেই বিয়ের আয়োজন করেছিলেন ইদ্দেনেসা। কিন্তু গত চার পাঁচ দিন ধরে সম্পূর্ণ বদলে গেছে পরিস্থিতি। নূপুর শর্মার আপত্তিকর মন্তব্যের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার থেকেই অবরোধ-গোলমালে উত্তপ্ত হয়েছে উলুবেড়িয়া, পাঁচলা, খলিসানি-সহ হাওড়ার বেশ কয়েকটি এলাকা। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। এই অবস্থায় কী করে বিয়ে সম্ভব? চিন্তিত মুসলিম পরিবারের পাশে দাঁড়ালেন ক্লাবের হিন্দু সদস্যরা। স্থানীয় তিন যুবক জানাচ্ছেন ছোট থেকেই এক পাড়াতে বসবাস ।এখানে জাতি ধর্ম কোনও বিভেদ নয়, মানুষের সমস্যায় মানুষ এগিয়ে যাবেন সেটাই আসল।ক্লাব-সদস্য তাপস, লক্ষ্মীকান্ত, উত্তমরা পুলিশের অনুমতি নিয়ে বিয়ের আয়োজন সম্পূর্ণ করেন। নির্বিঘ্নে মেয়ের হয়ে যাওয়ায় খুশি ইদ্দেনেসা, দুহাত ভরে আশীর্বাদ করছেন ওই যুবকদের।



















































































































































