“দু-পয়সার প্রেস” বলায় মহুয়াকে সমন আদালতের! “চটি চাটা…” বলা শুভেন্দুর কী হবে?

0
1

বছর দুই আগের ঘটনা। পেশার তাগিদে কাজ করতে আসা সংবাদমাধ্যমমের প্রতিনিধিদের অপমান ও কুরুচিকর ভাষায় আক্রমণ করেছিলেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। যা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে সমাজের বিভিন্ন মহলে শোরগোল পড়ে যায়, সমালোচনার ঝড় বয়েছে ওই সময়ে। এবার গণতন্ত্রের চতুর্থস্তম্ভ সংবাদ মাধ্যমের প্রতি অসংবিধানিক ভাষা প্রয়োগ করার জন্য তৃণমূল সাংসদের
বিরুদ্ধে সমন জারি করল কলকাতার ব্যাঙ্কশাল কোর্ট। আগামী ১৪ জুলাই আদালতে সশরীরে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে মহুয়া মৈত্রকে।



আরও পড়ুন:ভবানীপুরে জোড়া খুনকাণ্ডে উধাও দম্পতির মোবাইল! সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে পুলিশ



ঠিক কী ঘটেছিল?

২০২০ সালে নদিয়ার গয়েশপুরে করিমপুর-২ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মিসভা ছিল একটি হলে। যেহেতু দলীয় কর্মিসভা, তাই সেখানে সংবাদমাধ্যমের হাজির থাকার কথা নয়। কিন্তু এই ধরণের কর্মসূচিতে বাইরে অপেক্ষা করে থাকেন সাংবাদিকরা। অনেক সময় সভা শুরুর আগে ছবি করে বেরিয়ে যেতেও বলা হয়। ফলে জেলা সাংবাদিকদের একটি বড় অংশ সেদিন হলের বাইরে অপেক্ষা করছিলেন।


সেই কর্মিসভার একটি ভিডিও প্রকাশ্যে চলে আসে। যা নিয়ে বিতর্কের ঝড় উঠেছিল রাজ্যেজুড়ে। ওই ভাইরাল ভিডিওতে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে বেশ আক্রমণাত্মক ভঙ্গিমায় বলতে শোনা যায়, ”কে এই দু’পয়সার প্রেসকে ভেতরে ডাকে?‌ সরাও প্রেসকে এখান থেকে। কেন দলের মিটিংয়ে প্রেস ডাকো তোমরা?‌ কর্মী বৈঠক হচ্ছে আর সবাই টিভিতে মুখ দেখাতে ব্যস্ত। আমি দলের সভানেত্রী, আমি আপনাদের নির্দেশ দিচ্ছি, প্রেসকে সরান।”

এই ঘটনার প্রেক্ষিতে ২০২০ সালেই মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে ব্যাঙ্কশাল কোর্টে মামলা করেছিলেন আইনজীবী স্মরজিৎ রায়চৌধুরী। সেই মামলাতেই সমন জারি করে এবার তৃণমূল সাংসদকে হাজিরা নির্দেশ দিল আদালত। যদিও ওই ঘটনার পর টুইটে ভুল স্বীকার করে ক্ষমাও চেয়েছিলেন মহুয়া মৈত্র।

সংবাদ মাধ্যমের প্রতি এহেন আচরণ-এর জন্য মহুয়া মৈত্রকে কেউ ভালভাবে নেননি। আইনি পথে হেঁটে মামলাও হয়েছে। আদালত একদম সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে তৃণমূল সাংসদকে হাজিরাও দিতে বলেছে। কিন্তু সেই একই দোষে দুষ্ট রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। একটি সাংবিধানিক পদে থেকে গণতন্ত্রের চতুর্থস্তম্ভ সংবাদ মাধ্যমের প্রতি যে ভাষায় তিনি দিনের পর দিন কথা বলেছেন, তা।নিয়েও বিভিন্ন মহলে সমালোচনা হলেও কোনও এক অজানা কারণে মহুয়া মৈত্র কাণ্ডের মতো ঝড় ওঠেনি। মহুয়ার ক্ষেত্রে প্রেসক্লাবের মতো সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংস্থা নিন্দা করলেও শুভেন্দুর বেলায় কেন চুপ, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। শুভেন্দু একাধিক সংবাদ মাধ্যমের নাম নিয়ে একাধিকবার প্রকাশ্যে “চটি চাটা…” বলেও পার পেয়ে গিয়েছেন। কেন কেউ মহুয়া মৈত্রের মতোই শুভেন্দুর বিরুদ্ধে মামলা করার সাহস কেউ দেখালেন না? প্রশ্ন উঠছে।