করোনাকালে আরও প্রকট ধনী-দরিদ্র অর্থনৈতিক বৈষম্য

0
1

করোনা (corona)ভাইরাস আমাদের জীবন পাল্টে দিয়েছে। নতুন বেশ কিছু শব্দ জুড়েছে জীবনে, প্রকট হয়েছে আমাদের অসহায়তার করুণ তথ্য। ২০২১ সালে অর্থাৎ কিনা করোনা মহামারিকালে বিশ্বে নতুন ধনকুবেরের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। বেশি করে প্রকট হয়েছে ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য। পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে বলা যায় নতুন করে ২৬ কোটি ৩০ লাখ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে গেছেন। আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা অক্সফামের(Oxfam) সমীক্ষায় উঠে এসেছে এমন তথ্য।

অক্সফাম হল ২১ টি স্বাধীন দাতব্য সংস্থার একটি ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠিত কনফেডারেশন। ১৯৪২ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত হয় এবং অক্সফাম ইন্টারন্যাশনালের নেতৃত্বে বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্য কীভাবে কমানো যায় তার উপর কাজ করছে । সমীক্ষায় বলা হয়েছে, করোনাকালে ২০২০ সালে  নতুন বিলিয়নেয়ার হিসেবে নাম লিখিয়েছেন কমপক্ষে ৫৭৩ জন। এদের নিয়ে বিশ্বে মোট বিলিয়নেয়ারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৬৬৮ জন। মহামারির সময় প্রতি ৩০ ঘণ্টায় একজন করে বিলিয়নেয়ার তৈরি হয়েছেন। পাশাপাশি ধনকুবেরদের সম্পদ প্রায় ৪২ শতাংশ বেড়েছে।

অক্সফামের ইনইকুয়ালিটি পলিসির (Oxfam inequality policy) প্রধান ম্যাক্স লসোন বলেন, ‘বিলিয়নেয়ারদের সম্পদের এই বৃদ্ধি হয়েছে করোনা মহামারির প্রথম বছরে। এর পরের বছর ২০২১ সালে ধনকুবেরদের সম্পদ বেড়েছে খুব কম। সাম্প্রতিক ইতিহাসে এত অল্প সময়ে সম্পদশালীদের এত বেশি সম্পদ বেড়ে যাওয়া, অন্যদিকে এত দ্রুত এত বেশিসংখ্যক মানুষের দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যাওয়ার ঘটনা আমরা প্রত্যক্ষ করিনি।’ করোনাকালে বিশ্বব্যাপী মানুষ যখন নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য ও খাবার চড়াদামে কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন, ঠিক তখনই বড় বড় কোম্পানি ও তাদের মালিকরা  কয়েক গুণ বেশি হারে মুনাফা লাভ করেছেন। গত দু’বছরে খাদ্য ও কৃষিপণ্যের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ধনকুবেরদের সম্পদ বেড়েছে ৪৫ শতাংশ। তাদের মোট সম্পদ বেড়েছে ৩৮২ বিলিয়ন ডলার। সেই সঙ্গে জ্বালানি, গ্যাস ও কয়লার সঙ্গে জড়িত বিলিয়নিয়ারদের সম্পদে ২০২০ সালে বৃদ্ধি হয়েছে ৫৩ বিলিয়ন ডলার বা ২৪ শতাংশ। স্বাস্থ্য বিষয়েও এসেছে বদল। ওষুধ শিল্পমালিকদের মধ্যে নতুন বিলিয়নেয়ার হয়েছে কমপক্ষে ৪০ জন। এ সময় প্রযুক্তি খাতেও নতুন ধনকুবেরের সংখ্যা বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। এ ছাড়া বিশ্বের শীর্ষ ১০ ধনীর মধ্যে ইলন মাস্ক, জেফ বেজোস, বিল গেটসসহ সাত জনের সম্পদ বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি। বিগত দুবছরে তাঁদের সম্পত্তির পরিমাণ ৪৩৬ বিলিয়ন ডলার থেকে বৃদ্ধি পেয়ে হয়ে দাঁড়িয়েছে ৯৩৪ বিলিয়ন ডলার।