নজিরবিহীন! মাতৃহারা নাবালকের জন্য দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ নিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। জেলা জজ’কে এজলাস থেকে সরাসরি ফোন করে ওকালতির খরচ বহন করার নির্দেশ দিলেন খোদ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন:সুপরিকল্পিত চিত্রনাট্য নয় তো? কাশীপুরে যুবমোর্চা নেতার মৃত্যুতে প্রশ্ন কুণালের
২০১০ সালে নাবালকের শিক্ষিকা মা আচমকা খুন হন। অভিভাবকহীন হয়ে পড়ে নাবালক। অভিভাবক প্রমাণ জোগাড়ে মামলা হয় নিম্ন আদালতে। ২ মাসের মধ্যে মেদিনীপুর আদালতের নাবালকের মামলা নিষ্পত্তি করতে বলে হাইকোর্ট। গত ২৬ এপ্রিল নিম্ন আদালতে আইনি অভিভাবকত্ব পাওয়ার জন্য আবেদন জানান নাবালকের দিদা। দেখা যায় দু’মাসে বিষয়টি নিষ্পত্তি তো দূরের কথা দু মাস পেরিয়ে ২৭ জুন মামলার শুনানির দিন ধার্য করেছে নিম্ন আদালত। নাবালক পশ্চিম মেদিনীপুরের নিম্ন আদালতে আইনজীবীদের কাছে সাহায্য চাইতে গেলে তারা তাকে মুখের উপর জানিয়ে দেয় ১০০ টাকায় মামলা হয় না। বৃহস্পতিবার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসের মামলাটি উঠলে সমস্ত টা শোনার পর রীতিমত ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। এরপর তিনি বলেন, সত্যিই তো দেশে ১০০ টাকায় মামলা হয় না। লাখ টাকা দিলে তবেই মামলা হয়। এর পরই কেন নিম্ন আদালত তাঁর নির্দেশ পালন করেনি তা জানতে নিজেই নিজের মোবাইল ফোন থেকে পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রধান বিচারককে ফোন করেন। এজলাসে উপস্থিত হাইকোর্টের আইনজীবী সঞ্জয় সাহাকে বিচারপতি নির্দেশ দেন তিনি যাতে ওই নাবালকের হয়ে মামলাটি করেন এবং নিখরচায় তাঁকে সবরকম সাহায্য করেন।১৯ মে মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
প্রসঙ্গত, নাবালকের মা মৌসুমী দে হাইস্কুলের শিক্ষিকা ছিলেন। কিন্তু ২০১০ সালে নিজের স্বামীর হাতেই মারা যান তিনি বলে অভিযোগ। তখন নাবালকের বয়স ছিল মাত্র ১ বছর। নাবালকের বয়স তখন ১ বছর। কিন্তু বাবা সন্তানের দায়িত্ব না নেওয়ায় মামাবাড়িতে দাদুর কাছেই বড় হয় সে। তখন থেকে দাদুই ছিল নাবালকের আইনি অভিভাবক।অভিযোগ, মায়ের মৃত্যু হলেও তার কর্মকালীন কোনও সুবিধাই স্কুল শিক্ষা দফতর মিটিয়ে দেয়নি। নাবালকের বাবা যেহেতু ততদিনে অন্য বিয়ে করে ফেলেছে তাই মায়ের যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার কথা ওই নাবালকেরই। কিন্তু সুযোগ-সুবিধা না পাওয়ায় দাদুর মাধ্যমে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় ওই নাবালক। কিন্তু মামলা চলাকালীন দাদু শংকর দে-র মৃত্যু হয় ২০২১ সালের শেষের দিকে। আর তাতেই অথৈ জলে পড়ে ওই নাবালক। ইতিমধ্যে মামলাটি বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে এলে নাবালকের আইনজীবী সারওয়ার জাহানের কাছ থেকে সমস্ত বৃত্তান্ত শুনে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দেন পশ্চিম মেদিনীপুর নিম্ন আদালতে নাবালকের অভিভাবক হওয়ার জন্য আবেদন জানাবেন তার দিদা।এরপরই নাবালকের দিদা মেদিনীপুর জেলা আদালতে দ্বারস্থ হন।
Sign in
Welcome! Log into your account
Forgot your password? Get help
Password recovery
Recover your password
A password will be e-mailed to you.