ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’। মৌসম ভবনের পূর্বাভাস, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণিঝড় তৈরি হতে চলেছে। তাহলে কী বাংলার আকাশে অশনি সংকেত! আলিপুর আবহাওয়া দফতর ইতিমধ্যেই মঙ্গলবার থেকে মৎস্যজীবীদের উপকূল যাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা জারি করল।
আরও পড়ুন:বিয়ের মরশুমে সুখবর, ফের দাম কমল সোনা- রুপোর
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, দক্ষিণ আন্দামান সাগরে শক্তি বাড়াচ্ছে ঘুর্ণাবত। ৭ মে তা নিম্নচাপে পরিণত হবে। সেই নিম্নচাপ থেকেই জন্ম নেবে ঘুর্ণিঝড় ‘অশনি’! ৮ তারিখ সন্ধে থেকে সেই ঝড় এগোতে শুরু করবে উত্তর-পশ্চিম দিকে। যার গতিপথ হবে উত্তর পশ্চিমে অর্থাৎ অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা বা বাংলার উপকূলের দিকে পৌঁছে যাবে ১০ তারিখ। এই ঘূর্ণিঝড় বাংলায় কতটা প্রভাব ফেলবে বা আদৌ প্রভাব ফেলবে কি না, তা স্পষ্ট জানায়নি মৌসম ভবন। যদিও আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আগামী মঙ্গল, বুধ এবং বৃহস্পতিবার ওড়িশা উপকূল এবং দক্ষিণবঙ্গে ভারী বৃষ্টি হতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে।
‘অশনি’র প্রভাবে আগামী মঙ্গলবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত বাংলায় ভারী বৃষ্টি হতে পারে। বইতে পারে ঝোড়ো হাওয়াও। সমুদ্র তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের জন্য বিশেষ সতর্কতা জারি হয়েছে। আগামী মঙ্গলবার থেকে মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যাতায়াতের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে হাওয়া অফিস। ‘অশনি’ সতর্কতায় তৎপর নবান্ন। সুন্দরবনে আগাম সতর্কতা জারি হয়েছে। কাকদ্বীপেও মৎস্যজীবীদের উপকূলে যাওয়ার নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে।
ইতিমধ্যেই ওড়িশার ১৮টি জেলায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে। খুরদা রোড, কটক, গঞ্জাম, গজপতি, পুরী, জগৎ সিং পুর, কেন্দ্রাপাড়া, জজপুর, ভদ্রক, বালাসোর, নয়াগড়, ময়ূরভঞ্জ, কেওনঝর, ঢেঙ্কানল, মালকানগিরি, কোরাপুট, রায়গড় এবং কান্ধামালে সতর্কতা জারি হয়েছে। খোলা হবে কন্ট্রোলরুম। সমুদ্র তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজও শুরু হবে। ৬টি উপকূলবর্তী জেলায় স্যাটেলাইট ফোন ও ডিজিটাল মোবাইল রেডিও কমিউনিকেশন সিস্টেমের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
এদিকে রাজ্যে ‘অশনি’-র সম্ভাব্য দুর্যোগের পূর্বাভাসের প্রেক্ষিতে রাজ্য সরকারের তরফে চূড়ান্ত সতর্কতার নির্দেশ দিয়েছে। এই মর্মে আজ, শুক্রবার নবান্নে দক্ষিণবঙ্গের জেলাশাসকদের সঙ্গে সাম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবিলার প্রস্তুতি নিয়ে একটি ভার্চুয়াল বৈঠক করেন মুখ্যসচিব হরি কৃষ্ণ দ্বিবেদী। সেখানে দুর্বল বাঁধগুলিকে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় মেরামত করতে এবং উপকূলবর্তী জেলাগুলির কন্ট্রোলরুমকে সক্রিয় করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে প্রশাসনিক সূত্রের খবর। পাশাপাশি বিপর্যয় মোকাবিলা দল, এনডিআরুএফ-কেও প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে নিচু এলাকা থেকে মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে আসতে ফ্লাড সেন্টারগুলিকে প্রস্তুত রাখার কাজ শুরু হয়েছে।