ঈশ্বরকণা আবিষ্কারের ইতিহাসে নাম হাওড়ার শ্রমিকদের, মে দিবসে সম্বর্ধনা

0
1

সাধারণই কখনও কখনও নিজের কর্মদক্ষতায় হয়ে ওঠেন অসাধারণ। জেনিভার (Geneva) পরমাণু গবেষণাকেন্দ্র সার্নের ঈশ্বরকণা (God’s Particle) আবিষ্কারের অন্যতম কান্ডারিরা হলেন হাওড়ার লেদ কারখানার সাধারণ শ্রমিকবর্গ। যাঁদের আজ মে দিবসে সম্বর্ধনা দেওয়া হবে। সত্যি সত্যি সার্থক আজকের দিন।

ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন হাওড়ার লেদ কারখানার এই সাধারণ শ্রমিকরা। মাত্র তিনমাসের নিরলস প্রচেষ্টায় তাঁরা তৈরি করেছিলেন এমন একটি যন্ত্রাংশ যা কয়েকবছর আগে কাজে লেগেছিল সার্ণের  ঈশ্বরকণা আবিষ্কারে।  তাঁদের সম্মানিত করা হবে আজ । অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বিজ্ঞানী বিকাশ সিংহ।

একটু পিছন ফিরে তাকানো যাক। ২০১২ সালে সন্ধান মেলে গডস পার্টিকল বা ঈশ্বর কণার। কিন্তু সেদিন কেউ একথা জানতো না যে  সার্ন গবেষণাগারে মাটির ১০০ মিটার গভীরে লার্জ হ্যাড্রন কোলাইডার যন্ত্রে ঈশ্বর কণার অস্তিত্ব নিয়ে  গবেষণামূলক কর্মে তাবড় বিজ্ঞানীদের পাশাপাশি একটা বড় ভূমিকা রয়েছে ভারতবর্ষের পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া জেলার লেদ কারখানার কয়েকজন শ্রমিকের।

গবেষণায় ২৭ কিলোমিটার দীর্ঘ সুড়ঙ্গে যে যন্ত্রটি ব্যবহার করা হয়েছিল, তাঁরই একটি অংশ তৈরি করেছিলেন এই হাওড়া লেদ কারখানার শ্রমিক কালীপদ প্রামাণিক ও তাঁর সঙ্গীরা। যে যন্ত্রাংশটি তাঁরা তৈরি করেছিলেন তাঁর প্লেটের কাজ এতটাই নিখুঁত হয় যে কোনও আলো প্রবেশ করতে পারতো না। চক্রাকার গর্তযুক্ত আটটি প্লেট তৈরি করতে তাঁদের সময় লেগেছিল তিন মাস।

সার্নের ওই গবেষণায় যুক্ত ছিলেন এই দেশের সাহা ইন্সটিটিউট অফ নিউক্লিয়ার ফিজিক্স। বিশিষ্ট বিজ্ঞানী বিকাশ সিংহের সহ দেশের বিজ্ঞানীদল ওই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত হন।

সার্নের বিজ্ঞানীরা প্রথমে এতটা আত্মবিশ্বাসী ছিলেন না  হাওড়ার ওই কারখানা এবং তার শ্রমিকদের নিয়ে। যেখানে ওই যন্ত্রাংশ তৈরি হচ্ছিল সেই জায়গার ইনসপেকশনে এসে  আঁতকে উঠেছিলেন তাঁরা। কিন্তু কালীপদবাবু বিশ্বাস হারান নি একটা সুযোগ চেয়েছিলেন তিনি। এরপরেই হাওড়ার ওই ছোট কারখানার শ্রমিকরা সাধারণ যন্ত্র দিয়ে মাত্র তিন মাস সময়ে ১০০% নিখুঁত যন্ত্রাংশ তৈরি করেন। যা সার্ণের গবেষণাগারে গুরুত্বপূর্ণ কাজে লাগে।

সমবায়মন্ত্রী অরূপ রায় বলেন, “এই ধরনের শ্রমিকরা জীবন্ত বিশ্বকর্মা। এঁদের জন্য হাওড়াকে বলা হত শেফিল্ড অফ ইস্ট। এদের অবদানের জন্য মে দিবস উপলক্ষে তাদেরকে সম্বর্ধনা দেওয়া হবে।” এক সময় ‘ভারতের শেফিল্ড’ বলে পরিচিত ছিল হাওড়া শিল্পাঞ্চল।

আরও পড়ুন:বিদ্যুৎ সঙ্কট : দ্রুত কয়লা পৌঁছে দিতে বাড়ানো হচ্ছে মাল গাড়ির গতি- পরিবহন ক্ষমতা