দুই কেন্দ্রেই ফুটল জোড়া ফুল, আসানসোলে রেকর্ড গড়ল তৃণমূল

0
1

রাজ্যের দুই উপনির্বাচনেই ফুটল ঘাসফুল। আসানসোল (Asansole) লোকসভা কেন্দ্র বিজেপির (BJP) থেকে ছিনিয়ে নিল তৃণমূল (TMC)। 3 লক্ষের বেশি ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিনহা (Shatrughna Sinha)। আর বালিগঞ্জে (Ballyganj) জয়ী তৃণমূল প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয় (Babul Supriyo)। মানুষের রায়ের জন্য ইতিমধ্যেই টুইটে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Bandopadhyay) এবং সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Bandyopadhyay)। শনিবার, উপনির্বাচনের ফলে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য আসানসোল কেন্দ্রের জয়। জন্ম লগ্ন থেকে সেখানে একবারও জেতেনি তৃণমূল। দলীয় প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিনহার হয়ে প্রচারে গিয়ে একথা জানিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই। তিনি বলেছিলেন, বাম এবং বিজেপির উপর ভরসা করে আসানসোলের কোনও উন্নতি হয়নি। “এবার তৃণমূলের উপর আস্থা রাখুন”। আসানসোলবাসী আস্থা রেখেছেন। ভোটের ঝুলি উপুড় করে দিয়েছেন তৃণমূল প্রার্থীকে।

এবার আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের ফল অনেক দিক থেকেই রেকর্ড করল। রেকর্ড ভোটে জয়ী হলেন শত্রুঘ্ন সিনহা। এই প্রথম সেখানে জিতল তৃণমূল এবং একজন চিত্রতারকা জিতলেন আসানসোল কেন্দ্র থেকে। এ থেকেই স্পষ্ট যে, কেন্দ্রের জনবিরোধী নীতিকে প্রত্যাখ্যান করেছেন ভোটাররা। ফলে যে আসানসোলকে নিজেদের শক্ত ঘাঁটি বলে মনে করত গেরুয়া শিবির, সেখানেই মুখ থুবড়ে পড়েছেন তাদের প্রার্থী ‘ঘরের মেয়ে’ অগ্নিমিত্রা পাল। শুধু পরাজিত হওয়াই নয়, তিনি যে কেন্দ্রের বিধায়ক সেই আসানসোল দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রএ হেরেছেন অগ্নিমিত্রা। একসময় আসানসোল দখলে ছিল বামেদের। তারাও এবার কোনও ছাপ ফেলতে পারেনি। আর চতুর্থ স্থানে নেমে গিয়েছে কংগ্রেস।

বালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়র বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম কুৎসা ছড়ানোর চেষ্টা করেছিল বাম-বিজেপি। তবে, তাদের কোনও চেষ্টাই সফল হয়নি। জিতে গিয়েছেন বাবুল সুপ্রিয়। গণনার প্রথমদিকে বিজেপি প্রার্থী ছিলেন চতুর্থ স্থানে। পরে তৃতীয় স্থানে উঠলেও, এই কেন্দ্রে বিজেপি-কংগ্রেস জামানত জব্দ হয়েছে। তবে লড়াই করে কিছুটা হলেও দলের মুখ রক্ষা করেছেন বাম প্রার্থী। এই জয় কুৎসার রাজনীতির বিরুদ্ধে মানুষের রায় বলে মন্তব্য করেছেন তৃণমূল প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়। আর শত্রুঘ্ন সিনহার মতে, এই জয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয়। তৃণমূল সুপ্রিমো যে তাঁর ওপর আস্থা রেখেছেন, তার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন শত্রুঘ্ন।

আরও পড়ুন:Deepak Chahar: আইপিএল থেকে ছিটকে যেতেই সমর্থকদের বিশেষ বার্তা দীপকের

বামেদের ভোট শতাংশের হার কিছুটা বাড়লেও তলানিতে কংগ্রেসের অস্তিত্ব। বালিগঞ্জের পাশাপাশি আসানসোলেও জামানার জব্দ হয়েছে কংগ্রেস।

রাজ্যের সাম্প্রতিক বেশকিছু ঘটনাকে হাতিয়ার করে উপনির্বাচনের আগে প্রচার চালিয়ে ছিল বিরোধীরা। তবে, এক্ষেত্রে ময়দানে বিজেপি-,সিপিআইএমকে দেখা গেলেও প্রথম থেকেই যেন হেরে বসেছিল কংগ্রেস। প্রচারে তাদের অস্তিত্ব সেভাবে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে বিরোধীদের কুৎসা যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের প্রতি বাংলার মানুষের আস্থাকে টলাতে পারেনি তা এই ফল দেখেই বোঝা যাচ্ছে। যে আসানসোলে কখনোই জিততে পারেনি তৃণমূল, সেখানেও এবার ফুটেছে ঘাসফুল। পাণ্ডবেশ্বর, রানিগঞ্জ শহর বিভিন্ন অঞ্চলে বিপুল ভোট পেয়েছেন শত্রুঘ্ন সিনহা।

এই জয় নিয়ে বিরোধীরা যাই বলুক না কেন, এটা যে আগামী লোকসভা নির্বাচনের বাংলার ট্রেন্ডের ইঙ্গিত দেয় তা মনে করছে রাজনৈতিক মহল। গরম থেকে শুরু করে উপনির্বাচন- হেরে গিয়ে বিভিন্ন অজুহাত তুলে ধরছে বাম-বিজেপি। কিন্তু এর আগেও রাজ্যে মার্চ, এপ্রিল, মে-তে ভোট গ্রহণ হয়েছে। দু-একটি জায়গায় তুলনামূলকভাবে কম ভোট পড়লেও, ভোটের ব্যবধান বলে দিচ্ছে বিজেপিকে এককথায় প্রত্যাখ্যান করছে বাংলা। আস্থা রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নমূলক কাজের উপর।