মুঠো আলগা করে এবার মুঠো ফোনকে বিদায় জানাতে হবে শিক্ষকদের(Teachers)। অন্তত শিক্ষাঙ্গনে যতক্ষণ শিক্ষাদান করবেন তাঁরা,ততক্ষণ মোবাইল (Mobile)ব্যবহার করা যাবে না। শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং শিক্ষাকর্মীদের উদ্দেশ্যে এই মর্মেই নির্দেশিকা জারি করেছে পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ (West Bengal Board of secondary education)।
যত দিন যাচ্ছে ততই আমরা মোবাইল নির্ভর হয়ে পড়ছি। যেন ওই যন্ত্রটি ছাড়া জীবনটাই অচল। কিন্তু অতিরিক্ত মাত্রায় মোবাইল ব্যবহার কিন্তু জীবনে সমস্যা ডেকে আনতে পারে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার প্রভাব বেশ পরিলক্ষিত হচ্ছে। অফিস আদালতে তো আছেই, ইদানিং স্কুলেও মোবাইলের অত্যাধিক ব্যবহার প্রত্যক্ষ করেছে রাজ্য শিক্ষা দফতর। বিশেষ করে শ্রেণীকক্ষে ক্লাস চলাকালীন মোবাইলে মনঃসংযোগ করছেন শিক্ষক- ছাত্র উভয়েই। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিক্ষাব্যবস্থা।
উল্লেখ্য করোনা (Corona)সংক্রমণের সময় লকডাউনের(Lockdown) কারণে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল জনজীবন। সব থেকে বেশি প্রভাব পড়েছিল রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থাতেও। পরিস্থিতির একটু উন্নতি হতেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি অনলাইন ক্লাসের (Online Class) মাধ্যমে পঠনপাঠন শুরু করেছিল। ঠিক সেই সময়ে খুব কার্যকরী হয়েছিল ফোন। শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে সংযোগ গড়ে তুলেছিল স্মার্ট ফোন।কিন্তু এর প্রভাব ক্রমশ মারাত্মক হয়ে উঠছে। তাই রাজ্য সরকারের নয়া নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে হেডফোন, ব্লুটুথ বা কোনও ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস কানে গুঁজে ক্লাসে প্রবেশ করতে পারবেন না শিক্ষক শিক্ষিকারা। শ্রেণিকক্ষ-সহ ল্যাব এবং লাইব্রেরীতেও শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং শিক্ষাকর্মীদের মোবাইল ব্যবহারে কঠোর নিষেধাজ্ঞা সরকারের।
রাজ্যের উচ্চপ্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক স্কুলগুলিকে এ বিষয়ে স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি রাজ্যের করোনা পরবর্তী সময়ের কথা মাথায় রেখে ২২ দফা আচরণবিধি তৈরি করেছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। প্রতিদিন বাড়তে থাকা অভিযোগে রাশ টানতে এই পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে। স্কুলশিক্ষা দপ্তরে মাঝেমধ্যেই শিক্ষক শিক্ষিকাদেরদের মোবাইল আসক্তি নিয়ে অভিযোগ জমা পড়ে। ক্লাস চলাকালীন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একটি অংশ সোশ্যাল মিডিয়ায় সময় কাটান বলে অভিযোগ। এছাড়া ইনস্টাগ্রাম, টুইটার, ফেসবুক বা ইউটিউবে স্কুলের নানা ঘটনা ভাইরাল হয়,নানা রকমের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট হওয়ার পর তা থেকে বিতর্ক তৈরি হতেও দেখা গেছে সাম্প্রতিক অতীতে । তাই এবার কঠোর হচ্ছে সরকার। স্কুলশিক্ষা দপ্তর প্রতিষ্ঠানের সুনাম অক্ষুণ্ণ রাখতে, পাশাপাশি পড়ানোর সময় শিক্ষক শিক্ষিকারা যাতে আরও মনোযোগী হন, তাও নিশ্চিত করতে চায় রাজ্য। সরকারের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে ‘অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসস।’
হাঁসখালির ঘটনাকে ‘রাজনৈতিক ইস্যু’ করতে মরিয়া বিজেপি,তৈরি হল ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম
অন্যদিকে স্কুলের সীমানার ভিতরে ছাত্রছাত্রীরা কোনও রকম মোবাইল ফোন নিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন না। শিক্ষক শিক্ষিকাদের ক্ষেত্রে ক্লাসরুম ও ল্যাবরেটরির ভেতরে মোবাইল ফোনের ব্যবহার বন্ধ করতে বলা হয়েছে। যদি কোনও ক্ষেত্রে ক্লাস বা ল্যাবরেটরির মধ্যে মোবাইল ফোনের ব্যবহার করতে হয়, তবে তার লিখিত অনুমতি নিতে হবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তথা প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে।