কয়লাকাণ্ডে(Coal Case) নিয়ে কেন্দ্রীয় এজেন্সি তদন্ত করছে। আর সেই তদন্তের সূত্র ধরে বেশ কিছু সংবাদমাধ্যমের খবর পরিবেশন নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। সেই সংবাদমাধ্যমগুলি ‘সূত্র মারফত জানা গিয়েছে’ বলে যে খবর পরিবেশন করছে, তাতে অভিসন্ধি পরিস্কার। টার্গেট করে রাজনৈতিক নেতৃত্বকে কলুষিত করাই যে মূল লক্ষ্য, তা ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে।
কয়লাকাণ্ডকে সামনে রেখে সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়(Abhisekh Banerjee) ও তাঁর স্ত্রীকে ইডি(ED) জিজ্ঞাসাবাদ করতে ডেকে পাঠিয়েছে। অভিষেক বেশ কয়েকবার গিয়েছেন এবং যেতে না পারলে আইনজীবী মারফত তদন্তকারী সংস্থাকে জানিয়েছেন এবং তথ্যাদি পাঠিয়েছেন। এখন সেই ইডির সূত্র ধরেই কয়েকটি সংবাদমাধ্যম ন্যক্কারজনক খেলায় নেমেছে। ইডি সূত্র উদ্ধৃত করে তৃণমূলের সাংসদকে ঘুরিয়ে অভিযুক্ত করার খেলা চলছে। অবলীলায় মিডিয়া ট্রায়াল। সঙ্গে আজগুবি সূত্রের খবর। কোন সূত্র থেকে তারা এসব জানতে পারছেন? যদি তাদের কাছে তথ্য থাকে তাহলে তারা পেশ করুন। ভয়টা কিসের? রোজ সূত্র লিখে লিখে প্রেসের কালি আর সংবাদপত্রের জায়গা নষ্ট করার কী দরকার? আসলটাই সামনে আনুন না! পেশ করুন না! আর যদি সে তথ্য না থাকে, পেশ করার হিম্মত না থাকে, থাকলে কোন অধিকারে রাজনৈতিক নেতৃত্বকে কলঙ্কিত করার খেলায় নেমেছেন? কাদের স্বার্থ চরিতার্থ করার চেষ্টা করছেন সেটা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। কতদিন আর ভাবের ঘরে চুরি করবেন?
আরও পড়ুন:অনুব্রত মণ্ডল ইস্যুতে CBI যোগাযোগ করলে তদন্তে সাহায্যের আশ্বাস SSKM কর্তৃপক্ষের
এজেন্সিগুলো প্রথমে এদের টার্গেট ঠিক করে নিচ্ছে। লক্ষ্য তাকে কলুষিত করা। এরপর তাকে কেন্দ্র করে শুরু হয় খবর খাওয়ানো। ধরা যাক কাউকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। কী প্রশ্ন করা হচ্ছে, কতবার জল খেলেন, চায়ের সঙ্গে কোন বিস্কুট দিলেন, সেই খবর পর্যন্ত সাংবাদিকরা পেয়ে যাচ্ছেন! কে বা কারা দিচ্ছেন? কী করে জানা যাচ্ছে? এসব ছাপার অক্ষরে বেরচ্ছে, বা মিডিয়ায় গ্রাফিক্স করে দেখানো হচ্ছে। কী আশ্চর্য একটি খবরেরও ‘কন্ট্রাডিকশন’ দেয় না এজেন্সি! বোঝা যায়, সবটাই বোঝা যায়।
ইডি সূত্র বলে তারা যে সমস্ত তথ্য দিচ্ছেন, তাহলে ধরেই নিতে হয় এই সমস্ত তথ্য সরবরাহ করছেন তদন্তকারী এজেন্সির কর্তারাই। এই কর্তারা দিনের পর দিন কিছু সংবাদমাধ্যমকে ‘ম্যানেজ’করে নিরন্তর নিজেদের মত করে খবর খাইয়ে চলেছেন। যত না এখানে তদন্তের উদ্দেশ্য সাধন হচ্ছে তার চেয়ে বেশি লক্ষ্য কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের পারপাস সার্ভ করা। সংবাদমাধ্যমগুলি এজেন্সির কর্তাদের বয়ান নিয়ে রাজনৈতিক নেতৃত্বকে কালিমালিপ্ত করার খেলা চালাচ্ছে। অথচ যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাঁদের বক্তব্য না নিয়ে নিরন্তর কয়েকজনকে ‘অপরাধী’ প্রমাণে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে। মিডিয়া ট্রায়াল চলছে। সংবাদমাধ্যমগুলির এই খেলা কতদিন চলবে? কতদিন এজেন্সির মুখপত্রের ভূমিকা পালন করে একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের উদ্দেশ্য সাধন করবে? নির্লজ্জ চাটুকারিতা এবং একপেশে সংবাদ পরিবেশন বন্ধ হোক। কেউ কেউ বলছেন, যারা লিখছে, তাদের অন্দরের কথাও এবার তাহলে ‘সুত্র মারফত’ খবরে আসুক।