মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণায় এবার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি দার্জিলিংয়ে ক্যাফে হাউস

0
1

সোমনাথ বিশ্বাস (দার্জিলিং): হিমালয়ের কোলে অসাধারণ সৌন্দর্যের মেঘের দেশ পাহাড়কন্যা দার্জিলিং। প্রকৃতির লীলাভূমিও বটে। এ যেন পৃথিবীর বুকে এক টুকরো স্বর্গ। মানুষ আর প্রকৃতি যেখানে মিলেমিশে একাকার। পাহাড়ের বুকে জনপদ। নস্টালজিক প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ, প্রাচুর্যেভরা, পশু-পাখি, অপরূপ পাহাড়ি অঞ্চল, চা বাগান, পাহাড়ের গায়ে ছোট ছোট ঝরনা। মেঘের কণা ভেদ করে আঁকাবাঁকা পথের ধারে ছোট্ট এক পাহাড়ি শহর। প্রকৃত অর্থেই বাংলার মুকুটে দার্জিলিং ‘পাহাড়ের রাণী’ বলেই বিশ্বের দরবারে খ্যাতি।

হিমালয়ের পাদদেশে পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুর দার্জিলিং মেঘের চাদরে আবৃত স্বপ্নময় এক শহর। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, পাহাড়-টিলা, চা টাইগার হিল থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘার রূপ দেখার এক রাজকীয় নেশা। টাইগার হিল থেকেই স্পষ্ট দেখা মেলে নয়নাভিরাম কাঞ্চনজঙ্ঘার। আলোকজ্জ্বল রোদে দেখা যায় মাউন্ট এভারেস্টও। রক গার্ডেন, চিড়িয়াখানা, বাতাসিয়া লুপ, মহাকাল মন্দির, টয় ট্রেন, ঘুম রেল স্টেশন আর প্রকৃতির ছোঁয়া পেতে বিভিন্ন দেশ থেকে হাজার হাজার পর্যটক ভিড় জমান এই শৈল শহরে। যেখানে মেঘাচ্ছন্ন পরিবেশে মেঘমালাকে ছোঁয়ার হাতছানি।

আরও পড়ুন:মাথাভাঙ্গায় পালিয়ে যাওয়া দ্বিতীয় বাইসনটিকেও উদ্ধার করল বনদফতর

এবার সেই দার্জিলিংয়ে গড়ে উঠতে চলেছে ক্যাফে হাউস। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি দার্জিলিংয়ে কলকাতার ঐতিহ্যবাহী কফি হাউসের আদলে তৈরি হবে ক্যাফে হাউস। তাও আবার বাঙালি উদ্যোগপতি টেকনো ইন্ডিয়া গ্রূপের কর্ণধার সত্যম রায়চৌধুরীর তত্ত্বাবধানে। দার্জিলিং সফরে এসে এই ক্যাফে হাউসের নামকরণও করলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী।

আসলে পাহাড় তাঁর হৃদয়ে। আর সেই হৃদয়ের টানেই বারেবারে ছুটে আসেন পাহাড়ে। এখানকার মানুষের সঙ্গে সুখ-দুঃখ ভাগ করে নেন। শান্তির বাতাবরণ তৈরি করে ডাক দেন উন্নয়নের। এবারও তার ব্যতিক্রম হল না। ঠাসা সরকারি কর্মসূচি পালনের পাশাপাশি কফি হাউজ তৈরির কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। একইসঙ্গে জানিয়ে দিলেন, উত্তরবঙ্গে পর্যটনের বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেবে রাজ্য সরকার। সেই পরিকল্পনা সম্পূর্ণ করা হবে। আর তারই অঙ্গ হিসেবে টেকনো ইন্ডিয়া গ্রূপের কর্ণধার সত্যম রায়চৌধুরীর হাত ধরে পাহাড় সুন্দরীর কোলে বাস্তবায়িত হবে ক্যাফে হাউস।

মুখ্যমন্ত্রীর এমন ভাবনার পরই প্রবল উৎসাহের সঙ্গে ক্যাফে হাইস তৈরিতে নেমে পড়লেন টেকনো ইন্ডিয়া গ্রূপের কর্ণধার। জানালেন, কলকাতার কফি হাউসের ধাঁচেই ক্যাফে হাউস হবে দার্জিলিংয়ে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় এই ক্যাফে হাউস গড়ে উঠবে দার্জিলিংয়ের ম্যাল থেকে কয়েক মিটার দূরে। যে জায়গায় এই ক্যাফে হাউস হবে সেটার বিশেষত্ব বা মূল আকর্ষণ হল, এই জায়গা থেকে পুরো কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যায়। এবং গরম চা ও কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে লেবঙয়ের টি-গার্ডেনের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন স্থানীয় মানুষ পর্যটকরা।

সত্যম রায়চৌধুরীর কথায়, “দার্জিলিংয়ের মত মনোরম পরিবেশে চা ও কফি খেতে খেতে হিমালয় এবং কাঞ্চনজঙ্ঘা রেঞ্জ পুরোটা দেখতে পাবেন আগত পর্যটকরা। অর্থাৎ, এবার কফির সঙ্গে কাঞ্চনজঙ্ঘা। যে পরিবেশে এই ক্যাফে গড়ে উঠতে চলেছে, তার এক নস্টালজিক বিশেষত্ব রয়েছে। একদিকে কাঞ্চনজঙ্ঘা-হিমালয় পাহাডড়ের অপরূপ দৃশ্য। অন্যদিকে, ভ্যালি। দার্জিলিংয়ের সবচেয়ে সুন্দর জায়গাতেই হচ্ছে এই ক্যাফে হাউস। যে পরিবেশে এটা তৈরি হবে সেখানে ফি বছর প্রচুর মানুষ এসে ভিড় জমান প্রাকৃতিক সৌন্দর্য চেটেপুঁটে উপভোগ করার জন্য। এবার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সঙ্গে বাড়তি পাওনা মুখ্যমন্ত্রীর ভাবনার এই ক্যাফে হাউস।”

সত্যম রায়চৌধুরী আরও জানালেন, জুন মাসের মধ্যেই এই ক্যাফে হাউস গড়ে উঠবে পাহাড়ের কোলে। যা সারাদিন খোলা থাকবে। সন্ধ্যার পর মিউজিক বাজবে। থাকবে সঙ্গীতের আনন্দ। সবচেয়ে খুশির খবর, থিম সং বানাবেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। আধুনিকতা ও ঐতিহ্যর মেলবন্ধনে নস্টালজিক ক্যাফে হাউস ভ্রমণপিপাসুদের অন্যতম ডেস্টিনেশন হতে চলেছে।