বেশ কয়েক মাস উত্তরাখণ্ডের বিধানসভা ভোটে দলের হয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনের পর সম্প্রতি রাজ্যে ফিরেছেন। আর তাঁর কয়েক মাসের এই “অনুপস্থিতি” বঙ্গ বিজেপির অন্দরের সমীকরণটা অনেকটাই বদলে দিয়েছে। দলের অ্যাসাইনমেন্টেই উত্তরাখণ্ডের দিনের পর দিন পড়েছিলেন লকেট চট্টোপাধ্যায়। এবং সেখানে ভোটে ভালো ফলও করেছে বিজেপি। অথচ বঙ্গে ফিরতেই গেরুয়া শিবিরে ব্রাত্য তিনি। দিল্লির হাইকমান্ডের নির্দেশে উত্তরাখণ্ডে ভালো পারফর্মেন্স করলেও হুগলির সাংসদ নিজের রাজ্য নেতৃত্বের কাছে কোণঠাসা। অন্যদিকে, লকেটের অনুপস্থিতির সুযোগে রাজ্য নেতাদের হাত ধরে ক্রমশ উত্থান হয়েছে অগ্নিমিত্রা পালের। মাত্র কয়েক বছর সক্রিয় রাজনীতিতে এসেই উল্কার গতিতে উত্থান অগ্নিমিত্রার। প্রথমে লকেটের পরিবর্তে মহিলা মোর্চা সভানেত্রী, তারপর বিধায়ক, এবং বর্তমানে লকেটের সঙ্গে একই আসনে বসে রাজ্য কমিটির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক।
আগামী ১২ এপ্রিল আসানসোল লোকসভা এবং বালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন। যেখানে দলের অনেক যোগ্য প্রার্থীদের সরিয়ে আসানসোলে ফের প্রার্থী অগ্নিমিত্রা। আবার বালিগঞ্জেও কেয়া ঘোষ প্রার্থী হওয়ার মধ্যেও সুস্পষ্ট অগ্নিমিত্রার প্রভাব। আবার দুই উপনির্বাচনের দলীয় প্রচারে তারকা প্রচারকের তালিকায় নাম নেই লকেট চট্টোপাধ্যায়ের। এবং সেটাও যে অগ্নিমিত্রার অঙ্গুলিহেলনে, তা কারও অজানা নয়।
খুব স্বাভাবিকভাবেই গেরুয়া শিবিরের অন্দরে ক্রমশ কোণঠাসা হতে থাকা হুগলির বিজেপি সাংসদ একদিকে যেমন অভিমানী, অন্যদিকে বিস্ফোরক। এই ইস্যুতে সংবাদ মাধ্যমের কাছে লকেটের স্পষ্ট বক্তব্য, “বিজেপির হয়তো আর আমাকে প্রয়োজন নেই। আমাকে কেন তারকা প্রচারকের তালিকায় রাখা হয়নি, তা দলই ভালো বলতে পারবে। মনে হয়, আমাকে ওদের যোগ্য বলে মনে হয়নি।”
রাজ্য বিজেপি সূত্রে খবর, তারকা প্রচারকের তালিকা পার্টির সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্তর ভিত্তিতে হয়। আসানসোল ও বালিগঞ্জের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। ফলে খুব স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, বঙ্গ বিজেপির ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী কি তাহলে লকেটকে ধীরে ধীরে সেটা ফেলতে চাইছে? তুলনায় অপেক্ষাকৃত কমদিন রাজনীতিতে আসা অগ্নিমিত্রা পালকে দলের রাজ্য নেতারা যেভাবে তোল্লাই দিচ্ছেন, তাতে স্পষ্ট লকেটের বিকল্প হিসেবে ফ্যাশন ডিজাইনারকেই তাঁরা তুলে ধরতে চাইছেন।
আরও পড়ুন:মালদহের কালিয়াচকে বিস্ফোরণে নিহত তিন বছরের শিশু