সর্বকালীন রেকর্ড গড়ল আন্টার্কটিকা, পুড়ছে দক্ষিণ মেরু

0
1

গরমের সর্বকালীন রেকর্ড গড়ল আন্টার্কটিকা (Antarctica)। মহাদেশের যে এলাকায় মার্চ মাসে তাপমাত্রা থাকে শূন্যাঙ্কের নীচে। সেখানেই এবছর পারদ ছুঁচ্ছে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘর। যা স্বাভাবিকের চেয়ে ৩০ ডিগ্রি বেশি। পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে রীতিমতো শঙ্কায় পড়েছেন আবহবিদ ও মেরু-বিশেষজ্ঞেরা। তাঁদের পর্যবেক্ষণ বলে, গরমের সময় সাধারণত মহাদেশটির দক্ষিণাঞ্চলের তাপমাত্রা হ্রাস পেয়ে থাকে। বছরের এই সময়ে যেখানে তাপমাত্রা থাকার কথা জিরো ডিগ্রির অনেক নীচে, সেখানে চলতি মাসে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত। বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন তাপপ্রবাহ আগে প্রত্যক্ষ করেনি দক্ষিণ মেরু। আন্টার্কটিকার পূর্বাঞ্চলে চলতি সপ্তাহের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি লক্ষ্য করা গিয়েছে। স্বভাবতই, তাপমাত্রার এই অস্বাভাবিক বৃদ্ধির জেরে এবার গ্লেসিয়ারও গলছে দ্রুত। রেকর্ড হারে বিশাল সব হিমশৈল ধসে পড়ছে সমুদ্রে। ফলে বাড়ছে জলস্তর। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল স্নো অ্যান্ড আইস ডেটা সেন্টার জানিয়েছে, ১৯৭৯ সালের পর এবারই প্রথম প্রায় ২০ লক্ষ বর্গ কিলোমিটার বরফ গলে মিশেছে সমুদ্রে। ঘটনাটি ঘটেছে ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে।

আরও পড়ুন-ইউক্রেন ইস্যুতে ভারতের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ আমেরিকা, তীব্র প্রতিক্রিয়া বাইডেনের

ফরাসি আবহাওয়াবিদ এতিয়েন কাপিকিয়ান জানিয়েছেন, শুক্রবার আন্টার্কটিকার ৯ হাজার ৮০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত কনকর্ডিয়া গবেষণা কেন্দ্র, যা পরিচিত ডোম-সি নামে, মাইনাস ১২.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা নথিভুক্ত করেছে। যা স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় ৪০ ডিগ্রি বেশি। আরও উঁচুতে অবস্থিত ভোস্তক পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের তাপমাত্রা ছিল মাইনাস ১৭.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মেরু-বিশেষজ্ঞ ম্যাক্সিমিলিয়ানো হেরেরার মতে, এই তাপমান প্রায় ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। সর্বকালের রেকর্ড। উপকূলবর্তী এলাকার টেরা নোভা কেন্দ্রে তাপমাত্রা শুক্রবার ছিল ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর পূর্ব আন্টার্কটিকার (Antarctica) আবহাওয়া গম্বুজ সি-টুতে তাপমাত্রা নোট করা হয়েছে মাইনাস ১০ ডিগ্রি। এখানে স্বাভাবিক তাপমাত্রা থাকার কথা মাইনাস ৪৩ ডিগ্রি। অথচ মেরুপ্রদেশে এমন হওয়ার কথাই না। বিশ্ব উষ্ণায়নের জেরে গোটা বিশ্বেই বদলাচ্ছে আবহাওয়ার মেজাজ, চরিত্র। বাড়ছে সমুদ্রের জলস্তর। জলের তলায় ডুবে যাচ্ছে দ্বীপ। কলকাতা, ঢাকা, মুম্বই, জাকার্তার মতো সমুদ্র নিকটবর্তী শহরগুলির আর কয়েক দশকের মধ্যেই সলিলসমাধি ঘটবে, এমন সতর্কবার্তা দিয়েই রেখেছেন আবহবিদেরা। প্রশ্ন উঠছে, কুমেরুর কুপ্রভাবে সেই সংকট আরও ত্বরান্বিত হল!