কর্ণাটকে মন্দির মেলায় মুসলিম দোকানদারদের নিষিদ্ধ করা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন

0
3

আবার শিরোনামে হিজাব বিতর্ক, এবার কি হিজাব প্রভাব ফেলল মেলার দোকানিদের পসরায়? কর্ণাটকে মন্দির(Karnataka Temple) মেলায় এবার নিষিদ্ধ করা হল মুসলিম(Muslim) দোকানদারদের। বিজেপি শাসিত কর্নাটকে হিজাব(Hijab Issue) নিয়ে দ্বন্দ্বের পটভূমিতে, ধর্মীয় বিভেদ আরও গভীর হয়েছে। বিশেষ করে উপকূলীয় কর্ণাটকে(Karnataka), স্থানীয় বার্ষিক মেলায় মুসলিম দোকানদারদের নিষিদ্ধ করার খবর পাওয়া যাচ্ছে। এই মেলার আয়োজক কমিটিগুলি মুসলমানদের মালিকানাধীন দোকানগুলি বাদ দেওয়ার জন্য দক্ষিণপন্থী হিন্দু সংগঠনগুলির চাপের কাছে নতি স্বীকার করেছে বলে জানা গেছে।

উল্লেখ্য, কর্ণাটক হাইকোর্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাবের নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখার পর, অনেক মুসলিম দোকানদার প্রতিবাদের চিহ্ন হিসাবে দোকান বন্ধ করে দিয়েছিল।রাজ্যের উপকূলীয় অঞ্চলে মন্দিরগুলির বার্ষিক উৎসব সাধারণত এপ্রিল-মে মাসে অনুষ্ঠিত হয়। এই সময় ব্যবসা করে কিছুটা হলেও লাভের মুখ দেখেন দোকানিরা। সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা থাকলেও এই ধরণের উৎসব কোনওদিনই কোনও বড় সমস্যা তৈরি করে নি বলেই খবর। কিন্তু এই হিজাবের বিষয়ে হাইকোর্টের রায়কে কেন্দ্র করে মুসলমানদের ডাকা বনধের পর, এই অঞ্চলের অনেক মন্দির তার উৎসবে মুসলমানদের প্রবেশে বাধা দিচ্ছে । ২০ এপ্রিল নির্ধারিত মহালিঙ্গেশ্বর মন্দিরের বার্ষিক উৎসবের আয়োজকরা নিলামে মুসলমানদের অংশগ্রহণ করতে বাধা দেওয়া হয়েছে বলেই খবর। আমন্ত্রণপত্রে, আয়োজকরা স্পষ্ট করেছেন যে শুধুমাত্র হিন্দুরাই ৩১ মার্চের নিলামে অংশগ্রহণের যোগ্য।

এর আগে উদুপি জেলার কাউপের হোসা মারিগুড়ি মন্দির তাঁদের বার্ষিক মেলার জন্য ১৮ মার্চ অনুষ্ঠিত নিলামে, মুসলমানদের স্টল বরাদ্দ করতে অস্বীকার করেছিল। মন্দির প্রশাসন কমিটির সভাপতি রমেশ হেগড়ে জানিয়েছেন, যে তারা একটি প্রস্তাব পাস করেছে যাতে শুধুমাত্র হিন্দুদের দোকানের নিলামে অংশ নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। হিন্দু জাগরানা বেদিকের ম্যাঙ্গালুরু বিভাগের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কুক্কেহাল্লি বলেছেন, হিজাবের বিষয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে মুসলিমরা তাদের দোকান বন্ধ করার পরে স্থানীয় মন্দিরের উপাসকরা ক্ষুব্ধ হয়েছিল। দক্ষিণ কন্নড় জেলায়, বাপ্পানাডুই শ্রী দুর্গাপামেশ্বরী মন্দিরের বার্ষিক উৎসবের একটি হোর্ডিংয়ে বলা হয়েছে, যে লোকেরা আইন বা জমিকে সম্মান করেন না ,ঐক্যের বিরুদ্ধে কথা বলেন, তাঁদের ব্যবসা করার অনুমতি দেওয়া হবে না।

ম্যাঙ্গালুরু শহরের পুলিশ কমিশনার এন শশী কুমার বলেছেন, এই ফ্লেক্সগুলি কারা বসিয়েছে তা খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। যদি পৌর সংস্থা অভিযোগ দায়ের করতে প্রস্তুত থাকে, সেক্ষেত্রে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উডুপি জেলা স্ট্রিট ভেন্ডার (রাস্তার বিক্রেতা) ও ব্যবসায়ী সমিতির সচিব মোহাম্মদ আরিফ বলেছেন, এমন পরিস্থিতি আগে কখনো ছিল না। প্রায় ৭০০ নিবন্ধিত সদস্য রয়েছে যার মধ্যে ৪৫০ জন মুসলিম। কোভিড-১৯ এর কারণে গত দুই বছর কোনো ব্যবসা ছিল না। এখন যখন আবার উপার্জন শুরু হয়েছে, তখন মন্দির কমিটিগুলি আমাদেরকে বাদ দিয়েছে। তাহলে কি এখানেও সেই হিজাব বিতর্কের প্রভাব পরল? উঠছে প্রশ্ন।