বুধবার খড়্গপুর পুরসভার নবনির্বাচিত কাউন্সিলরদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান। ঠিক তার ২৪ ঘণ্টা আগে বামেদের এক কাউন্সিলর যোগ দিলেন তৃণমূলে। আজ, মঙ্গলবার তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের হাত ধরে ঘাসফুল শিবিরে যোগ দিলেন খড়গপুর পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিআই প্রার্থী নার্গিস পারভিন (Nargis Parvin Joins TMC)। যিনি কার্যত রেকর্ড মার্জিনে এবার জয়লাভ করেছেন। তাঁর এই যোগদানের ফলে ৩৫ আসন বিশিষ্ট খড়গপুর পুরসভায় তৃণমূলের কাউন্সিলর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ২১। এর বাইরে বিজেপি ৬টি ও কংগ্রেস ৬টি আসন পেয়েছে। সিপিএম ১টি ও নির্দল ১টি আসন পেয়েছে।
কিন্তু কেন সিপিআই ছেড়ে তৃণমূল? এ প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) জানান উনি (Nargis Parvin Joins TMC) তৃণমূলে যোগদানের আবেদন করেছিলেন। সেই আবেদন গ্রহণ করে শীর্ষ নেতৃত্ব অনুমোদন দিয়েছে। এবং তারপর এই যোগদান। কুণালের কথায়, “নার্গিস ভেবেছিলেন এবার খড়গপুরে বামফ্রন্ট বোর্ড দখল করবে। কিন্তু ফলাফল বের হতে দেখা যায় খড়গপুরের মানুষ বামফ্রন্টকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে। তবে ব্যক্তিগত যোগ্যতায় নার্গিস নির্বাচিত হয়েছিলেন। এরপর থেকে এলাকার মানুষও চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নে নার্গিস যেন সামিল হয়। এলাকাবাসী নার্গিসকে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জন্য আর্জি জানায়। কারণ, তাঁরা মনে করেন নার্গিসের মতো এমন যোগ্য একজন জন প্রতিনিধি তৃণমূলে থাকলে সরকারি প্রকল্প থেকে শুরু করে পরিষেবা অনেক ভালো পাওয়া যাবে। এরপর এলাকাবাসীর আবেগের কথাটি মাথায় রেখে তৃণমূলে যোগদান করার আবেদন জানান নার্গিস। তাঁর সেই আবেদনে সাড়া দেয় দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দলের পুরসভা সংক্রান্ত বিষয়গুলি দেখাশোনা করেন ফিরহাদ হাকিম নার্গিসকে দলে নেওয়ার সবুজ সঙ্কেত দেন। আজ তিনি যোগদান করলেন এবং আগামিকাল বুধবার খড়গপুর পুরসভার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে তৃণমূলের কাউন্সিলর হিসেবে শপথ নেবেন নার্গিস পারভিন।”
তাঁর দল পরিবর্তন নিয়ে নার্গিস পারভিন জানান, “আমাকে এলাকায় যাঁরা ভোট দিয়েছেন, তাঁরা আমাকে দিদির দলে যোগ দেওয়ার কথা বলছেন। উন্নয়নের পক্ষে থাকতে চাই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজ করতে চাই। তাই তৃণমূলে যোগদান।”
আরও পড়ুন-শুরু রাজ্য সম্মেলন, রাজ্য কমিটিতে রদবদলে অশান্তির আশঙ্কা
প্রসঙ্গত, খড়গপুর পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড থেকে সিপিআই প্রার্থী হয়ে এবার কার্যত রেকর্ড মার্জিনে জয়লাভ করেন নার্গিস পারভিন। গোটা রাজ্যে যখন বামেদের করুণ দশা, তখন কার্যত স্রোতের উল্টোদিকে দাঁড়িয়ে ৫ হাজারেরও বেশি ভোটে জয়লাভ করেন নার্গিস। খড়্গপুরের এই ওয়ার্ডের ভোটার সংখ্যা কম বেশি ১২ হাজার। ভোট পড়েছিল প্রায় সাড়ে ৯ হাজার। যার মধ্যে সিপিআই প্রার্থী নার্গিস একাই পেয়েছিল সাড়ে সাত হাজার ভোট। এবং জয়ের ব্যবধান ৫ হাজারেরও বেশি।
এই পরিসংখ্যান তুলে ধরে কুণাল ঘোষ বলেন, “খড়্গপুরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে এবার তৃণমূলেরও প্রার্থী লড়াই করেছিল। কিন্তু সেখানে সিপিআই প্রার্থী রেকর্ড মার্জিনে জেতেন। এই ঘটনা অন্তত প্রমাণ করে, রাজ্যজুড়ে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে। বিরোধীদের তোলা সন্ত্রাসের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।”