কর্ণাটকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাব বিতর্কিত মামলায় মঙ্গলবার রায় দিল হাইকোর্ট। উদুপি জেলার কয়েকজন ছাত্রী ক্লাসরুম ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাব পরার আবেদন জানিয়ে কর্ণাটক হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন।আদালত জানায় হিজাব পরা বাধ্যতামূলক ধর্মীয় অনুশীলন নয়। এর ফলে বড় ধাক্কা খেলেন হিজাবের পক্ষে আন্দোলনরত পড়ুয়ারা।
আরও পড়ুন:দলনেত্রীর অনুমোদনেই পুরসভার চেয়ারম্যান-ভাইস চেয়ারম্যান নির্ণয়, টুইট সুখেন্দু শেখরের
গত পয়লা জানুয়ারি কর্নাটকের উদুপিতে একটি কলেজে কয়েকজন হিজাব পরা পড়ুয়াকে ক্লাসে বসতে বাধা দেওয়া থেকে ঘটনার সূত্রপাত।কলেজ উন্নয়ন সমিতির সভাপতি বিজেপি বিধায়ক রঘুপতি ভাট স্পষ্ট জানিয়ে দেন, হিজাব পরিহিতরা ক্লাসে ঢুকতে পারবেন না। সেই বিতর্ক দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে রাজ্য জুড়ে। হিজাবের পাল্টা হিসেবে গেরুয়া উত্তরীয় পরে আন্দোলন শুরু করে একাধিক হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। জায়গায় জায়গায় হিজাবের পক্ষে ও বিক্ষোভে আন্দোলনকারীরা মুখোমুখি পড়ে। দেশজুড়ে শুরু হয় চর্চা। কর্ণাটকের একাধিক জেলায় জারি করা হয় ১৪৪ ধারাও। শান্তির আহ্বান জানিয়ে রাজ্যের সমস্ত স্কুল, কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের সিদ্ধান্ত নেন মুখ্যমন্ত্রী।
গত ২৬ জানুয়ারি কর্নাটক সরকার এ বিষয়ে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করে।ঘোষণা করা হয়, কমিটি নির্দিষ্ট সুপারিশ করার আগে পর্যন্ত ছাত্রীরা কেবলমাত্র ইউনিফর্ম পরেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসতে পারবেন। হিজাব বা গেরুয়া উত্তরীয়— কিছুই পরার অনুমতি নেই। সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে উদুপির কয়েকজন ছাত্রী কর্নাটক হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন। তাঁরা আদালতকে জানান, হিজাব পরা তাঁদের মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে। কোনও ভাবেই তা বাতিল করা যায় না।
এদিন হাইকোর্ট রায় ঘোষণা করতেই মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাই সমস্ত পড়ুয়াদের কাছে ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখার আবেদন করেন। তিনি বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশ সমস্ত পড়ুয়াদের মেনে চলা উচিত। ক্লাস বা পরীক্ষা বয়কট করা উচিত নয়। আদালতের নির্দেশ না মেনে অশান্তি করলে প্রশাসন কঠোর পদক্ষেপ করবে।
এদিন রায়দানের আগে গোটা রাজ্যের একাধিক জায়গায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়ানো যায়। বেঙ্গালুরুতেও ব্যাপক পুলিশি নিরাপত্তা বলয়ে মুড়ে দেওয়া হয়েছে।মঙ্গলবার হিজাব কাণ্ডের মূল কেন্দ্র উদুপি এবং দক্ষিণ কন্নড়ে জেলা প্রশাসন সমস্ত স্কুল-কলেজে ছুটি ঘোষণা করেছে।