রুশ সেনার আগ্রাসনে যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন। রাজধানী কিভ দখলে মরিয়া রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন। একের পর এক শহরে সাঁড়াশি আক্রমণ চালাচ্ছে রুশ সেনা। অন্যদিকে দাঁতে দাঁত চেপে লড়াইয়ে জিততে মরিয়া ইউক্রেনও। এরইমধ্যে রবিবার যুদ্ধবিরতির জন্য গির্জায় প্রার্থনা করলেন ইউক্রেনবাসী। ক্রশবিদ্ধ যিশুর দিকে একদৃষ্টিতে একযোগে তাকিয়ে ভীত, সন্ত্রস্ত মুখগুলো।
আরও পড়ুন:Barack Obama:করোনা আক্রান্ত আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা
সোমবার রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ১৮তম দিন। শান্তির বার্তা দিয়ে একাধিকবার বৈঠকে বসেছেন দু’দেশের রাষ্ট্রনেতারা। কিন্তু রফাসূত্র বেরোয়নি। এদিকে মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। তাই উপায় না পেয়ে সাইরেনের শব্দের মাঝে গির্জায় প্রার্থনা করছেন ইউক্রেনের লিভিভবাসীরা। যুদ্ধের শুরুতে প্রাণ বাঁচাতে এই শহরে আশ্রয় নিয়েছিল অনেকেই। কিন্তু এবার এ শহরেও পৌঁছে গিয়েছে রুশ সেনা। গতকাল থেকে একের পর ক্ষেপনাস্ত্রের হামলায় ইতিমধ্যেই ঝাঁঝরা গোটা শহর। তবে তারই মধ্যে ইউক্রেনবাসীর আশা, প্রাচীন ভাস্কর্যে মোড়া এই শহরকে রেহাই দেবে রুশ সেনারা।
২০১৪ সালে ইউক্রেনের থেকে ছিনিয়ে নিয়েছিল রাশিয়া। সে দিক থেকেও কৃষ্ণসাগরের ধার ঘেঁষা বন্দর-শহরগুলোতে হামলা শুরু হয়। এর মধ্যে খেরসন আগেই মস্কোর কব্জায় চলে গিয়েছে।মারিউপোলে এখনও চলছে বিধ্বংসী যুদ্ধ। চারিদিক থেকে রুশ সেনার আক্রমণের লক্ষ্য রাজধানী কিভ। সেন্ট্রাল কিভের সেন্ট ভলোদিমির ক্যাথিড্রালেও রবিবারের প্রার্থনা হয়েছে।
পশ্চিমের আর এক শহর ইভানো-ফ্রাঙ্কিভস্কের বিমানবন্দরেও আজ হামলা চালায় রুশ বাহিনী। স্লোভাকিয়া ও হাঙ্গেরির সীমান্ত থেকে ২৫০ কিলোমিটার দূরে শহরটি। এই বিমানবন্দরটির একটি অংশ যাত্রী পরিষেবায় ব্যবহার হয়, অন্য অংশে রয়েছে মিলিটারি এয়ারফিল্ড।
পূর্ব ডনেৎস্কের একটি মনাস্ট্রিতে হামলা চলে। একটি শিশু নিবাসেও গোলাবর্ষণ করা হয়। সাধুসন্ন্যাসী ও বাসিন্দারা লুকিয়ে ছিলেন সেখানে। ৩২ জন জখম হয়েছেন। ডনেৎস্ক থেকে কিছু বাসিন্দাকে উদ্ধার করে পশ্চিম সীমান্তের উদ্দেশে রওনা হয়েছিল একটি ট্রেন। বোমা পড়ে এই ট্রেনে। মারিউপোলের পরিস্থিতি অনেকটাই একি রকম। অভিযোগ, ৪ লক্ষ মানুষের এই শহরকে কার্যত বন্দি করে হামলা চালানো হচ্ছে। বাইরে থেকে জল, খাবার, ওষুধ কিছুই ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। পালাতেও দেওয়া হচ্ছে না কাউকে। বিদ্যুৎ নেই। ইতিমধ্যে কতজনের প্রাণহানি হয়েছে তার কোনও সঠিক পরিসংখ্যান নেই।
সোমবার ইউক্রেনের প্রসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছিলেন সমঝোতায় যেতে তিনি প্রস্তুত। কিন্তু এখনও পর্যন্ত এর কোনও সদুত্তর মেলেনি।