বিজেপি বিধায়কদের(BJP MLA) বিক্ষোভের মাঝে রাজ্যকে সাংবিধানিক সংকটে ফেলে কক্ষ ত্যাগ করতে চেয়েছিলেন রাজ্যপাল(Govornor)। সেইসময় রাজ্যপালকে হাতজোড় করে মুখ্যমন্ত্রী ভাষণ শুরুর অনুরোধ করেছিলেন। একসময় রাজ্যপালের কক্ষত্যাগ আটকাতে তৃণমূলের মহিলা বিধায়করা তাঁকে ঘিরে দাঁড়িয়ে অনুরধ করেন। এই ঘটনায় রাজ্যপালকে শারীরিক নিগ্রহের অভিযোগ তুলেছেন বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী(Suvendu Adhikari)। এর ঠিক পর এবার একই সুর শোনা গেল রাজ্যপালের গলায়। সোমবার বিকেলে রাজভবনের সামনে সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্যপাল জানালেন, তাঁকে বিধানসভা কক্ষে শারীরিকভাবে বাধা দিয়েছেন তৃণমূলের বিধায়করা(TMC MLA)। এই ঘটনা গণতন্ত্রের জন্য শুভ নয়।
সোমবার বিধানসভায় বাজেট অধিবেশনে টানটান নাটকের পর রাজভবনের সামনে সাংবাদিক বৈঠক করে বিজেপির সুরে সুর মিলিয়ে সরব হন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়(Jagdeep Dhankar)। তিনি বলেন, “বিধানসভায় শারীরিকভাবে আমাকে আটকানো হয়েছে। এটা না হলেই ভালো হত। এই ধরণের ঘটনা গণতন্ত্রের জন্য শুভ নয়। বিধানসভার মার্শালদের উচিত ছিল রাজ্যপালকে রক্ষা করা। এই ধরণের ঘটনা যেন আর কখনও না ঘটে।” পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, “রাজ্যপাল হিসেবে আমি চাই না কোনওরকম সাংবিধানিক সংকট তৈরি হোক এবং তা যাতে না হয় সেই চেষ্টাই করেছি।” যদিও এই ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত ও একটি নির্বাচিত সরকারকে কাজ করতে বাধা দেওয়ার ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেছে তৃণমূল।
আরও পড়ুন:হেরে গিয়ে নির্লজ্জ নাটক বিজেপির, এটা গণতন্ত্রের লজ্জা: তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী
পাশাপাশি, বিধানসভায় আজকের এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী জগদীপ ধনকড়। রাজ্যপালের ভাষণ বন্ধ অসাংবিধানিক। আমি হাতজোড় করে অনুরোধ করেছি। নির্বাচিত সরকারকে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। আমি মর্মাহত। এতে সাংবিধানিক সঙ্কট তৈরি হতে পারত। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘BJP হেরে গিয়ে এসব করছে। এটা গণতন্ত্রের লজ্জা। রাজ্যপালের ভাষণের জন্য এক ঘণ্টা অপেক্ষা করেছি। আমাদের বিধায়করা অনুরোধ করেছেন। আমিও রাজ্যপালের কাছে অনুরোধ করেছি। আমি অনুরোধ করি উনি যেন একলাইনও পড়েন। রাজ্যপাল ভাষণ করবেন না, এটা হতে পারে না। অবশেষে রাজ্যপাল নিজের বক্তৃতা করেছেন। পড়ার ইচ্ছে ছিল না বা কিছু একটা চাপ ছিল ওঁর উপর। আমি ঠিক জানি না। তবে রাজ্যপাল আমাদের কথা রেখেছেন। সে জন্য ধন্যবাদ।”
উল্লেখ্য, পরিকল্পনা করে পুরভোটে সন্ত্রাসের অভিযোগে বিধানসভায় অধিবেশন শুরু আগেই এদিন ওয়েলে নেমে বিক্ষোভে দেখাতে শুরু করেন বিজেপি বিধায়করা। যার জেরে সময়মতো ভাষণ শুরু করতে পারেননি রাজ্যপাল। এরপরেই তিনি বারবার স্বাগত ভাষণ না দিয়েই বেরিয়ে যেতে চান। কিন্তু এই ধরনের গোলমাল অন্য রাজ্যের বিধানসভা বা লোকসভা ও রাজ্যসভার অধিবেশনেও দেখা যায়। সেখানে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ভাষণের প্রথম ও শেষলাইন পড়ে সেটি টেবিল করে দেন। কিন্তু এখানে ধনকড়ের ভূমিকাও আতস কাচের নীচে। বারবার তিনি অধিবেশন ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে অনুরোধ করার পরেও তিনি ভাষণ পড়েননি। শেষে তৃণমূলের মহিলা মন্ত্রী, বিধায়করা গিয়ে রাজ্যপালকে অনুরোধ জানাতে থাকেন, অন্তত প্রথম ও শেষ লাইনটা পড়ে অধিবেশন শুরু করার। সবশেষে সেই অনুরোধ মেনে নিলেও বিজেপির সুরে সুর মিলিয়ে কার্যত নিগ্রহের অভিযোগ তুললেন খোদ রাজ্যপাল। পাশাপাশি এদিন রাজ্যপালকে ‘হেনস্থা’ করা হয়েছে, এই অভিযোগে বিধানসভা থেকে রাজভবন পর্যন্ত মিছিল করে বিজেপি।