হেরে গিয়ে নির্লজ্জ নাটক বিজেপির, এটা গণতন্ত্রের লজ্জা: তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী

0
1

বিধানসভায় রাজ্যপালের ভাষণ শুরুর আগে বিজেপির বিধায়কদের বিক্ষোভে তীব্র উত্তেজনা ছড়ায়। পরিকল্পনা অনুযায়ী বিজেপির তালে তাল দিয়ে বাজেট অধিবেশনে ভাষণ না পড়ে সাংবিধানিক সংকট তৈরি করতে চেয়েছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় (Jagdeep Dhankhar)। ভাষণ না দিয়ে বারবার বেরিয়ে যেতে চান তিনি। ‘বিজেপি-র সঙ্গে ধনকড়ের এই বোঝাপড়া করে’ রাজ্যে সংবিধানিক সংকট তৈরির চক্রান্ত বুঝতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। নিজে ও শাসকদলের মহিলা বিধায়কদের দিয়ে রাজ্যপালকে অনুরোধ করেন মমতা। শেষ মুহূর্তে শেষ লাইন পড়ে সাংবিধানিক দায়বদ্ধতা পালন করেন রাজ্যপাল। তাঁকে রীতি মেনে বিদায় জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Benarjee)। তারপরেই, বিজেপি-র বিরুদ্ধে তোপ দাগেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “বিধানসভায় পরিকল্পিত বিশৃঙ্খলা তৈরি করেছে বিজেপি। সব ভোটে হেরে গিয়ে নাটক করছে বিজেপি। নিজের ওয়ার্ডেও হেরেছে ওরা। এদের লজ্জা নেই। রাজ্যপালের ভাষণ আটকে সাংবিধানিক সংকট তৈরির চেষ্টা করে বিজেপি। এটা গণতন্ত্রের পক্ষে লজ্জার। একঘণ্টা আমরা অপেক্ষা করেছি। আমি, স্পিকার- প্রত্যেকে রাজ্যপালকে অনুরোধ করেছি ভাষণ দেওয়ার জন্য। উনি ভাষণ না দিলে বাজেট সেশন শুরু হত না। সাংবিধানিক সমস্যা তৈরি হত। তাই বলেছি, একটা লাইন পড়ুন অন্তত। তারপর উনি প্রথম ও শেষ লাইন পড়েন।” এর জন্য ধনকড়কে ধন্যবাদ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। শুধু তাই নয়, বিধানসভা থেকে তিনি সোজা রাজভবনে রাজ্যপালকে ধন্যবাদ জানাতে যান মমতা।

পরিকল্পনা করে পুরভোটে সন্ত্রাসের অভিযোগে বিধানসভায় অধিবেশন শুরু আগেই ওয়েলে নেমে বিক্ষোভে দেখাতে শুরু করেন বিজেপি বিধায়করা। যার জেরে সময়মতো ভাষণ শুরু করতে পারেননি রাজ্যপাল। এরপরেই তিনি বারবার স্বাগত ভাষণ না দিয়েই বেরিয়ে যেতে চান। কিন্তু এই ধরনের গোলমাল অন্য রাজ্যের বিধানসভা বা লোকসভা ও রাজ্যসভার অধিবেশনেও দেখা যায়। সেখানে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ভাষণের প্রথম ও শেষলাইন পড়ে সেটি টেবিল করে দেন। কিন্তু এখানে ধনকড়ের ভূমিকাও আতস কাচের নীচে। বারবার তিনি অধিবেশন ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে অনুরোধ করার পরেও তিনি ভাষণ পড়েননি। শেষে তৃণমূলের মহিলা মন্ত্রী, বিধায়করা গিয়ে রাজ্যপালকে অনুরোধ জানাতে থাকেন, অন্তত শেষ লাইনটা পড়ে অধিবেশন শুরু করার।

আরও পড়ুন:Russia-Eucraine : ইউক্রেনীয়দের সাহায্যেই যুদ্ধক্ষেত্র থেকে বাংলায় ফিরলেন মালদহের দুই পড়ুয়া হামিদ ও আশিস

রাজ্যে সাংবিধানিক অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা ছিল বিজেপি। ওদের প্লট ছিল বিজেপি বিক্ষোভ করবে। রাজ্যপাল বসে থেকে তাঁদের প্রচার দেবেন। সুযোগ থাকলেও ভাষণ পড়বেন না বা ‘টেবিল’ করবেন না। বরং না পড়ে চলে যাবেন। ফলে বাজেট অধিবেশন নিয়ে সাংবিধানিক সঙ্কট তৈরি হবে। বিজেপি-ধনকড়ের এই চক্রান্ত বুঝতে পেরে তা ভেস্তে দেন মুখ্যমন্ত্রী। মহিলা বিধায়কদের গিয়ে রাজ্যপালকে আটকে দেন। রাজ্যপাল বাধ্য হয়ে ভাষণের শেষ লাইন পড়ে সাংবিধানিক দায়বদ্ধতা পালন করেন। রাজ্যপালেরও যে ভাষণ শুরু করতে অনীহা ছিল সে কথার ইঙ্গিত সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে, রাজ্যপালের শেষ পর্যায়ে ভাষণ পড়ে অধিবেশন শুরু করার জন্য রাজভবনে গিয়ে তাঁকে ধন্যবাদ জানান মমতা।