Ukraine Russia: রাশিয়া না ইউক্রেন? সামরিক ক্ষমতায় কে এগিয়ে ?

0
1

পূর্বের ডনবাসের পরে এ বার উত্তর-পশ্চিমের বেলারুশ সীমান্ত দিয়ে ইউক্রেনে অভিযান শুরু করল রুশ বাহিনী। বৃহস্পতিবার থেকেই পশ্চিম ইউক্রেনের সীমান্তরক্ষীদের ঘাঁটিগুলিতে লাগাতার গোলা এবং রকেট ছুড়তে শুরু করেছিল শুক্রবার ভোররাত থেকে বেলারুশের মঝয়র সেনাঘাঁটি থেকে সীমান্ত পেরিয়ে রুশ ট্যাঙ্কবাহিনী ঢুকতে শুরু করে ইউক্রেনে। সেনা অভিযানের নির্দেশ দিয়েই বৃহস্পতিবার ইউল্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন । তাতে দুই দেশের মধ্যে যেমন যুদ্ধ পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে, যুদ্ধের সুদূরপ্রসারী ছায়া নেমে এসেছে গোটা বিশ্বের উপর।

আরও পড়ুন:Ukraine Russia:চেরনোবিলের পরমাণু শক্তির বিকিরণ পঙ্গু করতে পারে ইউরোপকে 
আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্সের মতো দেশ এবং নর্থ অ্যাটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশন ইতিমধ্যেই রাশিয়ার পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করেছে। অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা চাপানোর পাশাপাশি রাশিয়ার বিরুদ্ধে সেনা নামানোর প্রক্রিয়াও চলছে। কিন্তু নিজের ক্ষমতায় ইউক্রেন আদৌ রাশিয়ার সামনে টিকে থাকা নিয়ে সংশয় রয়েছে। কারণ লোকবল এবং প্রতিরক্ষা ক্ষমতা, দুইয়ের নিরিখেই ইউক্রেনের থেকে ঢের এগিয়ে রয়েছে রাশিয়া ।

পদাতিক বাহিনী, নৌবাহিনী এবং বায়ুসেনা, তিন ক্ষেত্রেই রাশিয়ার সৈন্য সংখ্যা বেশি। এই তিন ক্ষেত্রে রাশিয়ার সম্মিলিত সৈন্য সংখ্যা ৯ লক্ষের বেশি। তুলনায় ইউক্রেনের হাতে সৈন্য সংখ্যা মাত্র ১ লক্ষ ৯৬ হাজার। দুই দেশের প্রতিরক্ষা বাজেটেই আকাশ-পাতাল তফাত রয়েছে। ২০২০ সালে প্রতিরক্ষা খাতে রাশিয়ার বরাদ্দ ছিল ৬ হাজার ১ ৭০ কোটি ডলার। সেখানে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা বাজেট ছিল মাত্র ৬০০ কোটি ডলার।
নৌবাহিনীতে ইউক্রেনের চেয়ে ১০ গুণ বেশি সৈনিক রয়েছে রাশিয়ার। রুশ নৌসেনার সংখ্যা ১ লক্ষ ৫০ হাজারের বেশি। ইউক্রেনের ক্ষেত্রে এই সংখ্যা মাত্র ১৫ হাজার। রাশিয়ার কাছে যুদ্ধ জাহাজ রয়েছে ৭৪টি, ডুবোজাহাজ রয়েছে ৫১টি। সেই তুলনায় ইউক্রেনের হাতে মাত্র দু’টি যুদ্ধজাহাজ রয়েছে।

পদাতিক বাহিনীতে তবুও কিছুটা সুবিধাজনক জায়গায় রয়ছে ইউক্রেন। রাশিয়ার সেনা সংখ্যা যেখানে ২ লক্ষ ৮০ হাজার, ইউক্রেনের পদাতিক বাহিনীতে সেনা রয়েছে ১ লক্ষ ২৫ হাজার। ইউক্রেনের কাছে ৯ লক্ষ অতিরিক্ত সংরক্ষিত বাহিনী রয়েছে। গত পাঁচ বছরে তাঁদের যুদ্ধের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু রাশিয়ার হাতে থাকা প্রশিক্ষিত বাহিনীর সংখ্যা ২০ লক্ষ।
ইউক্রেনের তুলনায় রাশিয়ার হাতে অনেক বেশি অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র, প্রযুক্তি এবং যুদ্ধ সরঞ্জাম রয়েছে। রাশিয়ার হাতে ট্যাঙ্ক রয়েছে ১৩ হাজার ৩৬৭টি। ইউক্রেনের ট্যাঙ্কের সংখ্যা ২ হাজার ১১৯। রাশিয়ার কামানের সংখ্যা ৫ হাজার ৯৩৪। ইউক্রেনের হাতে কামান রয়েছে ১ হাজার ৯৬২টি। রাশিয়ার হাতে থাকা অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সুসজ্জিত সাঁজোয়া গাড়ির সংখ্যা ১৯ হাজার ৭৮৩। ইউক্রেনেরে সাঁজোয়া গাড়ি রয়েছে ২ হাজার ৮৭০টি।
আকাশপথেও রাশিয়ার সঙ্গে যুঝে ওঠা খুবই মারাত্মক। সৈন্য সংখ্যা, যুদ্ধবিমান, হেলিকপ্টার, ক্ষেপণাস্ত্র, ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি, সব দিক থেকেই রাশিয়ার ক্ষমতা ইউক্রেনের চেয়ে ১০ গুণ বেশি। ইউক্রেনের হাতে মাটি থেকে আকাশে যুদ্ধবিমানে আঘাত হানতে সক্ষম প্রযুক্তি রয়েছে ৪০০-র বেশি। কিন্তু তার চেয়ে ১০ গুণ বেশি এবং উন্নত মানের ওই প্রযুক্তি রয়েছে রাশিয়ার হাতে। রুশ বায়ুসেনায় সৈন্য সংখ্যা ১ লক্ষ ৬৫ হাজার। ইউক্রেনীয় বায়ুসেনায় ৩৫ হাজার সেনা রয়েছে। রাশিয়ার হাতে যুদ্ধ বিমান রয়েছে ১ হাজার ৩২৮টি। ইউক্রেনের হাতে ১৪৬টি যুদ্ধবিমান রয়েছে। শত্রুপক্ষের উপর আঘাত হানতে সক্ষম ৪৭৮টির বেশই হেলিকপ্টার রয়েছে রাশিয়ার। ইউক্রেনের হেলিকপ্টারের সংখ্যা ৪২টি।
ইউক্রেনের একাধিক শহরে আছড়ে পড়েছে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র। তবে তার মোকাবিলায় ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহ করছে আমেরিকা, ব্রিটেন এবং ন্যাটো। ফ্রান্সও ইতিমধ্যেই রাশিয়াকে নিয়ে কড়া অবস্থানের কথা জানিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের তরফেও রাশিয়ার সমালোচনা শুরু হয়েছে। যুদ্ধের দ্বিতীয় দিনে চলছে বিমান হামলাও। এরই মধ্যে ইউক্রেনের বিমানবাহিনীও এবং ‘এয়ার ডিফেন্স ইউনিট’গুলিও সাধ্যমত প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা চালাচ্ছে।