ফের সঙ্গীত জগতে নক্ষত্রপতন! প্রয়াত কিংবদন্তী সুরকার বাপ্পি লাহিড়ী। মঙ্গলবার মধ্যরাতে মুম্বইয়ের এক বেসরকারি হাসপাতালের তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর।তাঁর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ শিল্পীমহল ।
আরও পড়ুন:প্রয়াত কিংবদন্তি সুরকার বাপি লাহিড়ি
১৯৫২ সালের ২৭ নভেম্বর জলপাইগুড়িতে জন্মগ্রহণ করেন বাপ্পি। তারপর দীর্ঘদিন বাংলা ও হিন্দি ছবির গান গেয়েছেন। সুর দিয়েছেন। কিশোর কুমার ছিলেন বাপ্পির সম্পর্কে মামা। বাবা অপরেশ লাহিড়ি ও মা বাঁশরী লাহিড়ি— দু’জনেই সঙ্গীত জগতের মানুষ। ফলে একমাত্র সন্তান বাপ্পি ছেলেবেলা থেকেই গানের প্রতি আকৃষ্ট ছিলেন। মা, বাবার কাছেই পান প্রথম গানের তালিম। মা নাম দিয়েছিলেন অলোকেশ, কিন্তু জনপ্রিয়তা পান বাপ্পি নামে।
শুরু হয়েছিল ৩ বছর বয়স থেকেই। গান নয়, বরং তবলা বাজানো দিয়ে সঙ্গীতজগতে পথ চলা শুরু।মাত্র ১৯ বছর বয়সে সঙ্গীত জগতে প্রবেশ করেছিলেন বাপি লাহিড়ি। বলিউডের ‘ডিস্কো বয়’ নামেই পরিচিত বাপ্পি লাহিড়ি তাঁর হাসিমুখ, সকলের সঙ্গে মিলেমিশে থাকার স্বভাবই সঙ্গীত জগৎ থেকে সাধারণ মানুষের মধ্যে তিনি জয়প্রিয় ছিলেন। বাংলা সিনেমায় গান গাওয়ার পাশাপাশি হিন্দি সহ একাধিক ভাষাতেও তিনি গান করেছিলেন।
১৯৭৫ সালে হিন্দি ছবি জখমি দিয়ে কেরিয়ার শুরু।১৯৭০ থেকে ৮০-এর দশকে হিন্দি ছায়াছবির জগতে অন্যতম জনপ্রিয় নাম বাপ্পি লাহিড়ির। হিন্দিতে ‘ডিস্কো ডান্সার’, ‘চলতে চলতে’, ‘শরাবি’, বাংলায় অমর সঙ্গী, আশা ও ভালবাসা, আমার তুমি, অমর প্রেম প্রভৃতি ছবিতে সুর দিয়েছেন। গেয়েছেন একাধিক গান। ২০২০ সালে তাঁর শেষ গান ‘বাগি- ৩’ এর জন্য।বাংলায় ‘অমর সঙ্গী’, ‘আশা ও ভালবাসা’, ‘আমার তুমি’, ‘অমর প্রেম’-সহ একাধিক ছবিতে সুর দিয়েছেন। গায়কীর নিজস্বতা তাঁকে অন্যদের থেকে আলাদা করেছিল।
তাঁর কাছে সোনা ছিল ভগবান। বলতেন, ‘আমার ভগবানের নাম সোনা!’ তাই প্রচুর সোনার গয়না পরতে ভালবাসতেন।সঙ্গীতজগতে তাঁর গায়কির নিজস্ব কায়দা ছিল। যা তাঁকে হিন্দি ছবির জগতে অনন্য পরিচিতি দিয়েছিল। পেয়েছেন একাধিক পুরস্কার এবং সম্মান।
গত বছর এপ্রিলে করোনা আক্রান্ত হয়ে মুম্বইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন বাপি লাহিড়ি। পরে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন। গত একমাস ধরে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন বাপি ছিলেন। সোমবার ছেড়ে দেওয়া হয়। গতকাল অবস্থার অবনতি হওয়ায় ফের নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ায় মৃত্যু, জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘ একমাসেরও বেশি সময় ধরে তিনি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। সোমবারই তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয়। কিন্তু মঙ্গলবারই তাঁর ফের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। এরপর ফের তাঁকে ক্রিটিকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। মধ্যরাতের কিছু সময় পরে তাঁর মৃত্যুর হয়। অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়াকেই তাঁর মৃত্যুর কারণ হিসাবে জানানো হয়েছে।