ইন্ডিয়া গেটে নেতাজির হলোগ্রাম মূর্তি নিয়ে কেন্দ্রকে ধুয়ে দিলেন জহর সরকার

0
2

ইন্ডিয়া গেটে যে নেতাজির মূর্তি বসানো হবে, এমন পরিকল্পনার কথা আগে ঘোষণা করেনি কেন্দ্রীয় সরকার। প্রথমে প্রধানমন্ত্রী টুইট করে জানান, ইন্ডিয়া গেটে নেতাজির মূর্তি বসানো হবে। তারপর ২৩ জানুায়ারি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫তম জন্মবার্ষিকীতে নেতাজির হলোগ্রাম মূর্তির উদ্বোধন করেন।অনেকের মধ্যেই এই হলোগ্রাম মূর্তি নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ায়।আসলে হলোগ্রাম প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভারচুয়াল থ্রি ডাইমেনশনাল ছবি তৈরি করা হয়েছে। আপাতত নেতাজির ওই ছবিই মূর্তির জায়গায় আছে।
ইন্ডিয়া গেটে নেতাজির এই মূর্তির জন্য বাজেটে অনুমোদিত অর্থ, তার অনুমোদনের তারিখ সহ বিশদ বিবরণ, বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় বিশেষ উল্লেখ পর্বে জানতে চান তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ জহর সরকার। এরই পাশাপাশি তিনি জানতে চান, ইন্ডিয়া গেটের কাছে হলোগ্রাম মূর্তিটিও কেন মাঝেমধ্যে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না। তার প্রশ্ন, একটি স্থিতিশীল হলোগ্রাম মূর্তি রাখা কি সত্যিই সম্ভব?
এই প্রশ্নের লিখিত জবাবে বিদেশ মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী ভি মুরলীধরণ জানিয়েছেন, রাশিয়া সরকারিভাবে জানান, নেতাজি সম্পর্কিত কোনও নথি তারা খুঁজে পাননি। কেন্দ্রীয় সরকারের অনুরোধে রাশিয়ান আর্কাইভে অতিরিক্ত তদন্তের পরেও কোনও নথি পাওয়া যায়নি।চিন সরকারের কাছ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তিনি আরও জানা্ন, যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, জাপান এবং চিন থেকে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু সংক্রান্ত ফাইল ও নথি সংগ্রহের চেষ্টা করা হয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে,নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ৬২ টি ফাইল ইতিমধ্যেই ন্যাশনাল আর্কাইভস এবং ব্রিটিশ লাইব্রেরির ওয়েবসাইটে দেখা যায়।তারা আরও জানিয়েছে যে তাদের কাছে ৩০ বছরের বেশি কোনও ঐতিহাসিক রেকর্ড নেই। মার্কিন ন্যাশনাল আর্কাইভস অ্যান্ড রেকর্ডস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন জানিয়েছে, তাদের আর্কাইভে সেই সময়ের রেকর্ড এখনও ডিজিটালাইজড করা হয়নি। কারন, এই নথিগুলি শনাক্তকরণের জন্য প্রয়োজন মার্কিন সরকারের বিভিন্ন সংস্থার রেকর্ড নিয়ে বিস্তৃত গবেষণা।কিন্তু তাদের পক্ষে এই কাজ করা সম্ভব হবে না।
জাপান সরকার নেতাজি সম্পর্কে এখনও পর্যন্ত দুটি ফাইল প্রকাশ করেছে। এই ফাইলগুলি সবাই দেখতে পারেন।পরবর্তীকালে, ভারত সরকারের অনুরোধের ভিত্তিতে জাপান সরকার এই ফাইলগুলি ভারতে স্থানান্তর করেছে এবং তা সযত্নে রাখা আছে ভারতের জাতীয় আর্কাইভসে।
এছাড়াও জাপান সরকার জানিয়েছে, বিষয়টির সাথে প্রাসঙ্গিক অতিরিক্ত নথি যদি থাকে তাহলে তাদের নীতি অনুসারে প্রকাশ করা হবে একটি নির্ধারিত সময়ের পরে অভ্যন্তরীণ পর্যালোচনা প্রক্রিয়ার উপর ভিত্তি করে।
জহর সরকারের অন্য আর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের সরাসরি জবাব দেননি রাষ্ট্রমন্ত্রী। তার প্রশ্ন ছিল, সরকার কেন জাপানের রেনকোজি মন্দিরে রাখা ছাইয়ের কোনও ডিএনএ পরীক্ষা করাচ্ছে না ? ভি মুরালিধরন তার লিখিত জবাবে বলেছেন,১৯৪৫ সালে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর অন্তর্ধান সম্পর্কিত পরিস্থিতি অনুসন্ধানের জন্য সরকার বিচারপতি মুখার্জি কমিশন অফ এনকোয়ারি গঠন করেছিল ১৯৯৯ সালের ১৪ মে।কমিশনের বিচার্য বিষয়গুলির মধ্যে ছিল,”জাপানি মন্দিরের ছাই নেতাজির ছাই কিনা তা খতিয়ে দেখা”। কমিশনের রিপোর্ট এবং এই সংক্রান্ত নথিগুলি প্রকাশ করে ইতিমধ্যেই পাঠানো হয়েছে ন্যাশনাল আর্কাইভস অফ ইন্ডিয়া’র কাছে ।