বিরল রোগের সফল অস্ত্রোপচারে ফের নজির গড়ল কলকাতা মেডিকাল কলেজ

0
1

টিউমার।তবে যে সে টিউমার নয়। এই টিউমারের নাম ‘ফিলোডস টিউমার’। আমেরিকান ক্যানসার সেন্টারের মতে ফিলোডস খুবই বিরল একটি টিউমার। আর এই বিরল টিউমারের সফল অস্ত্রোপচার করে নজির গড়ল কলকাতা মেডিকাল কলেজ। ৫৫ বছর বয়সি এক মহিলার স্তন থেকে ১০.২৮ কিলোগ্রামের টিউমার বাদ দিলেন চিকিৎসকরা। অস্ত্রোপচারের পরে রোগীর অবস্থা অনেকটাই স্থিতিশীল। দু’ঘণ্টার চেষ্টায় বাদ দেওয়া হয় বিশালাকার এই টিউমার। অস্ত্রোপচারে ধৃতিমানকে সাহায্য করেন চিকিৎসক শতক্রতু বর্মন, চিকিৎসক অন্তরীপ ভট্টাচার্য ও চিকিৎসক শুভ রায়।

আরও পড়ুন:Anubrata Mondal: গরু পাচার কাণ্ডে সোমবার অনুব্রত মণ্ডলকে সিবিআই তলব

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন ,মাস দু’য়েক আগে ওই মহিলার বাস থেকে নামার সময় এক জনের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে তাঁর ডান দিকের স্তনে আঘাত লাগে। তার পর থেকেই তিনি লক্ষ্য করেন যে, তাঁর ডান দিকের স্তনে একটু ফোলা ভাব দেখা দিয়েছে। তার পরের কয়েক দিনে এই ফোলা অংশ আয়তনে ক্রমশই বাড়তে থাকে। এক দিন অজ্ঞানও হয়ে যান তিনি।পরীক্ষা করাতেই দেখা যায় যে, মহিলার রক্তে শর্করার মাত্রা কমে গিয়ে ৩০-৩৫ এমজি/ডিএল-এর মধ্যে থাকছে। চিকিৎসা পরিভাষায় যাকে বলা হয় হাইপোগ্লাইসিমিয়া। হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা করার পরেও তাঁর অবস্থার উন্নতি হয়নি। তত দিনে স্তনের ফোলা অংশ কোমর পর্যন্ত নেমে এসেছে। এরপর মহিলার কোর বায়োপসি রিপোর্ট এলে পরিষ্কার হয় যে, তাঁর স্তনে বাসা বেঁধেছে টিউমার।

এরপর চিকিৎসা করাতেই কলকাতা মেডিকাল কলেজে ব্রেস্ট এন্ড এন্ডোক্রিন সার্জারি বিভাগের প্রধান ধৃতিমান মৈত্রর কাছে নিয়ে যান। সন্দেহ করেন যে, তাঁর স্তনে ফিলোডস টিউমার হয়েছে। একই সঙ্গে রক্তে শর্করার পরিমাণ কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে রোগীর অগ্নাশয়ে অন্য একটি বিরল টিউমার ‘ইনসুলিনমা’ থাকতে পারে বলেও তিনি সন্দেহ প্রকাশ করেন। এর পরই মহিলাকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে নানান পরীক্ষা নিরীক্ষা শুরু করা হয়। তবে রক্তে ইনসুলিন ও সি-পেপটাইড মেপে এবং আরও কিছু রক্ত পরীক্ষা করে বোঝা যায় যে রোগীর ইনসুলিনমা নেই। বরং তার জায়গায় অন্য একটি বিরল লক্ষণ আছে। তাঁর স্তনের টিউমার থেকে নিঃসৃত হচ্ছে ‘আইজিএফ-২’ নামক এক প্রোটিন হরমোন, যা ইনসুলিনের মতোই রক্তে শর্করার মাত্রা কমায়।

এরপরই অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা। দু’ঘণ্টার চেষ্টায় বাদ দেওয়া হয় বিশালাকার এই টিউমার। অস্ত্রোপচারে ধৃতিমানকে সাহায্য করেন চিকিৎসক শতক্রতু বর্মন, চিকিৎসক অন্তরীপ ভট্টাচার্য ও চিকিৎসক শুভ রায়।