আর খানিকক্ষণ পরেই বাড়ি। মায়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলছিলেন বয়স ২৩এর চিরঞ্জিত বর্মন। কিন্তু তখনও আঁচ করতে পারেননি শেষবারের মতো মায়ের সঙ্গে সুখ-দুঃখের কথা হচ্ছে তাঁর। খোশমেজাজে হাসিঠাট্টা করতে করতেই হঠাৎ বিকট শব্দ। অস্পষ্টভাবে আবারও ‘মা’ শব্দ শুনতে পান চিরঞ্জিতের মা। তারপর আর ছেলের কন্ঠস্বর শুনতে পাননি মা। আর মায়ের ডাকে সারা দেয়নি চিরঞ্জিত। মায়েরও বুঝতে দেরী হয়নি ছেলের অবস্থা। ফোনে ভেসে আসে সেই দুঃসংবাদ। শুক্রবার রাতে ময়নাগুড়ির রেল দুর্ঘটনায় মৃত চিরঞ্জিত বর্মনের দেহ জলপাইগুড়ি থেকে অ্যাম্বুলেন্সে কোচবিহারের চান্দামারি গ্রামে ফেরে। গ্রামবাসীরা রাস্তার দুধারে দাঁড়িয়ে স্লোগান তোলে চিরঞ্জিত বর্মন অমর রহে।
আরও পড়ুন:Train Accident: সরানো হল বিকানের-গুয়াহাটি এক্সপ্রেসের ইঞ্জিন, দুর্ঘটনাস্থল দিয়ে রেল পরিষেবা শুরু
শুক্রবার চিরঞ্জিতের দেহ তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দিতেই ডুকরে কেঁদে ওঠে তাঁর মা। বৃদ্ধ বাবা-মাকে নিয়ে অভাবের সংসার ছিল চিরঞ্জিতের। বাবা নির্মল বর্মন মানসিক ভাবে অসুস্থ। শয্যাশায়ী। মা ফুলেশ্বরী বিড়ি বাঁধেন। চিরঞ্জিত আগে কোচবিহারে শহরে গিয়ে দিনমজুরের কাজ করত। তবে মাস ছয়েক আগে পেটে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলে জানতে পারেন, গলব্লাডারে স্টোন হয়েছে। অপারেশনের ধাক্কা প্রায় পঁচিশ হাজার টাকা। সেই টাকার বন্দোবস্ত করতেই বাড়ি ছেড়ে জয়পুরে গিয়েছিলেন চিরঞ্জিত ওখানে অনেক বেশি মজুরি। টাকা জোগাড় হতেই বিকেনের-গুয়াহাটি এক্সপ্রেসে বাড়ি ফিরছিলেন। কিন্তু বাড়ি আর ফেরা হল না।গন্তব্য আসার আগেই মায়ের গলার আওয়াজকে সঙ্গী করেই চিরবিদায় নিলেন চিরঞ্জিৎ।
ছেলের মৃতদেহ পেয়েও মা ফুলেশ্বরী এখনও বিশ্বাস করে উঠতে পারছেন না বেঁচে নেই তাঁর চিরঞ্জিত। বৃহস্পতিবার রাতেই ছেলের দেহ শনাক্ত করতে জলপাইগুড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ফুলেশ্বরীকে। একবার ইশারায় ‘হ্যাঁ’ বলে সেই থেকে মুখে খিল দিয়েছেন।
Sign in
Welcome! Log into your account
Forgot your password? Get help
Password recovery
Recover your password
A password will be e-mailed to you.