ফোনে ভেসে আসছে নারীকণ্ঠ, চন্দননগরে কল সেন্টার খুলে অভিনব প্রচার তৃণমূল প্রার্থীর

0
3

করোনার দাপাদাপির মধ্যেই আগামী ২২ জানুয়ারি চন্দননগর পুরনিগমের ভোট (Chandernagore Municipal Corporation Election) অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। মহামারি আবহে ভোট প্রচারের জন্য একাধিক নির্দেশিকা বা গাইড লাইন প্রকাশ করেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। পাশাপাশি ভিড় ও জমায়েত এড়াতে রাজনৈতিক দলগুলিকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে প্রচারের ওপর জোর দেওয়া প্রস্তাব দিয়েছে কমিশনের পক্ষে। ঝুঁকি নিয়ে ছোট ছোট সভাও না করার আবেদন করা হয়েছে কমিশনের তরফে। তাই ট্র্যাডিশন মেনে
দেওয়াল লিখন, ব্যানার-হোর্ডিং যেমন বেশি বেশি করে টাঙানো যেমন হয়েছে, একইভাবে অটো বা টোটোতে মাইকেও চলছে প্রচার। কোভিডের (Covid 19) বাড়বাড়ন্তের জন্য চার-পাঁচজন নিয়ে ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে চলছে ডোর টু ডোর প্রচার। কিন্তু সেক্ষেত্রে কর্মী-সমর্থকদের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে অনেক সময়ই অসুবিধায় মুখে পড়তে প্রার্থী বা নেতা-নেত্রীদের। আবেগের বশে বাড়ি বাড়ি প্রচারের সময় কর্মীরা প্রার্থীর পিছনে ভিড় বাড়ালেই বিপদ।

তাই ভোট প্রচারে একেবারে অভিনব পন্থা অবলম্বন করলেন চন্দননগর পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেস (TMC) প্রার্থী মোহিত নন্দী (Mohit Nandy)। হাতিয়ার করলেন প্রযুক্তিকে। নিজের ওয়ার্ডের কাঁটাপুকুর এলাকায় লিচুবাগান সংলগ্ন তাঁর নির্বাচনী কার্যালয়ে তৈরি করলেন অস্থায়ী ”টেলি কলার” সেন্টার। ২ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটারদের ফোনের ওপ্রান্ত থেকে ভেসে আসছে নারীকণ্ঠ। যেখানে নিউ ইয়ারের শুভেচ্ছা জানানোর পর বিভিন্ন ভাবে তৃণমূল প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার আবেদন জানানো হচ্ছে। দিনে নিয়ম করে বেশ কয়েকবার এই ফোন আসছে মানুষের কাছে।

মোহিত নন্দী এই কল সেন্টারে দলেরই ৬ জন মহিলা কর্মীকে নিয়োগ করেছেন। ”টেলি কলার” সেন্টারের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সেই নির্বাচনী কার্যালয়ে তাঁরা বসছেন। দুটি পৃথক করে ৬ জনের ৬টি আলাদা টেবিল। প্রতিটি ঘরে তিনজন টেলি কলার। প্রত্যেকের হাতে মোবাইল, টেবিলে ভোটার লিস্ট, সঙ্গে ভোটারদের ফোন নম্বর।

টেলি কলার সেন্টার খোলার প্রথমদিন তৃণমূল প্রার্থী কীভাবে ভোটারদের কাছে আবেদন করতে হবে, সেই সমস্ত কিছু টেলি কলারদের বুঝিয়ে দিয়েছেন। মোহিত নন্দী জানিয়েছেন, প্রথমদিন তিনি ওই মহিলা কর্মীদের হাতে ভোটারদের ফোন নাম্বারের তালিকা তুলে দিয়ে গোটা বিষয়টি বুঝিয়ে দেন। তারপরই কাজে নেমে পড়েন টেলি কলাররা। মোহিতবাবুর কথায়, “করোনা পরিস্থিতিতে সবার আগে মানুষের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রাখতে হবে। ভিড় এড়াতে আমি মোবাইলেই প্রচার করছি।মানুষের সঙ্গে জনসংযোগের এই রকম ব্যবস্থা হলে একদিকে যেমন করোনাকে কিছুটা প্রতিহত করা যাবে, তেমনই পুরভোটের প্রচারে আলাদা মাত্রা এনে দেবে!”

তিনি আরও বলেন, এই ওয়ার্ডে ৯৫ ভাগ কাজ হয়ে গেছে। তবে এখনও কিছু কাজ বাকি আছে। এবার মানুষের আশীর্বাদে ফের নির্বাচনে জিতে আসলে সেই অসম্পূর্ণ কাজট শেষ করাই তাঁর মূল লক্ষ্য। এলাকার মানুষের সঙ্গে সুখ দুঃখে দিনরাত এক করে পাশে দাঁড়ান তিনি। তাই ভোট বলে আলাদা কিছু নয়। তাঁর সঙ্গে এলাকাবাসীর নিবিড় জনসংযোগ ছিল আছে থাকবে।

তৃণমূল প্রার্থীর এমন অভিনব প্রচারকে সাধুবাদ জানিয়েছেন ২ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটাররাও। তাঁদের বক্তব্য, ভোট মানেই বাড়িতে বাড়িতে রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের আসা-যাওয়া।কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে বাড়ি বাড়ি ভিড় না করে এভাবে প্রচার এককথায় অনবদ্য। সমস্ত রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের এমনই চিন্তাভাবনা থাকা উচিত।

আরও পড়ুন- Omicron Crisis : বিধিনিষেধে বাড়ছে না ভাড়া, অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলবে বাস