মোদি সরকারের চোখে আঙুল দিয়ে অভিষেক দেখালেন করোনা মোকাবিলায় সেরা ডায়মন্ড হারবার

0
2

লক্ষ্য ছিল ৩০ হাজার। তবে দিনের শেষে সে লক্ষ্যমাত্রাকে ছাপিয়ে রেকর্ড গড়েছে ডায়মন্ড হারবার। একদিনে এই লোকসভা কেন্দ্রে করোনা টেস্ট হয়েছে ৫৩,২০৩ টি। পজিটিভিটি রেট ২.১৬ শতাংশ। করোনা মোকাবিলায় ডায়মন্ডহারবার মোদি সরকারের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে অভিষেক মডেল কতদূর কার্যকরী। আর দিনের শেষে যে রিপোর্ট প্রকাশ্যে এল তাতে দেখা যাচ্ছে করোনা মোকাবিলায় কোভিড টেস্টের লক্ষ্যে দেশের তাবড় তাবড় শহরগুলিকে কার্যত হেলায় পেছনে ফেলে দিয়েছে ‘অভিষেক মডেল’। রিপোর্ট বলছে, গোটা দেশ তো বটেই চেন্নাই- মুম্বাই-লখনউয়ের মত বড় শহরগুলির জনসংখ্যা পিছু দৈনিক টেস্টে বহুগুণে গিয়ে ডায়মন্ড হারবার।

এদিনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ডায়মন্ড হারবারের জনসংখ্যা ২০ লক্ষ অর্থাৎ ২ মিলিয়ন। এত সংখ্যক মানুষের মধ্যে এদিন করোনা টেস্ট হয়েছে ৫৩,২০৩ জনের। অর্থাৎ প্রতি মিলিয়নের ২৭০০০ টেস্ট। সে হিসেবে দেশের অন্যতম বড় শহর মুম্বইয়ে জনসংখ্যা ২০ মিলিয়ন। এখানে দৈনিক টেস্টে সংখ্যা ৬৭০০০। অর্থাৎ প্রতি মিলিয়নে মাত্র ৩৫০০। একইরকমভাবে চেন্নাইয়ের ক্ষেত্রে মোট জনসংখ্যা ৮ মিলিয়ন, দৈনিক টেস্ট ৩০০০০। অর্থাৎ প্রতি মিলিয়নে ৩৭৫০। বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশের লখনউয়ের ছবিটাও খুব একটা ভালো নয়, ৩.৮ মিলিয়ন জনসংখ্যার লখনউয়ের দৈনিক টেস্টের সংখ্যা ২৪ হাজার। অর্থাৎ প্রতি মিলিয়নে মাত্র ৬৩১৫।

শুধু তাই নয় গোটা দেশের সামগ্রিক ছবিটার দিকে যদি নজর রাখা যায় তাহলে দেখা যাবে, করোনার প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ে সরকার রীতিমতো ব্যর্থ হয়েছে সারাদেশে দৈনিক ৪.৫ থেকে ৫ মিলিয়ন করোনা টেস্টের লক্ষ্য পূরণে। সরকার এই লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছিল ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত। ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে সরকার দৈনিক ১ মিলিয়ন করোনা টেস্টের লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছালেও ২০২১ এর জানুয়ারি মাসে তা নেমে আসে মাত্র ৪ লক্ষে। একইসঙ্গে পজিটিভিটি ১.৯ শতাংশ। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে টেস্টের হার বেড়ে হয় ১.৯ থেকে ২ মিলিয়ন, পজিটিভিটি ছিল ১৫-১৭ শতাংশ। এই সমস্ত রিপোর্টের সঙ্গে তুলনামূলকভাবে করোনা মোকাবিলায় ডায়মন্ড হারবারের পদক্ষেপ এবং ‘অভিষেক মডেল’ গোটা দেশের মডেল হয়ে ওঠার জন্য উপযুক্ত।

তবে শুধুমাত্র করোনা টেস্ট নয় সামগ্রিকভাবে অভিষেক মডেলকে যদি দেখা যায় তাহলে দেখা যাবে ডায়মন্ডহারবার মেডিকেল কলেজে করোনা রোগীদের জন্য ১৮৪ বেড বাড়ানো হয়েছে। যেখানে রয়েছে ২৯ টি আইসিইউ ও সিসিইউ। ডায়মন্ডহারবার স্টেডিয়াম ও সাগরে ১০০ বেডের আইসোলেশন সেন্টার তৈরি হয়েছে, কাকদ্বীপে তৈরি হয়েছে ৮০ বেডের আইসোলেশন সেন্টার। ডায়মন্ড হারবার সরকারি হাসপাতালে শিশুদের জন্য আলাদাভাবে বরাদ্দ হয়েছে ২৪ টি বেড। পিলান মোড় এলাকায় ৫০ বেডের কোয়ারেন্টাইন সেন্টার। যেকোনো রকম ইমারজেন্সি জন্য প্রতিটি ওয়ার্ডে ও গ্রামে খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। সব মিলিয়ে সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দৌলতে করোনা মোকাবিলায় ডায়মন্ড হারবারের যে ছবিটা উঠে এসেছে তা এককথায় অনবদ্য।