KMC 130: অন্য ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হয়েও বেপাত্তা শোভনের অভাব টের পেতে দেননি অভিজিৎ

0
3

কলকাতা পুরসভার (KMC) ১৩০ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় (Avijit Mukherjee)। বাম আমলের শেষদিকে ২০১০ সালে তৃণমূলের টিকিটে প্রথমবার ভোটে দাঁড়িয়েই কাউন্সিলর হয়েছিলেন। এরপর ২০১৫ সালেও নিজের ওয়ার্ড থেকে নির্বাচিত হন। প্রতিবারই অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় তাঁর ওয়ার্ডে বিভিন্ন নির্বাচনে জয়ের ব্যবধান বাড়িয়েছে ঘাসফুল শিবির। ফলে অটোমেটিক চয়েজ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়কে এবারও বেহালা পশ্চিমের অন্তর্গত ১৩০ নম্বর ওয়ার্ড থেকে তৃণমূলের প্রার্থী করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এলাকাবাসীর কাছে কাজের মানুষ, কাছের মানুষ বলেই পরিচিতি অভিজিৎবাবু। কার্যত হ্যাট্রিকের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে তিনি।

কিন্তু আত্মতুষ্টির কোনও জায়গা নেই। ৩৬৫ দিন ২৪ ঘন্টা যেমন মানুষের পাশে থেকেছেন, প্রার্থী হিসেবে ফের নাম ঘোষণা হওয়ার পর থেকে একইভাবে দিনরাত এক করে প্রচার করেছেন অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়। গিয়েছেন মানুষের দুয়ারে দুয়ারে।

কে এই অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়?

১৯৮০ সাল থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্ক। ১৯৮৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে তৎকালীন যুব কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথমবার সিপিএমের হেভিওয়েট প্রার্থী সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কংগ্রেসের টিকিটে যাদবপুর কেন্দ্র থেকে জিতে রাজ্য রাজনীতিতে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন। তখন বেহালার দু’টি বিধানসভা ছিল যাদবপুর লোকসভার অন্তর্গত। সেই দুই বিধানসভায় কংগ্রেসের হয়ে ভোট পরিচালনার দায়িত্ব ছিল অভিজিৎ মুখোপাধ্যাযয়ের। এবং বলা হয়, বেহালা অঞ্চল থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে লিড দেওয়ার পিছনে বড় ভূমিকা ছিল তাঁর।

এখানেই শেষ নয়, ২০১৪ সালে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যখন প্রথমবার ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্র থেকে লড়াই করেন, সেই সময়ও অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় দলের হয়ে নির্বাচন পরিচালনার বড় দায়িত্বে ছিলেন।

তবে শীর্ষ নেতৃত্বের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ হলেও নেপথ্যে থেকেই কাজ করতে পছন্দ করেন অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়। মাটিতে পা রেখে মানুষের মধ্যে মিশে যাওয়াই অভিজিৎবাবুর অন্যতম বৈশিষ্ট্য। বিদায়ী মেয়র পারিষদ (শিক্ষা) দায়িত্ব পাওয়ার পরও নিজের ওয়ার্ড আগলেই থেকেছেন তিনি। আপদে-বিপদে ২৪ ঘন্টা ফোনে পাওয়া গিয়েছে ১৩০ নম্বর ওয়ার্ডের পৌরোপিতা অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়কে।

শুধু তাই নয়। শোভন চট্টোপাধ্যায় ২০১৫ সালে পাশের ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডে মানুষের ভোটে নির্বাচিত হয়ে এলাকাবাসীকে অভিভাবকহীন করে, প্রতিশ্রুতি না রেখে, ঠকিয়ে, বিপদে ফেলে ব্যক্তিগত কারণে বেপাত্তা হয়ে গেলেন, তখন থেকে অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় অনেকাংশে ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডের মানুষের অভিভাবকের ভূমিকা পালন করেছেন। এলাকাবাসীকে ছেড়ে স্বামী উধাও হয়ে যাওয়ার পর ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী রত্না চট্টোপাধ্যায় যেমন বুক দিয়ে আগলে রেখেছিলেন ওয়ার্ডের মানুষকে, ঠিক একইভাবে ১৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হয়েও অভিজিতবাবু সার্টিফিকেট দেওয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন সরকারি কাজে শোভনের অভাব টের পেতে দেননি।

বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ হলেও এখনও নতুন প্রজন্মের নেতাদের মতো উদ্যমী, মিশুকে স্বভাবের, সদাহাস্য অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দল আমাকে দু’বার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী এজেন্ট করে আমার ওপর আস্থা রেখেছে। আমিও দলের আস্থার মর্যাদা দিয়েছি। আমার মতো একজন তৃণমূল কর্মীর কাছে সেটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। ১৩০ নম্বর ওয়ার্ড থেকে তৃতীয়বার জিতলে সেটাও হবে দলেরই কৃতিত্ব। দলই সব। এখানে আমি বলে কিছু নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত মাথার উপর না থাকলে আমাদেরও কারও কোনও অস্তিত্ব নেই।”

আরও পড়ুন- Ration: এখনই বাড়ছে না রেশনের চাল ও গমের দাম, ঘোষণা কেন্দ্রের