KMC 106: স্বাধীনতা সংগ্রামীর নাতি MBA ছাত্র রানা এবার তৃণমূলের প্রার্থী

0
3

দাদু স্বর্গীয় দেবীপ্রসাদ দাস ঠাকুর ছিলেন একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী। বাবা স্বর্গীয় দুলাল দাস ঠাকুর আপাদমস্তক একজন রাজনীতিবিদ। ছিলেন বাম জমানায় তৃণমূলের টিকিটে জিতে আসা পুরপিতা। মা দীপু দাস ঠাকুরেরও রাজনীতির সঙ্গে প্রত্যক্ষ যোগাযোগ। তিনিও তৃণমূলের পুরমাতা ছিলেন। আসন্ন কলকাতা পুররসভা নির্বাচনে সেই বাড়ির সন্তান অরিজিৎ দাস ঠাকুর এবার যাদবপুর বিধানসভার অন্তর্গত ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রার্থী। এলাকায় যিনি রানা নামেই পরিচিত ও জনপ্রিয়।

মেধাবী ছাত্র রানা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি-কম অনার্স স্নাতক হওয়ার পর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স অব বিজনেস এডমিনিস্ট্রেশন পাস করেছেন। তার পড়াশোনার এখানেই শেষ নয়। লখনউয়ের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট থেকে ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম করেছেন। এরপর নিজের যোগ্যতায় দীর্ঘ ২০ বছর যাবৎ বিভিন্ন বহুজাতিক সংস্থায় চাকরি করেছেন। বর্তমানে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ সংস্থায় চিফ ম্যানেজার পদে কর্মরত। তবে পারিবারিক সূত্রে রানার রক্তে রাজনীতি। তাই মানবসেবার শপথ নিয়ে ছাত্রাবস্থায় ২০০০ সাল থেকে রাজনীতির মঞ্চে অবাধ বিচরণ তাঁর। বাবার হাত ধরেই ২০০০ সালের ভুত কর্মী হিসেবে রাজনীতিতে হাতেখড়ি। ২০০৫ সালে বাবাকে হারিয়েছেন। এরপর বাবার ব্যাটন নিয়ে এগিয়ে যেতে দেখেছেন মা-কে। তারপর শারীরিক কারণে তাঁর মাও ২০১৫ সালে রাজনীতি থেকে অবসর নেন। আর বাবা-মায়ের অধরা স্বপ্নপূরণে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিক হয়ে রাজনীতির ময়দান দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন রানা দাস ঠাকুর।

নির্বাচিত পুর প্রতিনিধি না হয়েও রানা করোনাকালে লকডাউনের সময় কোভিড কিচেনের মাধ্যমে তাঁর সহকর্মীদের নিয়ে দিনরাত মানুষের পাশে থেকেছেন। আমফান বিপর্যয়ে মানুষে সাহারা হয়েছেন। পাশাপাশি রাজ্য সরকারি প্রকল্পগুলি যাতে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে পৌঁছে যায় সেই ব্যবস্থাও করেছেন। এবার খুব স্বাভাবিকভাবেই দল তাঁকে প্রার্থী করেছে।

বাম জমানার আস্তাকুঁড় থেকে বেরিয়ে বিগত ১০ বছরে রাজ্য সরকারের সৌজন্যে ওয়ার্ডে অনেক উন্নয়ন হয়েছে। মানুষের আশীর্বাদে এবার অরিজিৎ দাস ঠাকুর ওরফে রানা যদি কাউন্সিলের নির্বাচিত হন, তাহলে সর্বাগ্রে তিনি মানুষের ঘরে ঘরে পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার শপথ নিয়েছেন। ওয়ার্ডে মানুষের জলকষ্ট দূর করাই হবে তাঁর প্রথম চ্যালেঞ্জ। পাশাপাশি মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত মানুষের সামাজিক অনুষ্ঠানের জন্য একটি কমিউনিটি হল করার পরিকল্পনা রয়েছে রানা দাস ঠাকুরের। ১০৬ নম্বর ওয়ার্ড ইএম বাইপাস সংলগ্ন। তাই সাপুইপাড়া থেকে অভিষিক্তা মোড় পর্যন্ত রাস্তার দু’ধারে সৌন্দর্যায়ন প্রাধান্য পাবে তাঁর কাজে। এছাড়াও বাস স্ট্যান্ড থেকে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের উন্নতি সাধন, বাজারের আধুনিকীকরণ থেকে ছোট গলিতে চেকার টাইলস বসানোর কাজে হাত দেবেন রানা। বৃক্ষরোপণ থেকে পরিবেশবান্ধব আলো, পরিবেশ দূষণ রুখতে জঞ্জাল অপসারণ-এর জন্য কম্প্যাক্টর মেশিন বসানোর ব্যবস্থা করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। এছাড়া ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডকে ঘিরে খাল রয়েছে, সেগুলির সংস্কার এবং নাব্যতা বাড়ানোর তাঁর অন্যতম লক্ষ্য হবে। তিনি নির্বাচিত হলে সবমিলিয়ে কলকাতা পুরসভার ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডকে আগামিদিনে মডেল ওয়ার্ড করে তুলতে বদ্ধপরিকর রানা।

এবার পুরভোটে প্রতিপক্ষ নিয়ে বিশেষ চিন্তিত নন রানা। বিজেপি প্রার্থীর সেই অর্থে এলাকায় পরিচিতি নেই। অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে কংগ্রেস। আর ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডে বাম ঐক্যে ফাটল। এখানে সিপিএম এবং আরএসপি পৃথকভাবে প্রার্থী দিয়েছে। বিরোধীরা জামানত বাজেয়াপ্ত হবে, দাবি করছেন রানা। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন দেখে মানুষ ভোট দেবেন তৃণমুলকেই। যেভাবে একুশের বিধানসভা নির্বাচনে যাদবপুর কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী দেবব্রত মজুমদার এই ১০৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে সর্বাধিক ভোটে লিড পেয়েছিলেন, এবার পুরভোটে তারই প্রতিফলন ঘটবে, এমনটাই বিশ্বাস অরিজিৎ দাস ঠাকুরের।

আরও পড়ুন- Bcci: সরকারিভাবে একদিনের সিরিজ না খেলার কোন আবেদন করেননি বিরাট, জানালেন বিসিসিআইয়ের এক কর্তা