ত্রিপুরায় অবাধ নির্বাচনের প্রহসন: বুথে গিয়ে বিরোধী প্রার্থীরা শুনলেন ‘ভোট হয়ে গেছে’

0
1

অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের নামে প্রহসন চলছে ত্রিপুরাতে(Tripura)। বুথে বুথে বিরোধী প্রার্থী ও এজেন্টদের ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে বিজেপির(BJP) বিরুদ্ধে। বেলাগাম ভোট লুটের ভিডিও ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ঘটনা এখানেই শেষ নয়, খোদ বিরোধী প্রার্থীদের শুনতে হলো তাদের ভোট হয়ে গিয়েছে। শুনতে অবাক লাগলেও আগরতলার ২১ নম্বর ওয়ার্ডের ঘটনা এমনই। এই ওয়ার্ডে কংগ্রেসের(Congress candidate) প্রার্থী হয়ে দাঁড়িয়েছেন অঞ্জন সাহা। নিজে ভোট দিতে গিয়ে তিনি দেখেন তার ভোট অন্য কেউ দিয়ে দিয়েছে। এ ঘটনায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ ও অবাক কংগ্রেস প্রার্থী অঞ্জন।

এদিন বুথের বাইরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে কংগ্রেস প্রার্থী অঞ্জন সাহা বলেন, “আমি নিজে ২১ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী। আমিও আমার পরিবারে দিন ভোট দিতে যাওয়ার সময় বিজেপির তরফ থেকে কিছু ছেলে আমাদের জানায় আমাদের ভোট হয়ে গিয়েছে। আমি নিজে এই কেন্দ্রের প্রার্থী, এটা কিভাবে হতে পারে? পুরো বুথ বিজেপি দখল করে রেখেছে। কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না, প্রশাসন সব দেখেও নিরব। আমার ৪৫ বছরে রাজনৈতিক জীবনে আমি এই ধরনের নির্বাচন কখনো দেখিনি। এটা গণতন্ত্রের লজ্জা।”

আগরতলা ১ নম্বর ওয়ার্ডেও একই ঘটনা ঘটেছে। মানুষজনকে ভোট দিতে যেতে দিচ্ছে না বিজেপির গুন্ডাবাহিনী। রাস্তা থেকে তাদের বাড়িতে ফেরানো হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে তৃণমূল প্রার্থী গৌরী মজুমদার বলেন, “আমার ওয়ার্ডের প্রতিটি রাস্তায় বিজেপি গুন্ডাবাহিনী বসে রয়েছে। সকলকে বলা হচ্ছে তাদের ভোট হয়ে গিয়েছে বাড়ি ফিরে যাওয়ার জন্য। ভয়ে মানুষজন বাড়ি থেকে বেরোচ্ছে না। তারপরও যদি কেউ ভোটকেন্দ্রে যায় তাহলে বুথের ভেতর বিজেপির মস্তান বাহিনী বসে রয়েছে। ভোটারের হাতে কালি লাগানোর পর বিজেপির মস্তান বাহিনী বোতাম টিপে দিয়ে আসছে।” নিজ কেন্দ্রে ভোট দিতে যাওয়ার সময় বিজেপির গুন্ডা বাহিনীর হাতে মার খেয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন ৫১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী তপন বিশ্বাস। তাঁকে নিজের ভোট দিতে দেওয়া হয়নি। শুধু তাই নয়, বিরোধীদের সুরেই বেলাগাম ভোট লুটের অভিযোগ তুলেছেন ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিআইএম প্রার্থী লিপিকা দাস।

আরও পড়ুন:Tripura Municipal Election: ত্রিপুরায় অবাধ ছাপ্পার ভিডিও প্রকাশ্যে, ভোটারকে থামিয়ে ভোট দিচ্ছেন অন্যজন!‌‌‌

প্রহসনের ত্রিপুরা নির্বাচন পরিস্থিতি এখানেই শেষ নয়, বিজেপির ভোট লুটে কোনরকম বাধা হলে হুমকি ও হামলা চালানো হচ্ছে বিরোধীদের ওপর। সকাল থেকে এখনো পর্যন্ত একাধিক তৃণমূল প্রার্থী ও পোলিং এজেন্ট বিজেপির দ্বারা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আগরতলার ৪০ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রার্থীর পোলিং এজেন্টকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। পুলিশের বাধা টপকে আগরতলার ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থীর ছেলে ও মেয়ের উপর হামলা চালিয়েছে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। অথচ ত্রিপুরাতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছিল দেশের সুপ্রিম কোর্ট। নির্দেশ মানা তো দূরের কথা বিজেপি গুন্ডাদের এই ধরনের হামলা চোখের সামনে দেখেও নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে প্রশাসন। সবমিলিয়ে ত্রিপুরার পরিস্থিতি বেশ উদ্বেগজনক।