জয়িতা মৌলিক: শারীরিক প্রতিবন্ধকতা কোনও বাধা নয়। সেটা বারবার প্রমাণ করছেন তাঁরা, যাঁরা মনের জোরে এগিয়ে যান। সেই তালিকায় এবার নাম বাংলার মেয়ে দেবস্মিতা নাথের (Debasmita Nath)। মাত্র ২০ বছর বয়সে বাচিকশিল্পী হিসেবে পরিচিতি ছড়িয়ে তাঁর।

আরও পড়ুন:S-400:চিনা মোকাবিলায় এবার ভারত, লাদাখ সীমান্তে মোতায়েন এস-৪০০ ক্ষেপনাস্ত্র
দেবাশিস ও সুমিতা নাথের কন্যা দেবস্মিতা জন্ম থেকেই সেরিব্রাল পালসিতে (Cerebral Palsy) আক্রান্ত। চিকিৎসকদের পরামর্শে ছোটবেলায় তাঁকে আবৃত্তি শেখাতে শুরু করেন বাবা-মা। কথার জড়তা কেটে যায়। বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে থাকে ছোট্ট দেবস্মিতা। তবে চলাফেরায় অসুবিধা। তার ফলে হুইলচেয়ার সম্বল। তবুও তাঁকে দমিয়ে রাখা যায়নি। 13 বছর বয়সে দুর্গাপুরে বিখ্যাত বাচিকশিল্পী ব্রততী বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Bratati Bandopadhyay) কাছে ওয়ার্কশপ করার সুযোগ পান তিনি। শর্ত ছিল, ওই ওয়ার্কশপ (Workshop) থেকে যে প্রথম হবে, তাকে কোনও অডিশন ছাড়াই বিনামূল্যে ব্রততী বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘কাব্যায়ন’-এ শেখার সুযোগ পাবে। সেইমতো দেড় বছর শেখার পর ১৭ বছর বয়সে প্রথম আবৃত্তির সিডি প্রকাশ হয় দেবস্মিতার। এর আগেই প্রথমে কলকাতার সুজাতা সদন, তারপর রবীন্দ্র সদন, বিড়লা অ্যাকাডেমি, শিশির মঞ্চ রবীন্দ্র ওকাকুরা ভবন, বাংলা আকাদেমি-সহ বিভিন্ন জায়গায় একের পর এক অনুষ্ঠান করতে থাকেন দেবস্মিতা।


আবৃত্তির পাশাপাশি চলছিল লেখাপড়া। ICSC, উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে ইংলিশে (English) অনার্স নিয়ে পড়ছেন দেবস্মিতা। অদম্য জেদ, বাবা-মা এবং প্রশিক্ষকদের সহচার্যে হুইল চেয়ারে (Wheel Chair) বসে নিজের প্রতিভার স্বাক্ষর রাখছেন এই তরুণী। ইতিমধ্যেই তিনি পেয়েছেন ‘পঞ্চম বঙ্গ প্রমীলা কৃতি রত্ন সম্মান 2020’। এর পাশাপাশি, মনন সাহিত্যপত্রিকা থেকেও তাঁকে সম্মানিত করা হয়। বাচিকশিল্পী হিসেবে দুর্গাপুর-সহ অন্যান্য জায়গা থেকে সংবর্ধিত হন দেবস্মিতা। যে আবৃত্তি একসময় তাঁর সুস্থ হয়ে ওঠার ওষুধ ছিল, যাকে তিনি প্যাশন করেছিলেন, আজ সেই আবৃত্তিই দেবস্মিতার পেশা। নিজে চর্চার পাশাপাশি ছোটদের আবৃত্তি শেখান এই বাচিকশিল্পী। তাঁর লড়াই মনে করিয়ে দেয়, জিজা ঘোষের কথা। তিনিও সব প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে ডক্টরট করেছেন। প্রতিষ্ঠিত অধ্যাপক, কন্যা সন্তানের জননী। লড়াই, জেদ আর বাধা অতিক্রম করার দৃঢ়তা যে একজন মানুষের এগিয়ে যাওয়ার পথে মূল পাথেয় সেই উদাহরণ বারবার তুলে ধরেন দেবস্মিতাররা। তাঁর চলার পথ সুগম হোক- ‘এখন বিশ্ব বাংলা সংবাদ’-এর পক্ষ থেকে এই শুভকামনা।















































































































































