সরকারের(Government) আয় বাড়াতে সরকারি সংস্থাগুলিকে বেসরকারিকরণের(privatisation) লক্ষ্যে কোনও খামতি রাখছে না নরেন্দ্র মোদি(Narendra Modi) সরকার। করোনাকালে ধসে যাওয়া অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে চলতি বছরের বাজেট প্রস্তাবে বেসরকারিকরণের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ আয়ের লক্ষ্য নিয়েছিল নরেন্দ্র মোদি সরকার। কিন্তু চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ছয় মাসে সেই লক্ষ্যমাত্রার ধারেকাছেও পৌঁছনো সম্ভব হয়নি। তাই অর্থবর্ষের দ্বিতীয়ার্ধে বেসরকারিকরণের লক্ষ্যে আরও জোর গতিতে কাজ করতে চাইছে সরকার। এজন্য অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধে কমপক্ষে পাঁচ থেকে ছয়টি সরকারি সংস্থাকে বেসরকারিকরণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদি সরকার। এমনটাই ইঙ্গিত দিলেন কেন্দ্রীয় লগ্নি ও সরকারি সম্পত্তি পরিচালনা দফতরের সচিব তুহিনকান্ত পান্ডে। একই সঙ্গে তুহিনকান্ত জানিয়েছেন, আগামী বছরের জানুয়ারিতেই প্রথম এলআইসির শেয়ার বাজারে আসতে চলেছে ।
চলতি বছরের বাজেট প্রস্তাব বেসরকারিকরণ থেকে ১.৭৫ লক্ষ কোটি টাকা আয় হবে বলে লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। কিন্তু অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার ১০ শতাংশ আয় ঘরে তুলতে পারেনি মোদি সরকার। আয় না থাকায় স্বাভাবিকভাবেই বিভিন্ন সরকারি খরচ সামলাতে গিয়ে নাজেহাল হয়ে পড়েছে মোদি সরকার। বিশেষত করোনার ধাক্কা সামলাতে সরকারের প্রয়োজন হচ্ছে বিপুল পরিমাণ অর্থ। সেই অর্থ রোজগার করতেই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বেসরকারিকরণকেই চূড়ান্ত হাতিয়ার করেছিল কেন্দ্র। কিন্তু সেখানেও সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ।
এদিন কেন্দ্রীয় লগ্নি ও সরকারি সম্পত্তি পরিচালনা দফতরের সচিব তুহিনকান্ত বলেন, চলতি অর্থবর্ষে বাকি সময়ে আমরা কমপক্ষে ৬ টি সংস্থা বেসরকারিকরণের করার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছি। বেসরকারিকরণের বিষয়টি এখন আর সরকারের নীতির স্তরে আটকে নেই। বাস্তবে সেই নীতি দ্রুত কার্যকর করা হচ্ছে। তুহিনকান্ত আরও জানিয়েছেন বিইএমএল, বিপিসিএল, শিপিং কর্পোরেশন-সহ গোটা ছয়েক রাষ্ট্রীয় সংস্থার বেসরকারিকরণের জন্য দরপত্র চাওয়া হবে। ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি মাসের মধ্যেই গোটা প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হবে। যে পদ্ধতিতে এয়ার ইন্ডিয়া বেসরকারিকরণ করা হয়েছে অন্যান্য সংস্থাগুলির বেসরকারিকরণের ক্ষেত্রেও একই নীতি মেনে চলা হবে।
যদিও এয়ার ইন্ডিয়াকে বিক্রি করে কেন্দ্র আদৌ উপযুক্ত অর্থ পায়নি। একই সঙ্গে এই শীর্ষ সরকারি কর্তা জানিয়েছেন, আগামী বছরের শুরুতেই বাজারে আসতে চলেছে এলআইসি শেয়ার। তুহিনকান্তর এই মন্তব্য আজ প্রকাশ্যে আসতেই বিভিন্ন সংস্থার কর্মীদের মধ্যে উদ্বেগ আরও বেড়েছে। ইতিমধ্যেই মোদি সরকারের এই বেসরকারিকরণ সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে একাধিক রাজ্য। বেশকিছু রাজ্যে ইতিমধ্যেই পথে নেমে প্রতিবাদ সামিল হয়েছে মানুষ। তবে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী সীতারমন জানিয়েছেন, তাঁরা শুধু কেন্দ্র সম্পত্তি বেসরকারিকরণ করবেন। কোনও রাজ্যের সম্পত্তি নিয়ে তাঁদের মাথাব্যথা নেই।