“নিরাপদ, স্থিতিশীল আফগানিস্তানের” জন্য ৮ দেশের ঘোষণাপত্র

0
3

আফগানিস্তানের মাটি, সন্ত্রাসীদের আশ্রয় বা প্রশিক্ষণের জন্য বা সন্ত্রাসবাদের কাজে অর্থায়নের জন্য ব্যবহার করা যাবে না, ভারত দ্বারা আয়োজিত আঞ্চলিক নিরাপত্তা শীর্ষ সম্মেলনের ঘোষণাপত্রে এই দাবি করা হয়েছে।

আরও পড়ুন-লক্ষ্য পুরভোট: ২২ নভেম্বর আগরতলায় প্রচারে যাচ্ছেন অভিষেক

বুধবার, রাশিয়া ও ইরান সহ আটটি দেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টারা এই সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেছিল।সম্মেলন শেষে ‘আফগানিস্তান সম্পর্কিত দিল্লি ঘোষণা’ শীর্ষক যৌথ ঘোষণায় বলা হয়েছে, আটটি অংশগ্রহণকারী দেশ, যারা তাদের নিজ নিজ জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের(এনএসএ) দ্বারা প্রতিনিধিত্ব করেছিল, তারা ক্রমবর্ধমান আফগান পরিস্থিতি, বিশেষ করে আগস্টে তালিবানের দখলের পরে বিশ্বব্যাপী প্রভাব নিয়ে আলোচনা করেছে।সমস্ত দেশ আফগানিস্তানের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রতি বিশেষ মনোযোগ দিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সন্ত্রাসবাদ, মৌলবাদ এবং মাদক পাচারের হুমকি নিয়েও সম্মেলনে আলোচনা হয়েছে। এদিনের সম্মেলনে যে দেশগুলির এনএসএ উপস্থিত ছিলেন,- ভারত, রাশিয়া, ইরান, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, উজবেকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান এবং তাজিকিস্তান। দেশগুলির প্রতিনিধিরা আফগানিস্তানকে সমস্ত সম্ভাব্য মানবিক সহায়তা দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছে।

সম্মেলনে সমস্ত দেশ “আফগানিস্তান কখনও বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হয়ে উঠবে না তা নিশ্চিত করার জন্য সন্ত্রাসবাদের অর্থায়ন, সন্ত্রাসবাদের অবকাঠামো ভেঙে ফেলা এবং মৌলবাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ সহ সন্ত্রাসবাদের সমস্ত রূপ এবং প্রকাশের সাথে লড়াই করার জন্য তাদের দৃঢ় প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে।”

আফগান জনগণের জন্য “গভীর উদ্বেগ” প্রকাশ করে এবং “অবনতিশীল আর্থ-সামাজিক ও মানবিক পরিস্থিতি (যা) জরুরি সহায়তা প্রদানের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছে অংশগ্রহণকারী দেশগুলি।” দিল্লি ঘোষণাপত্রে আরও বলা হয়েছে যে “একটি উন্মুক্ত এবং সত্যিকারের অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠন করা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। যা আফগানিস্তানের সব মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে,সকল জনগণের ইচ্ছা এবং তাদের সমাজের সকল শ্রেণীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করে”।

তালিবান ক্ষমতা দখলের পর নারী, শিশু ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর হামলার প্রেক্ষিতে ঘোষণাপত্রে, “নারী, শিশু এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার গুরুত্ব” এর উপর জোর দেওয়া হয়েছে।

তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হলো, ভারতের এনএসএ অজিত ডোভাল সম্মেলনে আসার জন্য চিন ও পাকিস্তানকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। কিন্তু ওই দেশ আগেই জানিয়ে দেয় যে তারা সম্মেলনে থাকতে পারছে না।চিন জানিয়েছে, পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচির কারণেএই সময়ে তাদের আসা সম্ভব নয়। আর পাকিস্তান বলেছে, যারা আফগানিস্তানের পরিস্থিতি খারাপ করেছে, তারাই এখন এই ধরনের বৈঠক করছে, সেখানে যোগ দেয়ার প্রশ্ন নেই।

আরও পড়ুন-চিন সংস্কৃতিক বৈচিত্র বোঝে না, ভারতেই থাকতে চাই: স্পষ্ট জানালেন দলাই লামা

পাশাপাশি,তালিবানের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ কাবুলে সাংবাদিক সম্মেলনে এই বৈঠক নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। টোলো নিউজ জানাচ্ছে, জাবিউল্লাহ বলেছেন, দিল্লি রিজিওনাল সিকিউরিটি ডায়লগ নিয়ে তালেবান আশাবাদী। তবে আফগানিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র টুইট করে জানিয়েছেন, আফগান প্রতিনিধিদল বুধবার পাকিস্তান পৌঁছেছে। তারা পাকিস্তানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এর আগে মস্কো ও কাবুলে আফগানিস্তান নিয়ে যে আলোচনা হয়েছিল, সেটাকেই আরো এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং মানবিক, রাজনৈতিক ও আর্থিক বিষয়গুলি নিয়ে কথা হবে।