বঙ্গভঙ্গ নিয়ে উত্তরের বিজেপির (Bjp) দুই কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী যতই শোরগোল করার চেষ্টা করুন না কেন, দলের মধ্যেই যে তাঁরা সেভাবে কল্কে পাচ্ছেন না তা স্পষ্ট। এর আগে তাঁদের এই দাবিকে ব্যক্তিগত মত বলে এড়িয়ে চললে, সম্প্রতি তাকে কার্যত সমর্থন জানিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। কিন্তু এরপরও উল্টো অবস্থানে গিয়ে উত্তরবঙ্গ ভাগের দাবিকে নস্যাৎ করে দলের দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে কটাক্ষ করলেন বিজেপি নেতা তথা সাংবাদিক রন্তিদেব সেনগুপ্ত (Rantidev Sengupta)। বৃহস্পতিবার, একটি দৈনিকের উত্তর সম্পাদকীয়তে রন্তিদেব সেনগুপ্ত লেখেন, একাধিকবার দুই মন্ত্রী এই প্রসঙ্গ উত্থাপন করছেন। আর এতে বুঝতে অসুবিধা হয় না কোনও পরিকল্পিত উদ্দেশ্য নিয়ে তাঁরা এ কথা বলছেন।
এ প্রসঙ্গে তিনি তুলে ধরেছেন 1905-এ লর্ড কার্জনের বঙ্গভঙ্গ চেষ্টার সময় থেকে শুরু করে 1947-এ বঙ্গভঙ্গের সময় পর্যন্ত ইতিহাস। জন বার্লা (John Barla) এবং নিশীথ প্রামাণিকের (Nishith Pramanik) উত্তরবঙ্গের দাবিকে কটাক্ষ করে রন্তিদেব লেখেন, যদি এটাই বিজেপির উদ্দেশ্য ছিল, তাহলে নির্বাচনের আগে ইস্তাহারে সে কথা স্পষ্ট কেন লেখা হল না? এই দাবিকে সামনে রেখে ভোট প্রচার করার পর যদি উত্তরবঙ্গের মানুষ তাদের বিপুল জনসমর্থন দিতেন, তাহলে বোঝা যেত যে তাদের এই দাবির পিছনে জনসমর্থন আছে। কিন্তু ভোটের সময় এ কথা বিজেপি একবারও জানায়নি।
শুধু তাই নয়, 2019-এ বিজেপি বাংলা থেকে এতজন সাংসদ পেলেও একজন পূর্ণ মন্ত্রী করেনি। এতে বাংলার প্রতি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মনোভাব স্পষ্ট হয় বলে মত রন্তিদেব সেনগুপ্তের। বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির নেতারা বাংলায় ডেইলি প্যাসেঞ্জারি করেছেন। কিন্তু তার নিট ফল শূন্য। হিন্দি বলয়ের কৌশলে এখানে নির্বাচনে জয়ের চেষ্টা করেছিল গেরুয়া শিবির। কিন্তু তাদের সেই রণনীতি ফ্লপ করেছে। এখন কেন্দ্রের দুই মন্ত্রীর দাবি নিয়ে নীরব কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। কিছু না বলে তিনি জল মাপতে চাইছেন বলে মনে হচ্ছে।
কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী জন বার্লা এবং নিশীথ প্রামাণিক বঙ্গভঙ্গের ধুঁয়ো তোলার পিছনে কারণ হিসেবে অনুন্নয়নের যুক্তিকে খাড়া করেছেন। এর বিপক্ষে রন্তিদেব তুলে ধরেছেন রাজ্যে ভাগের অন্যান্য দৃষ্টান্ত। ঝাড়খন্ড, মেঘালয়, ছত্রিশগড়- বিহার, অসম, মধ্যপ্রদেশ থেকে ভাগ হয়ে এই রাজ্যগুলো তৈরি হয়েছিল। কিন্তু তাতে সেখানে উন্নয়নের জোয়ার বয়ে যাচ্ছে এমন দৃষ্টান্ত কেউ দেখাতে পারবে না।
এর পরেই দলীয় জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে তুমুল আক্রমণ জানিয়েছেন রোগীদের সেনগুপ্ত তিনি লেখেন, নির্বাচিত হওয়ার পর উত্তরবঙ্গের প্রান্তিক মানুষের জন্য কি করেছেন বঙ্গভঙ্গ সভা জনপ্রতিনিধিরা? শেষে রন্তিদেবের মত শ্যামাপ্রসাদের পশ্চিমবঙ্গ কে ভাগ করার দাবি “রাজনৈতিক ভাবে আত্মহত্যা”র সমান।
আরও পড়ুন – ‘সর্বশক্তি দিয়ে ভারতীয়দের ফেরানো হচ্ছে’, আফগানদের পাশে থাকার বার্তা বিদেশমন্ত্রীর
তার এই উত্তর সম্পাদকীয় স্পষ্ট করে দিচ্ছে গেরুয়া শিবিরের বঙ্গভঙ্গের অপচেষ্টায় সায় নেই দলের অনেক নেতারই। কোনও আলোচনা ছাড়াই শুধুমাত্র রাজনৈতিকভাবে বাংলাকে অশান্ত করতেই বিজেপির নেতাদের কিছু নেতার এই অপচেষ্টা বলে মত রাজনৈতিক মহলের।


































































































































